আগ্নেয়গিরি কিভাবে তৈরি হয় তা বুঝতে হলে আমাদের জানতে হবে দুটো জিনিস - পৃথিবীর অভ্যন্তরীন গঠন ও টেক্টোনিক প্লেট।
পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন- পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন দেখলে জানা যায় যে এখানে মূলত তিনটি স্তর রয়েছে- ভূত্বক (crust), ভূ-আচ্ছাদন (mantle) আর বহিঃস্থ মজ্জা (core)। আগ্নেয়গিরি বুঝতে হলে আমাদের দরকার হবে এর মাঝামাঝি স্তরটি যার নাম ভূ-আচ্ছাদন বা ম্যান্টল। যদিও ভূ-আচ্ছাদন কঠিন অবস্থায় থাকে, তবে উচ্চ তাপমাত্রার ফলে এটি এক সময় বেশ নমনীয় হয় এবং প্রায় তরলের মতোই প্রবাহিত হতে পারে। এই তরল পদার্থটিকে বলা হয় ম্যাগমা যার মধ্যে রয়েছে সিলিকন, ম্যাগনেসিয়াম, অক্সিজেন, এলুমিনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ।
টেক্টোনিক প্লেট - সাধারণত পৃথিবীর কঠিন বহিরাবরণ কয়েকটি অংশে বিভক্ত থাকে। এদেরই টেক্টোনিক প্লেট বলে। টেক্টোনিক প্লেটগুলো ম্যাগমার উপর ভেসে থাকে এবং প্লেটগুলো চলাচল করতে সক্ষম। এই প্লেটের চলাচলের ফলেই ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়। ওই প্লেট ক্রমাগত খুব আস্তে আস্তে চলাচল করে, কখনও একে অপরের কাছে বা কখনও দূরে যায়।
আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি- এবার দুটো টেক্টোনিক প্লেট যখন ভাসতে ভাসতে ধাক্কা খেয়ে একটা আরেকটার ওপরে উঠে যায়, তখন খুব জোরে চাপ পড়ার ফলে ও তাপ সৃষ্টি হওয়ায় সেই ম্যাগমা নামক তরল পদার্থ পৃথিবীর বুক চিরে বাইরে বেরিয়ে আসে। ম্যাগমা যখন বেরিয়ে আসে তখন তার নাম হয় লাভা। তারপর অনেক লাভা উদ্গীরণ হওয়ার ফলে তৈরি হয় আগ্নেয়গিরি। যেখান থেকে আগ্নেয়গিরি বের হয় তাকে দেখতে পাহাড়ের মত। আসলে লাভা বের হতে হতে পরে তা ঠাণ্ডা হয়ে পাথরের মত শক্ত হয়ে গেলে এটা পাহাড়ের মত দেখায়।