চাঁদের অবস্থান সবসময় দক্ষিণ-পূর্ব কোণে থাকে না। হয়ত অল্প কিছুদিন পর্যবেক্ষন করেছেন, তাই পুরো চক্রটি ধরতে পারেননি। আসলে, হিসাবটা বেশ জটিল।
চাঁদ যদি পৃথিবীর ঠিক বিষুবরেখার বরাবর চলাচল করতো, তাহলে চাঁদকে প্রতিদিন একই জায়গায় উদিত হয়ে, প্রতিদিন একই পথে চলে, প্রতিদিন একই জায়গায় অস্ত যেতে দেখতাম। কিন্তু সমস্যা হলো, চাঁদ যে পথে ঘুরছে, সেটা পৃথিবীর বিষুবরেখার সাপেক্ষে প্রায় ২৮.৭ ডিগ্রী হেলানো। অর্থাৎ চাঁদ প্রতি ২৭.৩ দিনে একবার করে পৃথিবীর ২৮.৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ থেকে দক্ষিণে যেতে যেতে ২৮.৭ ডিগ্রী দক্ষিণে যেয়ে আবার উত্তরে ফিরে আসে। মোটের উপর প্রায় ৫৭ ডিগ্রীর মতো উত্তর-দক্ষিণে সরে যায় মাত্র ২৭ দিনে।
অর্থাৎ আজ যেখানে দেখছেন, একদিন পরে তার থেকে ২ ডিগ্রীর মতো উত্তরে বা দক্ষিণে সরে থাকতে দেখবেন। প্রকৃত হিসাবটা আরও একটু জটিল।
উল্লেখ্য, চাঁদের প্রতিদিনের উদয়-অস্তের কারণ হলো পৃথিবীর নিজের ঘুর্ণন। চাঁদ যদি এক জায়গায় ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতো (সেটা সম্ভব না), তাহলেও আমরা তাকে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় একবার করে একই জায়গায় দেখতে পেতাম। কিন্তু নিজের ঘূর্ণনের কারণে চাঁদকে প্রতিদিন পুবের দিকে সরে যেতে হয়, ফলে প্রতিদিন আরেকটু দেরিতে উদিত হতে দেখা যায়।
তার উপর আবার সূর্যের সাপেক্ষে পৃথিবীর নিজের অবস্থান বদলের কারণে, চন্দ্রকলা পূর্ণ হতে লাগে ২৯.৫ দিন।
২৭.৩ দিন পরে চাঁদ আগের অবস্থানে ফিরে এলেও আমরা আসলে ২৯.৫ দিনের হিসাবটাকেই লক্ষ্য করি বেশি। সেকারণে, প্রতি মাসে পূর্ণিমার চাঁদ একই পথে চলে না। আগের মাসের থেকে ৪/৫ ডিগ্রী উত্তরে বা দক্ষিণে সরে থাকে।
এসব কারণে, আমাদের এসব অঞ্চল থেকে চাঁদকে কখনো আমাদের মাথার উপর দিয়ে যেতে দেখি। আবার কখনো অনেক বেশি দক্ষিণে হেলে পড়ে চলতে দেখি। এসবের সাথে শীত-গ্রীষ্মের কোন সম্পর্ক নেই।
সোর্স: quora