হ্যাঁ, গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষন্ন থাকা সন্তানের উপরে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। বিষণ্ণতার ফলে মায়ের দেহে কিছু হরমোনাল পরিবর্তন হতে পারে যা গর্ভাবস্থায় ও জন্মদানের পরেও সন্তানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষণ্ণতা নানা ভাবে সন্তানের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন:
১. শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিষণ্ণতা গর্ভের শিশুর মস্তিস্ক বিকাশে বাধা প্রদান করে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এ বিষয়ে গবেষণা করে জানান, বিষাদগ্রস্ত মায়েদের শরীরে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের পরিমান বেশি থাকে। এই হরমোন কর্টিসল গর্ভফুল বা অমরা বা প্লাসেন্টা পার করতে সক্ষম হয়। যারফলে গর্ভের ভ্রূণের মস্তিষ্ক বিকাশে বাধার সৃষ্টি হয়।
২. মা বিষণ্নতায় ভুগলে পরবর্তী সময়ে সন্তান জন্মলাভের পর ওই সন্তানের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে এবং একপর্যায়ে সেও বিষণ্নতার শিকার হতে পারে।
৩. বিষণ্ণতায় ভুগতে থাকা মা নিজের ঠিকমত যত্ন নিতে পারে না, যেমন- পুষ্টিকর খাবার গ্রহন, নিয়মিত ঘুম, প্রি-ন্যাটাল চেকআপ ইত্যাদি। ফলে শিশুর বৃদ্ধিও বাধাগ্রস্থ হয়।
৪. বিষণ্ণতায় ভোগা মায়েদের শিশুরা সাধারণত জন্মের পরে অন্যান্য শিশুর চেয়ে কম প্রাণচাঞ্চল্যপূর্ণ হয়। তারা অন্য স্বাভাবিক শিশুর মতো কথাবার্তা, নড়াচড়ায় দেরী করে।
৫. জন্মের সময় বাচ্চার ওজন কম হতে পারে।
৬. বাচ্চা প্রি-ম্যাচিউর হতে পারে অর্থাৎ ৩৭ সপ্তাহের আগেই বাচ্চার জন্ম হতে পারে।
৭. মায়ের ক্ষেত্রে এটা বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন বাচ্চার ক্ষতি করা, বাচ্চার যত্ন না নেওয়া, নিজের ক্ষতি করা, নিজেকে শিশুর জন্য ক্ষতিকর মনে করা ইত্যাদি।
গর্ভকালীন বিষণ্ণতার নিরাময় করা না হলে মায়েরা প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হতে পারেন। প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হলে মায়েরা বাচ্চা যত্ন ঠিকভাবে নিতে পারেন না, নিজের যত্ন নেওয়া, ঠিকভাবে পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়া করা সম্ভব হয়না, যা বাচ্চার উপর প্রভাব ফেলে।
তথ্যসূত্র: ওয়েবমেড, মার্চ অব ডাইমস, Togumogu