‘খ্রিস্টাব্দ’ শব্দটির শুরুর কথা আমরা অনেকেই জানতে চাই। তাই এর উৎপত্তির একটু ধারণা দেওয়ার জন্যই আজকের লেখা। আসলে খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্টের জন্মের বছর থেকে যে বছর গণনা করা হয়, তাকেই খ্রিস্টাব্দ বলে। যিশুখ্রিস্টের জন্ম, জীবন, সেবা কাজ, মৃত্যু, পুনরুত্থান অবিস্মরণীয় করে রাখার জন্য সাধু গ্রেগরি নতুন এ বছরের গণনা শুরু করেছেন। আর বর্তমান পৃথিবীতে এ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও প্রচলিত।
আমাদের অনেকেরই জানা আছে, বছর গণনায় ইংরেজিতে BC ও AD দুটি শব্দ প্রচলিত। BC শব্দের অর্থ হলো Before Christ, বঙ্গানুবাদ হলো খ্রিস্টপূর্ব বা খ্রিস্টপূর্বাব্দ। আর AD এসেছে লাতিন শব্দ Anno Domini Nostri Jesu Christi-যার ইংরেজি অনুবাদ হলো The year of our Lord, বঙ্গানুবাদ হলো খ্রিস্টাব্দ। সহজ কথায় বলা যায়, যিশুখ্রিস্টের জন্মবছর থেকে যে বছরের গণনা শুরু করা হয়েছে, তা-ই হলো খ্রিস্টাব্দ (AD)। আর যিশুখ্রিস্টের জন্মের আগ থেকে যে বছর গণনা করা হয়, তা হলো খ্রিস্টপূর্বাব্দ (BC)। এ গণনারীতি অনুযায়ীই কোনও শূন্য বছর নেই, অর্থাৎ যিশুখ্রিস্টের জন্মবছরই হলো খ্রিস্টপূর্ব (BC) বছরের শেষ বছর আর খ্রিস্টাব্দের (AD) প্রথম বছর।
বিভিন্ন সরকারি নথিপত্রে, গণমাধ্যমে, পত্রপত্রিকায়, অফিস-আদালতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খ্রিস্টাব্দকে ইংরেজি বছর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অনেকে লেখে এভাবে, ‘২০১৮ ইং’। ১ জানুয়ারিকে অনেকে বলে, ‘ইংরেজি’ বছরের প্রথম দিন। প্রকৃতপক্ষে এ পৃথিবীতে ইংরেজি বছর বলতে কোনও কিছুর অস্তিত্ব নেই। একেবারেই ভুল করে তা ব্যবহার করার একটা প্রবণতা আমরা লক্ষ করছি। অনেকে আবার অজ্ঞানতাবশত তা করছে।
সঠিকটা জানা, ব্যবহার করা ও প্রয়োগ করাই তো প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তির পরিচয়। ইতিহাস বিকৃত করে বা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল ব্যবহার বা শব্দের ভুল প্রয়োগ কোনোভাবেই বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক নয়। বরং আমাদের দায়িত্বশীল কাজ হলো, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দেওয়া। সুত্র- অনলাইন