নিশাত তাসনিম- স্বপ্নের রং আসলে যে কি এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা হয়ে আসছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে বলা যায়নি স্বপ্নের রং। শুরুর দিকে করা স্টাডিগুলোর রিপোর্টে বলা হত যে স্বপ্ন খুব সম্ভবত সাদা কালো। কিন্তু নতুন করা স্টাডিগুলোর রিপোর্টে বলা হচ্ছে মানুষ যে শুধু সাদা কালো স্বপ্নই দেখে তা নয়, মানুষ রঙিন স্বপ্নও দেখতে পারে। সাধারনত স্বপ্নের ব্যাপারে তথ্য যোগাড় করা হয়ে থাকে আরেকজনের কাছ থেকে তার স্বপ্নের কথা শুনে অথবা তার ব্রেইন এক্টিভিটি মনিটর করে। এগুলো করা সম্ভব। কিন্তু স্বপ্নটা সে কি রঙিন স্বপ্ন না সাদাকালো অথবা ধূসর দেখছে এটা বলা সত্যিই একটু কঠিন বটে। অন্যের মাথার মধ্যে ঢুকে তো আর দেখা যায়না সে কি স্বপ্ন দেখছে! তারপরেও বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলেছে আপন গতিতে। কে জানে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে “ইনসেপশন” মুভিটার মতই স্বপ্নকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে!
স্বপ্ন দেখার ক্ষেত্রে মানব মস্তিষ্কের দুটি রাসায়নিক পদার্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলো হলো: এসিটোকোলিন ও নোরাপিনাফ্রিন। এসিটোকোলিনের উৎপাদন যত বাড়ে, মস্তিষ্কের কর্মতৎপরতা তত বেড়ে যায়। স্বপ্নের বিষয়বস্তু একজনের কাছে কতটা স্পষ্ট হবে, সেটি নিয়ন্ত্রণ করে এসিটোকোলিন। আবার নোরাপিনাফ্রিন সতর্কতা ও মানসিক চাপের মাত্রা নির্ধারণ করে। এসিটোকোলিনের উৎপাদন যত বাড়ে, নোরাপিনাফ্রিনের পরিমাণ কমতে থাকে। নোরাপিনাফ্রিনের পরিমাণ কমতে থাকলে আমাদের স্বপ্নগুলো মনে রাখার সক্ষমতাও কমতে থাকে। যখন আমরা হুট করে ঘুমিয়ে পড়ি বা অ্যালার্মের শব্দে লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠি, তখন এই দুই রাসায়নিকের পরিমাণ সামান্য পরিমাণে বেড়ে যায়। এর ফলে মস্তিষ্কের স্বপ্ন মনে রাখার সম্ভাবনা আরও কমে যায়। আবার অনেক সময় আমাদের মস্তিষ্ক সেই সব স্বপ্নই মনে রাখে না, যেগুলো যথেষ্ট উত্তেজনাকর নয়। যখন আমরা প্রথমবার ঘুম থেকে উঠি, তখন স্বপ্নগুলো অত্যন্ত ভঙ্গুর অবস্থায় থাকে। যদি কেউ লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে দিনের কাজ শুরু করে দেন, তবে তার পক্ষে স্বপ্ন মনে রাখা সম্ভব হবে না। ব্যাপার টা এরকম যে আমরা তাড়াহুড়ো করে কিছু মুখস্ত করলেও সেটি মনে থাকেনা।