এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে পদার্থবিজ্ঞানের কিছু মৌলিক নিয়মে। প্রথমেই বলা যায়, ট্রেন চলে লোহার চাকায় লোহার রেলের উপর। এই রেলপথে ঘর্ষণ খুবই কম, যা ইঞ্জিনকে বগিগুলো টানতে সাহায্য করে। ঘর্ষণ যত কম হবে, তত কম বল প্রয়োগ করেই ভারী বস্তু সরানো সম্ভব হবে। এই কারণেই, অনেক ভারী বগি থাকা সত্ত্বেও, ইঞ্জিন তুলনামূলকভাবে কম শক্তি ব্যবহার করেই তাদের টেনে নিয়ে যেতে পারে।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র, যা বলে—বল (force) সমান ভর (mass) গুণ ত্বরণ (acceleration)। ট্রেন ধীরে ধীরে গতি বাড়ায়, অর্থাৎ একবারে অনেক বেশি ত্বরণ প্রয়োগ করে না। এতে দরকার হয় কম বল, যা ইঞ্জিন সহজেই দিতে পারে। একবার গতি পেয়ে গেলে, ট্রেনকে চলমান রাখতে খুব বেশি শক্তির প্রয়োজন হয় না। কারণ তখন কেবল গতিকে ধরে রাখাই উদ্দেশ্য হয়।
এছাড়াও, ট্রেনের ইঞ্জিন দেখতে ছোট হলেও তার মধ্যে থাকে শক্তিশালী মোটর, যা অনেক টর্ক এবং হর্সপাওয়ার উৎপন্ন করতে সক্ষম। এই শক্তি ইঞ্জিনকে বিপুল পরিমাণ ওজন টানতে সাহায্য করে। বগিগুলোও একে অপরকে ধাক্কা দিয়ে সামনের দিকে চলতে থাকে, ফলে ইঞ্জিনের ওপর চাপ কিছুটা কমে যায়।
এক লাইনে বললে, ট্রেনের ইঞ্জিন ওজন দিয়ে নয়, কাজ করে বল, ঘর্ষণ, টর্ক এবং গতির নিয়ম অনুসারে। পদার্থবিজ্ঞানের এই নিয়মগুলো আমাদের চোখে দেখা অসাধ্য কাজকে সম্ভব করে তোলে।