উত্তর-১ঃ
দেখি কীভাবে একটা নতুন স্পোরোফাইট তৈরি হয়! একটু মজার গল্পের মতো করে বুঝিয়ে বলব তো, ঠিক আছে?
একটা ফুল গাছ আছে, না? সে মনের আনন্দে তার পুঁতিগুলো থেকে কিছু ছোট্ট ছোট্ট জিনিস বের করে, যাদের নাম স্পোর। এই স্পোরগুলো একদম ঝুমকির ঝুমকির মতো হালকা, বাতাসে উড়ে চলে যায়। কখনো কোনো গাছের ডালে আটকে যায়, আবার কখনো কোনো জায়গায় পড়ে যায়।
এই স্পোরগুলোর মধ্যে একটা গোপন ক্ষমতা লুকিয়ে আছে! যদি সঠিক জায়গায় পড়ে (যেমন, একটু আদতে মাটিতে), তাহলে সে নিজেকে একটা ছোট্ট, সবুজ গাছের মতো বদলে ফেলে! এই ছোট্ট গাছটা আসলে নতুন স্পোরোফাইট। কিন্তু এটা সেই বড় ফুল গাছের মতো না, এটা একদম আলাদা ধরনের গাছ।
এবার এই নতুন স্পোরোফাইটের একটা অসাধারণ কাজ আছে। সে তার শরীরে ছোট্ট ছোট্ট থলে বানায়, যার মধ্যে থাকে কিছু বিশেষ কোষ। এই কোষগুলো আবার দুই রকম হয়: একদল ছেলে-কোষ আর একদল মেয়ে-কোষ।
এবার একটু রোমাঞ্চকর ঘটনা ঘটে! ছেলে-কোষগুলো বাতাসে ছুটে চলে যায়, আর হয়তো কোনো মেয়ে-কোষের সাথে দেখা হয়। তারা মিলিত হয়ে একটা নতুন কোষ বানায়, যার নাম জাইগোট। এই জাইগোটই আসলে একটা ভ্রূণ, যা নিজেকে ধীরে ধীরে বড় করে নতুন ফুল গাছে পরিণত হয়!
এইভাবেই সেই ছোট্ট স্পোরোফাইটের আবার ছেলে-মেয়ে জোগাড় করে একটা নতুন বড় ফুল গাছ বানিয়ে দেয়!
তো দেখলেন, কীভাবে একটা ছোট্ট স্পোর থেকে একটা নতুন ঝাঁ চকচকে ফুল গাছ বেরিয়ে আসে! মজার না?
এই গল্পটা সহজ করে বুঝানোর জন্য একটু সরল করা হয়েছে। আসলেই স্পোরোফাইটের গঠন আরও জটিল, কিন্তু আশা করি এটা আপনাকে একটা সাধারণ ধারণা দিয়েছে!
উত্তর-২ঃ
নতুন স্পোরোফাইট গঠন দুটি পর্যায়ে হয়। প্রথম পর্যায়ে, গ্যামেটোফাইটের একটি স্পোরঞ্জিয়াম স্পোর উৎপন্ন করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, এই স্পোর থেকে একটি নতুন স্পোরোফাইট গঠিত হয়।
প্রথম পর্যায়
গ্যামেটোফাইটের স্পোরঞ্জিয়াম একটি স্পোর ক্যাপসুল। এই ক্যাপসুলের ভিতরে স্পোর তৈরি হয়। স্পোর হলো এক ধরনের কোষ যা প্রজনন কাজে ব্যবহৃত হয়।
স্পোরঞ্জিয়াম থেকে স্পোর তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ:
- স্পোরঞ্জিয়ামের অভ্যন্তরে একটি স্পোর মাদার কোষ (sporogenous cell) থাকে।
- এই স্পোর মাদার কোষটি বিভাজিত হয়ে চারটি স্পোর উৎপন্ন করে।
- এই স্পোরগুলো স্পোর ক্যাপসুলের ভিতরে থাকে।
দ্বিতীয় পর্যায়
স্পোর ক্যাপসুলের ছিদ্র দিয়ে স্পোর বেরিয়ে আসে। স্পোরগুলো বাতাস বা জলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
যখন একটি স্পোর একটি উপযুক্ত স্থানে পড়ে, তখন এটি অঙ্কুরিত হয়। অঙ্কুরোদ্গমনের ফলে একটি নতুন স্পোরোফাইট গঠিত হয়।
নতুন স্পোরোফাইটের গঠন
নতুন স্পোরোফাইটের গঠন নিম্নরূপ:
- স্পোর অঙ্কুরিত হয়ে একটি বীজকঙ্কাল (germling) তৈরি করে।
- বীজকঙ্কালের শীর্ষে একটি মূল (root) এবং একটি কাণ্ড (stem) গঠিত হয়।
- কাণ্ডের উপরে পাতা (leaves) গঠিত হয়।
নতুন স্পোরোফাইটের গঠন উদ্ভিদের প্রজাতির উপর নির্ভর করে। কিছু উদ্ভিদে, বীজকঙ্কাল থেকে সরাসরি একটি নতুন স্পোরোফাইট গঠিত হয়। আবার কিছু উদ্ভিদে, বীজকঙ্কাল থেকে একটি ছোট উদ্ভিদ (gametophyte) গঠিত হয়। এই ছোট উদ্ভিদ থেকেই একটি নতুন স্পোরোফাইট গঠিত হয়।
নতুন স্পোরোফাইটের বৈশিষ্ট্য
নতুন স্পোরোফাইটের কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:
- এটি একটি ডিপ্লয়েড (2n) জীব।
- এটি বীজ উৎপাদন করে।
- এটি একটি পরজীবী বা স্বাধীন জীবনযাপন করতে পারে।
নতুন স্পোরোফাইটের গঠন উদ্ভিদের জীবনচক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নতুন স্পোরোফাইট থেকেই নতুন উদ্ভিদ জন্ম নেয়।