বিজ্ঞানী ব্ল্যাকম্যান (1905) প্রথম লক্ষ করেন, সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া দুটি দশায় সম্পন্ন হয়, যথা— (1) আলোক দশা (Light phase) এবং (2) অন্ধকার দশা (Dark phase)।
অন্ধকার দশা (Dark phase)
সালোকসংশ্লেষের যে দশাটি আলোর প্রয়োজন ছাড়াই সম্পন্ন হয়, তাকে অন্ধকার দশা বলে। প্রকৃতপক্ষে এই দশাটি দিনের বেলায় আলোক দশার পরবর্তী পর্যায়ে টে। তাই একে আলোক নিরপেক্ষ বিক্রিয়াও বলা হয়। অন্ধকার দশা ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমায় ঘটে থাকে।
অন্ধকার দশার বিভিন্ন পর্যায় নিচে দেওয়া হল
(i) অঙ্গারআত্তীকরন
এই দশার বিক্রিয়াটি ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমায় ঘটে থাকে। এক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড পত্ররন্দ্রের মাধ্যমে পাতার ভেতরে প্রবেশ করে এবং মেসোফিল কলার ভেতর উৎসেচকের উপস্থিতিতে রাইবিউলোজ বিস্-ফসফেটের (RuBP) সঙ্গে বিক্রিয়া করে ফসফোগ্লিসারিক অ্যাসিড (PGA) তৈরি করে। এইভাবে পরিবেশ থেকে পাতার কোশে কার্বনের অঙ্গীভূত হওয়াকে অঙ্গারআত্তীকরণ বলে।
(ii) ফসফোগ্লিসার্যালডিহাইড গঠন
এরপর আলোক দশায় উৎপন্ন ATP থেকে NADPH + H+ (বিজারিত নিকোটিনামাইড-অ্যাডিনিন-ডাই-নিউক্লিওটাইড ফসফেট) PGA-র সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে ফসফো-গ্লিসার্যালডিহাইড (PGAId) তৈরি করে।
(iii) গ্লুকোজ সংশ্লেষ এবং রাইবিউলোজ বিস্-ফসফেট পুনরুৎপাদন
12 অণু PGAId থেকে 2 অণু PGAld কয়েকটি ধাপে 1 অণু গ্লুকোজ উৎপাদন করে। বাকি 10 অণু PGAId কয়েকটি রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে 6 অণু RuBP (রাইবিউলোজ বিস্-ফসফেট) তৈরি করে। এই বিক্রিয়াগুলি চক্রাকারে সংঘটিত হয়। বিজ্ঞানী কেলভিন এটির আবিষ্কর্তা। তাই তাঁর নামানুসারে এটিকে কেলভিন চক্রও বলা হয়।
(iv) গ্লুকোজের ব্যবহার
উৎপন্ন গ্লুকোজের অধিকাংশ ফ্লোয়েম কলার মাধ্যমে উদ্ভিদের বিভিন্ন কলা-কোশে পৌঁছোয় এবং অতিরিক্ত গ্লুকোজ শ্বেতসার বা স্টার্চে পরিণত হয়ে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চিত থাকে।
ক্রেডিটঃ কর্মদিশারি এবং Jumpmagazine