মহাশূন্য! যেখানে রক্ত শূন্যে মিলিয়ে যায়!
রাতের আকাশে মিটমিট করতে থাকা লক্ষ লক্ষ তারার দিকে তাকিয়ে তাদের ছোঁয়ার ইচ্ছে হয় নি এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মনে অসীম বাসনা থাকলেও মহাশূন্যে পাড়ি দেওয়ার ইচ্ছে পূরণ হয় খুব খুব কম মানুষের। মাতৃভূমি পৃথিবীকে ছেড়ে সেই দূর মহাশূন্যে কেমন লাগবে আপনার? কি কি বাধার সম্মুখীন হতে পারেন জানেন কি?
মহাশূন্যে যাওয়ার স্বপ্নটা যত সুন্দর, পাড়ি দেওয়াটা তেমনই ভয়ানক। প্রতিটি পদে যেন মৃত্যুর ফাঁদ পাতা! তাঁর সাথে আছে বিভিন্ন রেডিয়েশন, ভয়ানক ঠান্ডা, ওজনহীনতা এবং অপ্রত্যাশিত বিভিন্ন পার্টিকেলের সংঘর্ষ!
এসব নাহয় দৃশ্যমান বিপদ, চাইলে বিভিন্ন উপায়ে কাটানো যায়। কিন্তু মহাকাশচারীদের এরকম এক বিপদের সম্মুখীন হতে হয় যা এক প্রকার অপ্রতিরোধ্য! কি সেটা?
সেটা হলো রক্ত ধ্বংস হয়ে যাওয়া! হ্যাঁ, সত্যিই!
কেন এরকম হয় বিজ্ঞানীরা তাঁর উত্তর জানে না!
পৃথিবীর বায়ুমন্ডলীয় চাপ এবং অভিকর্ষে থাকতে থাকতে আমাদের শরীরের যাবতীয় সিস্টেম এর সাথে মানিয়ে নিয়েছে। মহাকাশে ওজনও শূন্য ( স্পেস স্টেশনে) ওখানে তাই একটু ঝামেলা তৈরী হয়। আমাদের রক্ত থেকে ১০% ফ্লুইড হারিয়ে যায়। সে অনুযায়ী ১০% লোহিত রক্ত কণিকা ধ্বংস হবে।
স্পেসে রক্ত কণিকা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটাকে বলে Space Anemia…
তো এরকমটা হলে ঠিক ছিল। কিন্তু Guy Trudel নামের একজন Medical Physics Scientist ১৭,৩৩৬ জন মহাকাশচারীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখলেন, যারা গড়ে ৫ মাসের মতো মহাকাশে ছিলেন তাদের আসলে ১০% হারে রক্ত ধ্বংস না হয়ে তাঁর চেয়ে ৫০% ( ১০% এর তুলনায়) বেশি হারে ধ্বংস হচ্ছে!
ওজন শূন্য পরিবেশে এরকম হওয়া উদ্বেগের কারণ নয় ঠিক কিন্তু Trudel এবং তার সহকর্মীরা দেখলেন, স্পেস থেকে ফিরে আসার পরে দেহে ফ্লুইড রিকভারড হলেও ব্লাড সেই আগের হারেই ধ্বংস হচ্ছে। এটাই এখন বিজ্ঞানীদের দুশ্চিন্তার কারণ!
তাদের অবজারভেশনে আরও দেখা গেল, যারা এক বছরের বেশি স্পেসে ছিলেন তাদের রক্ত প্রত্যাশিত হারের চেয়ে ৩০% বেশি হারে ধ্বংস হচ্ছে!
কিন্তু এর কারণ কী? বিজ্ঞানীরা এখনো জানে না। গবেষণা চলছে। হয়তো আমরা খুব দ্রুতই জানতে পারব সেই স্পেস ভ্যাম্পায়ারদের যারা আমাদের স্বপ্ন চারিণী মহাকাশচারীদের রক্ত চুষে খায়!
Reference :
https://scienceandstuff.com/?p=2936
সংগ্রহে ..... ইমামুল হাসান