আপনার কোনো কাজের জন্য কেউ রাগান্বিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে, আপনার নিজের কাছে খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। আপনি নিজেকে দোষী ভাবতেই পারেন। কিন্তু যদি এমন হয় যে আপনার আসে পাশে যারা আছেন, তারা কোনো কারণে রাগ করলে, তাদের মন খারাপ হলে আপনার বার বার মনে হয় যে এই সব কিছুর জন্য আপনিই দায়ী এবং নিজেকে বার বার প্রেশার দিতে থাকেন আসলে আপনার কোন ব্যবহারে তারা এমন আচরণ করছে (যেখানে আপনার আসলেই কোনো দোষ নেই) তাহলে এই বিষয়টা স্বাভাবিক না।এই যে নিজেকে সবসময় দোষী মনে করা বা আপনার কোন দোষ আছে নাকি তা ভেবে সময় নষ্ট করা এটিকে DSM-5 আলাদা কোনো ডিসওর্ডার হিসেবে নামকরন না করলেও একে সাইকোলজিস্টরা Self blaming depression বলে চিহ্নিত করে থাকেন।
এইরকম কন্ডিশনের ভুক্তভোগীরা সাধারণত নিজের অনেক পুরোনো কিছু ভুলকে বার বার মনে করে নিজেকে নিয়ে লো সেল্ফস্টিমে ভোগেন এবং এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সবার সাথে মিশে, সবার জীবনে পজিটিভিটি ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তারপর তাদের সেই নিকট ব্যক্তির কোনো সমস্যা হলে তার জন্য আবার নিজেকে দোষী ভাবতে থাকেন এবং হতাশায় ভুগেন। এভাবে আবার পুরো জিনিসটার পুনোরাবৃত্তি ঘটে আর হতাশা বাড়িতে থাকে। সব মিলিয়ে নিজেকে দোষী ভাবা আর হতাশার গোলকধাঁধায় ভুক্তভোগী আটকা পড়ে যান।
এখন DSM-5 এটাকে মৌলিক ডিসওর্ডার হিসেবে না মানলেও এই self blaming depression পরবর্তীতে বড় বড় ডিসওর্ডারে রুপান্তরিত হয়।যেমনঃ নার্সিসিজম, বর্ডার লাইন পারসোনালিটি ডিসওর্ডার, হিস্টরিক পারসোনালিটি ডিসওর্ডার ইত্যাদি। অর্থাৎ আপনি এটাকে বেশ কিছু মৌলিক ডিসওর্ডারের বীজও বলতে পারেন।
এবার আসি এর কারণ নিয়ে, চাইল্ডহুড ট্রোমা,underlying anxiety disorder(যেটা অনেকসময় জেনেটিক ভাবেও হয়ে থাকে),ডিপ্রেশন (পোস্ট ট্রোমা,শারীরিক অসুস্থতা,পারিপার্শ্বিকতার প্রভাবে হতে পারে) এইসবকে এমন self blaming depression এর কারণ হিসেবে ধরে নেয়া হয়।
এখন আসি এই থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে,প্রথমত এটা মেনে নিন কেউ-ই ভুল ত্রুটির উর্ধে নয়।ভুল সবাই-ই করে এবং অবশ্যই করে কারণ এটা মানুষের সহজাত ধর্ম, তাই পুরোনো বিভিন্ন বিব্রত মুহুর্ত, ভুল এইসব বার বার মনে করে নিজেকে নিজে প্রেশার দিবেন না। এটা হচ্ছে প্রাথমিক ধাপ। আর যদি আপনি আপনার চিন্তা ভাবনার উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে সেক্ষেত্রে আপনি নিচের থেরাপিগুলো নিতে পারেন
1. analytic therapy (CAT)
2. cognitive-behavioral therapy (CBT)
3. mentalization-based therapy (MBT)
4. mindfulness-based cognitive therapy
5. schema therapy
উপরের এই থেরাপিগুলো সাধারণত আপনার চিন্তা ভাবনার উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে সাহায্য করবে যাতে বার বার হতাশার গোলকধাঁধায় পড়তে না হয়।
আপাতত যারা এমন সমস্যার শিকার না তাদের কাছে জিনিসটা বাহুল্য বা নেকামি লাগতে পারে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যারা self blaming depression এর শিকার হোন তারা এর জন্য প্যানিক এটাক, অ্যাংজাইটি এটাক, লোং টার্ম ডিপ্রেশনে ভুগতে পারেন।আর এর ভয়াবহতা অনেক সময় আত্নহ*ত্যা পর্যন্ত গোড়ায়। তাই আপনার পরিচিত কেউ এমন পরিস্থিতির শিকার হলে তাকে ম*ক না করে রিকোভারি করতে সাহায্য করুন।
©নাদিয়া ইসলাম
সোর্সঃ https://www.psychologytoday.com/.../self-blame-the...
https://mindfasting.com/why-do-i-always-think.../