Golden Ratio -সূবর্ণ অনুপাত
পিথাগোরাস বলেছিলেন,
" পৃথিবীর সকল কিছু গণিত দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব।ভালোবাসা,আবেগ,অনুভূতি,গানের সুর কিংবা ঈশ্বরকেও।"
তার কথাকে সত্যি করেই হয়তোবা সৌন্দর্যের পিছনে এক অদ্ভুত গণিত পাওয়া গেলো!
অদ্ভুত গণিতটা পাওয়া গেলো লাল গোলাপে
কিংবা ঘূর্ণিঝড়ে
ধরুন কোনো কোনো বস্তু দুটি খন্ডে বিভক্ত।
প্রথম খণ্ডের দৈর্ঘ্য a(বড় খণ্ড)
দ্বিতীয় খণ্ডের দৈর্ঘ্য b(ছোট খণ্ড)
এখন a:b=1.618 হয় তবে তারা সুবর্ণ অনুপাতে বিভক্ত ও সুবর্ণ অনুপাতকে (φ) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
উদাহরণ হিসেবে দেখানো যায় আমাদের হাত।
কবজি থেকে কনুই পর্যন্ত দৈর্ঘ্যকে a ধরি।
হাতের কবজির দৈর্ঘ্যকে b ধরি। এখন a/b করলে পাবো 1.618.এটাই গোল্ডেন রেশিও।
সূবর্ণ অনুপাতের সাহায্য আয়তক্ষেত্র অঙ্কন
আমরা প্রথমে ফিবনোচ্চি ক্রম অনুযায়ী চিত্রের মত করে একটার পিঠে একটা করে বর্গক্ষেত্র আঁকি (প্রথমে ১ বর্গএকক, তারপর আবার ১ বর্গএকক , তারপর ২ বর্গএকক , তারপর ৩ , তারপর ক্রমান্বয়ে ৫ , ৮, ১৩,২১,৩৪….... বর্গএকক…...) এবং এভাবে আঁকতে থাকলে আমরা যেখানেই থামি না কেন সবসময়ই তা একটি বিশেষ আয়তক্ষেত্র গঠন করবে , এ বিশেষ আয়তক্ষেত্রকে বলে Golden Rectangle. বিশেষ কেন? কারণ প্রতিবারই আয়তের দৈর্ঘ্য:প্রস্থ = 1.6180…=Golden Ratio (PHI)।এবার যদি আমরা আয়তের কর্ণ গুলো একের পর এক যুক্ত করি ( চিত্রের মত ) তাহলে একটা spiral তৈরি হবে ; একে বলা Golden Spiral এবং এ spiral এর বক্রতার সাথেও Golden Ratio এর সম্পর্ক রয়েছে।
১.৬১৮ এই সংখ্যাটাই নাকি সকল সৌন্দর্যের মূল উপাদান।
তাজমহল
এ (φ) অনুপাতকে পাওয়া যায় Apple এর লোগোতে
কিংবা টুইটার বা পেপসির লোগোতে
মানুষের শরীরের গড়নও এ অনুপাত মেনে চলে। যেমন আপনার মাথা থেকে পা পর্যন্ত মাপুন, তারপর মাটি থেকে আপনার নাভি পর্যন্ত মাপুন। প্রথম পরিমাপটির সঙ্গে দ্বিতীয় মাপটি ভাগ দিন। ফল পাওয়া যাবে ১.৬১৮। আপনার কাঁধ থেকে হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত মাপ নিয়ে তাকে আপনার বাহু থেকে আঙ্গুল পর্যন্ত দূরত্বের সঙ্গে ভাগ দিন, সোনালি অনুপাত পেয়ে যাবেন।পা থেকে কোমরের মাপকে পা থেকে হাঁটু দিয়ে ভাগ করুন।পাওয়া যাবে ১.৬১৮।আঙ্গুলের গিঁট, পায়ের পাতা, মেরুদণ্ডের বিভাজন সবকিছুই এ অনুপাতটি মানে। বিজ্ঞানী ও চিত্রশিল্পী লিওনাওর্দো দ্য ভিঞ্চি দেখিয়েছিলেন,মানুষের শরীরের গঠনে সব সময়ই সোনালি অনুপাতের হিসাবে থাকে।
সুন্দরী রমণী সিগ্ধ চেহারাও রয়েছে গোল্ডেন রেশিও..
কিংবা মোনালিসার নীরব হাসির ঠোঁটের কোণায়
কিংবা ডোনাল্ড ট্রাম্পে
ইউক্লিডের এলিমেন্টস-এও সোনালি অনুপাতের অনুরূপ একটি জ্যামিতিক প্রতিজ্ঞা দেওয়া ছিল।১৫০৯ সালে ইতালীয় গণিতবিদ ও অ্যাকাউন্টিং-এর জনক লুকা প্যাচিওলির লেখা ‘ডি ডিভাইনা প্রোপরশনি (De divina proportione)’ নামক গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর সংখ্যাটি অধিক পরিচিতি লাভ করে । বইয়ের জ্যামিতিক চিত্রগুলো এঁকে দিয়েছিলেন রেনেসাঁর প্রবাদ পুরুষ লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি।লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি তাঁর বহু শিল্পকর্মে সোনালী অনুপাত ব্যবহার করেছেন । এর মধ্যে ভিট্রুভিয়ান ম্যান, দ্য লাস্ট সাপার ও মোনালিসার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ।
ভিট্রুভিয়ান ম্যান
এছাড়া মাইকেলেঞ্জেলোর ‘দ্য ক্রিয়েশন অফ অ্যাডাম’, রাফায়েলের ‘দ্য স্কুল অফ এথেন্স’, বত্তিচেল্লির ‘দ্য বার্থ অফ ভিনাস’, সালভাদর ডালির ‘দ্য স্যাক্রামেন্ট অফ দি লাস্ট সাপার’- ইত্যাদি বিখ্যাত সব চিত্রকর্মে গোল্ডেন রেশিওর ব্যবহার দেখা যায় ।
মাইকেল এঞ্জেলো, দ্য ভিঞ্চি, আলব্রেখট দ্যুরার এবং আরও অনেক চিত্রশিল্পী ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের কম্পোজিশনে সোনালি অনুপাত ব্যবহার করেছেন।
শামুকের প্রতিটি স্পাইরালের ব্যাস পরেরটির সঙ্গে 1.618 অনুপাতে রয়েছে
প্রাচীন স্থাপত্য কলায় (গ্রিসের পার্থেনন মন্দির)
φ সম্পর্কে প্রাচীন মিসরীয়দের জানা-শোনা ছিল বলে মনে করা হয় । আনুমানিক ২৫৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তৈরি হওয়া প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের একটি-মিশরের পিরামিডে সোনালি অনুপাতের ব্যবহার লক্ষ করা গেছে
এমনকি আইফেল টাওয়ারেও
উত্তরটি বড় হয়ে যাওয়ায় দুঃখিত । এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে যা দেখলেন তা হয়তো আপনি আগে দেখেন নি।
রেফারেন্সঃ
https://www.nationalgeographic.org/media/golden-ratio/
CREDIT: অভ্র আহমেদ