চুল হচ্ছে আমাদের শরীরের একটি অংশ। এটি অন্তস্ত্বক বা ত্বকের বহিঃস্তরে অবস্থিত ফলিকল থেকে উৎপন্ন চিকন লম্বা সুতার মতোন প্রোটিন তন্তু। কিন্তু কখনো কি শুনেছেন, চুলের প্রতি কারো ভীতি কাজ করে?
কিটোফোবিয়া হচ্ছে এমন একটি বিরল প্রজাতির ফোবিয়া, যেটি কি না অস্বাভাবিক, অসহ্যকর এবং অবিচল চুলের প্রতি ভয় সৃষ্টি করে। এই কিটোফোবিয়া নামটি এসেছে গ্রীক শব্দ "কাইটো" যার অর্থ "চুল হারানোর ভয়" এবং "ফোবস" যার অর্থ "ভয়" থেকে। কিটোফোবিয়ার আবার ট্রাইকোপ্যাথোফোবিয়া নামেও পরিচিত, যেখানে গ্রীক শব্দ "ট্রাইকো" অর্থ "চুল" এবং "প্যাথো" অর্থ "রোগ"। তাহলে ট্রাইকোপ্যাথোফোবিয়ার অর্থ দাঁড়ায় " চুলের রোগের ভয়"।
সারাবিশ্বের মানুষ যখন তাদের চুলের যত্ন নিতে টাকা এবং সময় ব্যয় করতে ব্যস্ত, তখন কিটোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজেদের চুল থেকে দূরে রাখার চেষ্টায় উদগ্রীব। এমনকি তারা অন্যান্য প্রাণীর চুল বা লোমকেও ভয় পায়।
কিটোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা চুলের স্টাইল করা তো উপেক্ষা করেই, এমনকি তারা স্যালুন কিংবা নাপিতের কাছে যেতেও ভয় পায়। তারা মনে করে, এসব করার ফলে হয়তো তাদের চুলের কোনো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কিছু মানুষ তো তাদের চুল স্পর্শ করতেও ভয় পায় এই কারণে যে, যদি তাদের চুল পড়ে তারা ন্যাড়া হয়ে যায়।
এখন জানবো এই কিটোফোবিয়ার কারণ কি?
কিটোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা মনে করেন যে, তারা যদি চুল স্পর্শ করেন, তবে তা নোংরা হবে যাবে। এর কারণ হচ্ছে, অতিরিক্ত চুল পড়ে যাওয়া। অনেকেরই আছে চুলে খুশকি,উকুন অথবা কিছু ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণে চুল পড়তে থাকে এবং সেখান থেকেই মূলত এই ফোবিয়ার উৎপত্তি হয় ওই ব্যক্তির মধ্যে। এছাড়াও লোমশ ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকতে থাকতেও এক ধরনের নেতিবাচকতার সৃষ্টি হয়,যার ফলে ব্যক্তিটি কিটোফোবিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।
এবার কিটোফোবিয়ার লক্ষণগুলো জেনে নেই -
১. চুল দেখার সাথে সাথেই ব্যক্তির মধ্যে কম্পনের সৃষ্টি হয় এবং সে ভয় পেতে শুরু করে।
২. দীর্ঘদিন ধরে বমি বমি ভাব কিংবা বিভিন্ন ধরনের গ্যাসট্রিক জাতীয় সমস্যায় আক্রান্ত থাকলেও এই ফোবিয়া দেখা যায়।
৩. চুল নিয়ে সবসময় চিন্তা করতে করতে, বাস্তবজীবনে কেমন একটা পাগলামি বোধ করে।
৪. আক্রান্ত ব্যক্তি সর্বদা স্যালুন এড়িয়ে চলে।
৫. মাঝে মাঝে চুল মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখলেও তাদের প্যানিক অ্যাটাক হয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই রোগের কি কোনো চিকিৎসা বা সমাধান নেই? অবশ্যই আছে, প্রতিটি সমস্যারই সমাধান রয়েছে। এরজন্য ভালো মানের ঔষধ এবং সাইকোথেরাপি রয়েছে, যার মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তি অনেকটাই সুস্থ থাকবেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।
লেখকঃ Nafisa Tasmiya | Science Bee
#science #bee #facts #phobia #hair #fear