লিমিটেড ইন্ডাস্ট্রি বলতে আপনি কোম্পানির গঠন কি রকম তা বুঝতে পারেন। একটি কোম্পানির গঠন কয়েক রকম হতে পারে। তার মধ্যে রয়েছে -
প্রোপ্রাইটার কোম্পানী: ধরুন আপনি একটি ব্যবসা করেন। তাতে আপনি নিজের টাকা লগ্নী করেছেন, কর্মচারী রেখেছেন, পরিশ্রম করেন। উপার্জন করেন, খরচ করেন। সরকারকে ট্যাক্স দেন। এটি হলো আপনার মালিকানা। আপনি একাই তার মালিক। এমন কোম্পানি হবে, প্রোপরাইটার কোম্পানী। এমন কোম্পানীতে আপনি নিজের সমকক্ষ কাউকে আর আনতে পারবেন না। লাভ, ক্ষতি, সব আপনার। দায় দায়ীত্ব সব আপনার।
এবার ধরুন আপনার ব্যবসা উন্নতি করতে পারে, এমন সুযোগ আছে, কিন্তু তার জন্য আপনি চান আরো টাকা। এখন আপনি এমন কাউকে পাচ্ছেন না যে আপনাকে লগ্নী করার টাকা দেবে। শুধু investor হতে কেউ রাজী নয়। সে বা তারা টাকা দিতে রাজী, কিন্তু তারাও কোম্পানীর তত্বাবধানে থাকতে চায়। এই সময় আপনার কোম্পানী আর প্রোপরাইটার কোম্পানী থাকতে পারবে না। এবার আপনাকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী করতে হবে। তাহলে আপনার কোম্পানীর গঠন পরিবর্তিত হয়ে গেল।
প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী: একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীতে অন্তত পক্ষে দুজন মালিক হবে। এরা দুজন মিলে নিজেদের কাছ থেকে অন্তত পক্ষে ১ লক্ষ টাকা লগ্নী করবে। এমন কোম্পানীতে কম পক্ষে দুজন ও সর্বাধিক ৫০ জন ডায়রেক্টর হতে পারবে। এই কোম্পানীর শেয়ার সব নিজস্ব ব্যক্তির হাতে হবে। এই কোম্পানীর শেয়ার হস্তান্তর যখন খুশী, যাকে খুশী করা যাবে না। শেয়ার হস্তান্তর করার সময়, প্রত্যেক শেয়ার হোল্ডারকে জানাতে হবে, তার সমর্থন থাকতে হবে। বোর্ড অফ ডায়রেক্টরের মিটিং হতে হবে। তার মিনিটস রেকর্ডে থাকতে হবে। এই কোম্পানীর লাভ ক্ষতি সব আনুপাতিক ভাবে সবার মধ্যে থাকবে। এই কোম্পানীকে স্টক এক্সচেঞ্জে লিস্ট করা যাবে না। মানে এইরকম কোম্পানী সবার কাছ থেকে লগ্নী করার টাকা নিতে পারবে না। শুধু ঐ দুই জন ডায়রেক্টর থেকে ৫০ জন ডায়রেক্টর টাকা লগ্নী করবেন। তারা টাকা কোথা থেকে আনলেন ইত্যাদির হিসাব থাকতে হবে। এমন কোম্পানীকে বাধ্যতামূলক নিজের নামের পরে প্রাইভেট লিমিটেড লিখতে হবে।
পাব্লিক লিমিটেড কোম্পানী: ধরুন আপনার কাছে আরো বড় কোম্পানী করার সুযোগ আছে। আপনি বা আপনারা আরো অনেক টাকা লগ্নী করতে চান। বাজারে অনেক রকম গ্রাহক আপনাকে তখনই এত বড় কাজ দেবে, বা বিশ্বাস করবে যদি তারা নিশ্চিত হন যে কোম্পানী শুধু দু তিনজনের হাতে নেই।ইত্যাদি । এমন সময় আপনি লিমিটেড কোম্পানী করবেন। এতে অন্তত পক্ষে সাতজন ডায়রেক্টর হবে, আর সর্বাধিক ডায়রেক্টরের কোনো সীমা নেই। যতখুশী ডায়রেক্টর হতে পারে। এতে অন্তত পক্ষে ৫লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এমন কোম্পানী নিজেকে স্টক এক্সচেঞ্জে লিস্ট করাতে পারে। নিজের শেয়ার ছেড়ে লগ্নী করার টাকা তুলতে পারে। তাই এমন কোম্পানীকে পাব্লিক লিমিটেড কোম্পানী বলা হয়। কথ্য ভাষায় সবাই লিমিটেড কোম্পানী বলে। এমন কোম্পানীকে নিজের নামের পরে বাধ্যতামূলক ভাবে লিমিটেড কোম্পানী লিখতে হবে।
এছাড়া গত কিছু বছরে একটি কোম্পানীর গঠন খুব চলনে এসেছে। LLP কোম্পানী। এটি এমন প্রোফেশনালদের জন্য ভালো একটি ব্যবস্থা যেখানে তাদের প্রাইভেট লিমিটেড বা পাব্লিক লিমিটেড কোম্পানীর জটিলতা বহন করতে হয় না, আবার প্রোপরাইটার কোম্পানীর মতন একা ঝুঁকি নিতে হয় না। এটি হলো লিমিটেড লায়ব্লিটি পার্টনারশিপ কোম্পানী। এতে ডায়েরেক্টর হয়না। এতে ম্যানেজিং পার্টনার হয়।অন্তত পক্ষে দুজন। সর্বাধিকের কোনো সীমা নেই।নিজের টাকা লগ্নী করুন, পার্টনারশিপ করুন। বছরের শেষে লাভ ক্ষতির আনুপাতিক হিসাব করুন। কিন্তু এটি তাতেই সীমিত নয়। এর বিভিন্ন সুবিধা আছে। তবে এতে আপনি অন্য লিমিটেড কোম্পানীর মতন লাভাংশ ইত্যাদি ধরে রাখতে পারবেন না। যা উপার্জন হবে, তা আপনার উপার্জন হবে, সেই হিসাবে ট্যাক্স দিতে হবে.. ইত্যাদি।
তথ্য - Quora