আণবিক জীববিজ্ঞানে, ডিএনএ অনুলিপন বা ডিএনএ প্রতিলিপন হলো একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি ডিএনএ অণু থেকে একই রকম দুটি ডিএনএ-এর প্রতিলিপি উৎপন্ন হয়।[১] ডিএনএ প্রতিলিপি জৈবিক উত্তরাধিকারের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অংশ হিসেবে কাজ করে। কোষ বিভাজনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুর বৃদ্ধি এবং মেরামতকালে এটি জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, যখন এটি নিশ্চিত করে যে নতুন কোষের প্রতিটি নিজস্ব ডিএনএ অনুলিপি গ্রহণ করে।[২] কোষ বিভাজনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য যা ডিএনএ অনুলিপন অপরিহার্য করে তোলে।
ডিএনএ দুটি পরিপূরক স্ট্র্যান্ড বা সূত্রকের একটি দ্বি-সূত্রক দিয়ে তৈরি। দ্বি-সূত্রক বলতে একটি দ্বি-সূত্রী ডিএনএর উপস্থিতির বর্ণনা দেয় যা দুটি সরলরৈখিক সূত্রকের সমন্বয়ে গঠিত ও একে অপরের বিপরীতে চলে এবং একসাথে প্যাঁচানো থাকে।[৩] প্রতিলিপনের সময় এই সূত্রকগুলো পৃথক হয়ে যায়। মূল ডিএনএ অণুর প্রতিটি সূত্রক তার পরিপূরক সূত্রক উৎপাদনের জন্য টেমপ্লেট হিসাবে কাজ করে, এই প্রক্রিয়াটিকে অর্ধ-সংরক্ষণমূলক প্রতিলিপন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্ধ-রক্ষণশীল প্রতিলিপনের ফলস্বরূপ, নতুন সূত্র একটি মূল ডিএনএ সূত্রকের পাশাপাশি একটি নতুন সংশ্লেষিত সূত্রকের সমন্বয়ে গঠিত হয়।[৪] কোষীয় প্রুফ রিডিং এবং ত্রুটি-চেক করার পদ্ধতিগুলো ডিএনএ প্রতিলিপনের বিশ্বস্ততা নিশ্চিত করে।[৫][৬]
একটি কোষে, ডিএনএ অনুলিপন নির্দিষ্ট অবস্থান জিনোমে[৭] শুরু হয় যাতে একটি প্রাণীর জিনগত উপাদান রয়েছে।[৮] নতুন সূত্রকের উৎপত্তির সময় হেলিকেজ নামক এনজাইম ডিএনএ-এর প্যাঁচ খুলতে সাহায্য করে যাতে দুটি রেপ্লিকেশন ফর্ক তৈরি হয়। ডিএনএ সংশ্লেষণের সূচনা এবং ধারাবাহিকতায় সহায়তার জন্য অনেকগুলো প্রোটিন প্রতিলিপি রেপ্লিকেশন ফর্কের সাথে যুক্ত থাকে। প্রধানত ডিএনএ পলিমারেজ এনজাইম নিউক্লিওটাইড যুক্ত করে নতুন সূত্রক সংশ্লেষ করে যা প্রতিটি (টেমপ্লেট) সূত্রকের পরিপূরক। ইন্টারফেজের এস- পর্যায়ে ডিএনএ প্রতিলিপন ঘটে থাকে।
উইকিপিডিয়া