স্বপ্নে সাধারণত আমরা চারপাশের চরিত্র এবং পরিবেশকেই দেখে থাকি। টেলিভিশন, সিনেমা কিংবা ভিডিও গেমের কোনো চরিত্রও আমাদের স্বপ্নে দেখা দিতে পারে। একটা কথা অনস্বীকার্য, আমরা স্বপ্নে যাকি দেখি না কেন, সেই চরিত্র কিংবা পরিবেশ আমরা এর আগে বাস্তবেও দেখেছি। বাস্তবের চরিত্র ও পরিবেশ গল্প পাল্টে আমাদের স্বপ্নে এসে ধরা দেয়। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি, অন্ধ লোকেরা কীভাবে স্বপ্ন দেখে?
আগেই বলে রাখা ভালো, এই মুহূর্তে কারো চোখে জ্যোতি আছে কিনা, তার ওপর স্বপ্ন দেখা নির্ভর করে না। ধরুন, কোনো ব্যক্তি যদি জন্মান্ধ না হন, ২০ বছর বয়সে গিয়ে অন্ধ হয়ে যান, এরপরের জীবনেও তিনি স্বপ্নে ছবি দেখতে পারবেন। যদিও তার চোখে কোনো জ্যোতি নেই! কারণ স্বপ্নের পুরো ব্যাপারটিই ঘটে ব্রেইনে। এর ওপর চোখের প্রভাব নেই । তবে যারা জন্মান্ধ, তারা স্বপ্নে কোনো ছবিই দেখতে পায়না। কারণ তাদের স্মৃতিতে যে আদৌ কোনো ছবি জমেনি! কোনো কিছু দেখতে কেমন লাগে, এই অনুভূতি তারা একটি মুহূর্তের জন্যও জীবনে অনুভব করতে পারেনি। যে ব্যক্তি কোনোদিন মিষ্টি খায়নি, তাকে যেমন কোনোভাবেই বোঝানো যাবে না এর স্বাদ কেমন, এ ব্যাপারটিও ঠিক তেমন। তবে তাই বলে জন্মান্ধরা যে স্বপ্ন দেখে না তা নয়। তারা তাদের স্বপ্নে বিভিন্ন শব্দ শুনতে পায়, দৃষ্টি ছাড়া অন্যান্য ইন্দ্রিয়ানুভূতি লাভ করে। ড্যানিশ ওই গবেষণাতেই দেখা যায়, জন্মান্ধরা সাধারণ মানুষের তুলনায় চার গুন বেশি স্বপ্ন দেখে থাকে! সাধারণভাবে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, সামনে ঘটিতব্য ভয়ানক ঘটনাগুলোর সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার জন্যেই দুঃস্বপ্নগুলো মস্তিষ্কের এক ধরণের মানসিক প্রশিক্ষণ হিসেবে কাজ করে। এর ফলে বাস্তবে যখন সেই ভয়াবহ ঘটনাগুলো ঘটে, আমরা একটু কম বিচলিত হই।
অধিকাংশ অন্ধ মানুষের দৈনন্দিন জীবনেই সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। যেমন তারা খুব সহজেই দলছুট হয়ে যেতে পারেন, ভীড়ের মাঝে পথ ভুলে হারিয়ে যেতে পারেন বা ছিনতাইয়েরও শিকার হতে পারেন। এসব দুর্ঘটনায় খুব বেশি বিচলিত না হতেই হয়তো তাদের মস্তিষ্ক দুঃস্বপ্নের মাধ্যমে প্রস্তুতি নেয়!
ডেইলি বাংলাদেশ/জেএমএস