কিছু কিছু রাসায়নিক যৌগ রয়েছে যাদের পানির প্রতি তীব্র আকর্ষণ রয়েছে। এরা প্রায় যেকোনো কিছু হতে পানি শোষণ করে নিতে পারে। এমনকি যে পানি দেখা যায় না তাকেও অবলীলায় টেনে নিতে পারে। যেমন - বাতাসে থাকা জলীয়বাস্প। এদেরকে Hygroscopic পদার্থ বা নিরূদক বলে। সালফিউরিক এসিড খুব ভাল একটি উদাহরণ। এটি এতটাই শক্তিশালী যে, যে যৌগের মধ্যে পানি নেই কিন্তু পানির উপাদান (হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন) রয়েছে, তা থেকেও পানি শুষে নিতে পারে। যেমন - চিনি (C12H22O11)(C12H22O11) তে কোনো পানির অণু বিদ্যমান নেই কিন্তু খেয়াল করে দেখুন এতে ২২টি হাইড্রোজেন এবং ১১টি অক্সিজেন পরমাণু রয়েছে। এগুলো দিয়ে ১১টি পানির অণু (H2O)(H2O) বানানো সম্ভব। আপনি যদি চিনিতে সালফিউরিক এসিড ঢালেন এটি একটি চিনির অনু থেকে এই পানি বের করে নিয়ে শুধু কালো কার্বন রেখে দিবে।
C12H22O11+H2SO4→12C+H2SO4+11H2OC12H22O11+H2SO4→12C+H2SO4+11H2O
নিরূদকের আরেকটি পরিচিত উদাহরণ হল সিলিকাজেল। জুতার বাক্সে অনেকসময় একটি প্যাকেটে মুড়িয়ে এগুলো রাখা হয়ে থাকে যাতে করে ভেতরের বাতাস শুষ্ক থাকে।
কিছু কিছু নিরূদক আছে যারা আবার পানিতে দ্রবণীয়। এরা আর্দ্রতা শোষণ করে সেই শোষিত পানিতেই দ্রবীভূত হয়ে গিয়ে দ্রবণ তৈরী করে। এদেরকে deliquescent যৌগ বলে। যেমন -
CaCl2,MgCl2,ZnCl2CaCl2,MgCl2,ZnCl2ইত্যাদি। আমরা যে লবণ খাই তার সিংহভাগই হচ্ছে সোডিয়াম ক্লোরাইড NaCl.NaCl. এই যৌগটি deliquescent নয় কিন্তু এটি পানিতে দ্রবণীয়। ফলে খাবার লবণে যদি শুধু এটি থাকে তবে লবণের আর্দ্রতা শোষণ করে দ্রবীভূত হবার কথা নয়। কিন্তু লবণের সাথে যদি উপরোক্ত অন্য কোনো লবণ মেশানো থাকে তবে সেগুলো যথেষ্ট পরিমান জলীয়বাস্প শোষণ করে এবং সোডিয়াম ক্লোরাইড তাতে দ্রবীভূত হয়ে দ্রবণ তৈরী করে ফেলতে পারে। বর্ষাকালে আমাদের দেশে বাতাসে জলীয়বাস্পের পরিমাণ অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। ফলে লবণের এই দ্রবীভূত হয়ে যাবার ঘটনাটি সেসময়ই বেশি হয়ে থাকে।