পৃথিবীর ঘুর্নন থেমে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা নয়। কিন্তু কখনো হঠাৎ যদি এমন হয় যে পৃথিবীর ৪০ সেকেন্ডের জন্য তার আবর্তন বন্ধ করে দিল। আবার ৪০ সেকেন্ড পর পৃথিবী তার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে এলো। তাহলে চারপাশের অবস্থা আর আমাদের অবস্থা কেমন হবে? আমরা সকলেই জানি পৃথিবীর পশ্চিম থেকে পূর্বে অনবরত আবর্তিত হচ্ছে। নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর গতিবেগ ঘন্টায় এক হাজার ছয়শ সত্তর কিলোমিটার। সেই পৃথিবী যদি ৪০ সেকেন্ডের জন্য তার আবর্তন বন্ধ করে দেয় তাহলে নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত প্রত্যেকটি জিনিসই এক হাজার ছয়শ সত্তর কিলোমিটার বেগে পূর্ব দিকে ধাবিত হবে। পরিবেশের সবকিছু প্রতি ঘন্টায় এক হাজার ছয়শ সত্তর কিলোমিটার বেগে ঘুরতে থাকবে। একটা চলন্ত গাড়িতে হঠাৎ জোরে ব্রেক কষলে যেমন ধাক্কা অনুভূত হয় ঠিক তেমনি ধাক্কা লাগবে। আমরাও প্রতি ঘন্টায় এক হাজার ছয়শ সত্তর কিলোমিটার বেগে হাওয়ায় উড়তে থাকবো। এই বেগ খুবই তীব্র।
তবে এতটা তীব্র নয় যে এই বেগ এর জন্য আমরা মহাকাশে চলে যাব। ঘূর্ণন গতির জন্য পৃথিবীর আকৃতি সম্পূর্ণরূপে গোলাকার নয়। কিন্তু পৃথিবী যখন ঘোরা বন্ধ করে দেবে তখন পৃথিবীর আকৃতি সম্পূর্ণরূপে গোলাকার হবে। সমুদ্রের জল সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে। উত্তর ও দক্ষিণ উভয় মেরুই জলে ডুবে যাবে। পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলে ভয়ংকর সুনামি দেখা দেবে। যার জন্য সমস্ত এলাকা জলে ডুবে যাবে। প্লেনে থাকা ব্যক্তিরাও বাঁচতে পারবেন না। কারণ বায়ুমণ্ডল প্রচন্ড বেগে আবর্তিত হওয়ায় খারাপ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে হবে। পৃথিবীর আবর্তন ৪০ সেকেন্ড থেমে গেলে চারিপাশে সব কিছু তছনছ হয়ে যাবে।
এরপর ৪০ সেকেন্ড পরে যদি পৃথিবী আবার আবর্তন করতে শুরু করে তখন সমুদ্রের পানি আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে আসবে। যে এলাকাগুলির জলে ডুবে গিয়েছিল সে অঞ্চলগুলি ও আবার শুকিয়ে যাবে। উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর পানিও সরে যাবে। পৃথিবী যখন তার আবর্তন বন্ধ করে দিয়েছিল তখন যেমন অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গিয়েছিলো তেমন অনেকের মৃত্যু ঘটেছিল। তবে যদি কেউ সৌভাগ্যবশত তখন বেঁচেও থাকে পরবর্তীকালে বিশুদ্ধ পানীয় পানির অভাবে তার মৃত্যু ঘটবে। কারণ সমুদ্রের জল যেহেতু স্থল ভাগে এসে আঁচড়ে পরেছিল করেছিল তাই সেখানকার পানিও দূষিত হয়ে পড়েছে।