শরীরে দুই ধরণের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা ইমিউনিটি আছে-সহজাত প্রতিরক্ষা বা ইনেট (innate) ইমিউনিটি, এবং অর্জিত প্রতিরক্ষা বা অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনিটি। মশার কামড়ে ইনেট ইমিউনিটিই কাজে লাগে।
মাস্ট (mast) সেল বলে একধরণের কোষ ও ইমিউনগ্লোবুলিন ই (IgE) মশার কামড়ের পর লাল ভাব ও চুলকানির জন্য দায়ী। মানুষের জীবনে যখন প্রথমবার মশা কামড়ায়, তখন কোনো অসুবিধা হয়না। কিন্তু সেই মশার নিঃসৃত টক্সিন চামড়া ভেদ করে ঢুকে ইমিউনিটিকে খুঁচিয়ে তোলে। ইমিউনিটি একে ক্ষতিকর জিনিস হিসেবে লক্ষ্য করে শরীরকে তৈরি করে যাতে পরের বার নজরে পড়লে তাড়াতাড়ি দূর করে দেয়া যায়। IgE এই টক্সিনকে চিনে রাখে। একে বলে সেনসিটাইজেশন (sensitization)
পরের বার মশা কামড়ে টক্সিন শরীরে প্রবেশ করলে ঘুমন্ত IgE জেগে উঠে মাস্ট সেলকে ঠেলা মারে। মাস্ট সেল কয়েকটি কেমিক্যাল বের করে যার মধ্যে প্রধান হলো হিস্টামিন (histamine)
এই হিস্টামিন মশা যেখানে কামড়েছে সেখানকার কৈশিক রক্তশিরাগুলিকে ফুলিয়ে দেয় (dilation of capillaries), ও সেখানকার নার্ভগুলিকে ইরিটেট করে। এর ফলে ওখানে লাল ফোলা দেখা যায় (ফোলা রক্তশিরায় বেশি রক্ত জমা হয়ে) ও চুলকানি হয় (ইরিটেট হওয়া নার্ভের জন্য)। আমাদের অসুবিধা হলেও শরীরের পক্ষে এটি ভালো, কারণ বেশি রক্ত তাড়াতাড়ি ওই টক্সিনকে ডাইলিউট করে ওখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়, ও চুলকানির ফলে ওখানে শ্বেতকণিকা (WBC) আকর্ষিত হয়ে জায়গাটিকে পরিষ্কার করে ফেলে। এরপর চুলকানি ও লাল ভাব দুটিই কমে ত্বক আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।
যাঁরা উপরের এত বড় ব্যাখ্যা পড়তে রাজি নন, তাঁদের জন্য সংক্ষিপ্ত উত্তর- মশা কামড়ালে আমাদের শরীর হিস্টামিন নামে যে কেমিক্যাল বের করে, তার জন্য লাল, ফোলা ভাব ও চুলকানি দেখা দেয়। এটি শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অঙ্গ।