কল্কি অবতার
কল্কি অবতারের আবির্ভাব এখনো প্রায় ৪,২৬,৮৮২ বছর বাকি
সত্য, ত্রেতা, দ্বাপরের শেষে কলিযুগের আগমন। এভাবে ঘড়ির কাঁটার মতো এ চার যুগ অনাদিকাল ধরে পালাক্রমে আবর্তিত হয়ে আসছে। বর্তমানে আমরা বৈবস্বত মনুর আয়ুষ্কালে অষ্টাবিংশতি চতুর্যুগের শেষে যে দ্বাপরযুগ তার পরবর্তী কলিযুগে অবস্থান করছি। এ চার যুগে ভগবান তাঁর বিভিন্নরূপে আবির্ভূত হয়ে লীলাবিলাস করছেন। ভগবানের ছয়প্রকার অবতার, তার মধ্যে একটি হচ্ছে লীলাবতার। লীলা অবতার গণের মধ্যে কল্কি অবতার অন্যতম।
চার যুগ অন্তর অন্তর কল্কি অবতার কলিযুগের শেষে এবং পুনরায় সত্যযুগের প্রারম্ভে আবির্ভুত হন। এরই ধারাবাহিকতায় এই কলিযুগেও কল্কি অবতার যথাসময়ে আবির্ভূত হবেন, তাই শাস্ত্রে বর্ণিত আছে। কিন্তু সম্প্রতি ভগবানের অবতার হওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। ভগবানের অবতরণের সুযোগ নিয়ে অনেকেই অবতার হতে চাচ্ছেন বা তার অনুগামীরা তাদের অবতার বলে প্রতিপন্ন করছেন। শাস্ত্রে ভগবদ্ অবতারের যেসব বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা আছে তা না থাকা সত্ত্বেও জনগণের অজ্ঞতার দরুন তারা সমাজে এক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে। এখানে-সেখানে যত্রতত্র শোনা যাচ্ছে-অমুক নাকি ভগবানের অবতার।
আমরা কলিযুগে জন্মগ্রহণ করেছি। শাস্ত্রের বর্ণনা অনুসারে কলিযুগের শেষে ভগবান কল্কি অবতাররূপে আবির্ভূত হয়ে আবার পৃথিবীতে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন করে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু যেহেতু কল্কি অবতার এখনো আবির্ভূত হননি, তাই এই অবতার নিয়ে চলছে নানারকম কল্পনাবিলাস। ভুরি ভুরি ভুঁইফোড় ব্যক্তি কল্কি অবতার নামে আত্মপ্রকাশ করছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনুগামীরা তাদের দল ভারি করার জন্য বিভিন্ন রূপক ও কাল্পনিক যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে শাস্ত্রীয় প্রশাণের অপব্যাখ্যা করছে।
নামে-বেনামে বিভিন্ন বই ছাপিয়ে কল্কি অবতার সম্বন্ধে মানুষকে ভুল তথ্য প্রদান করছে। আর তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ছে শাস্ত্রজ্ঞান সম্বন্ধে অজ্ঞ সাধারণ মানুষ। যখনই কেউ বলছেন, “তিনি ভগবানের অবতার”-সাধারণ মানুষ এর সত্যতা বিচার না করেই তার পেছনেই ছুটছে। বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ।
ভারচুয়াল কমিউনিকেশন এবং দ্রুত কোনো সংবাদ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তথ্যপ্রযু্ক্তির জুড়ি নেই। ব্লগিং চ্যাটিং-এ নানা বিষয় নিয়ে চলে তমুল তর্ক-বিতর্ক। ব্লগ এবং গণমাধ্যমগুলোতে সামাজিক, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে যেমন চর্চা হয়, ঠিক তেমনি চর্চা হয় ধর্মীয় বিষয় নিয়েও। ধর্মীয় যেসব বিষয় নিয়ে এসকল গণমাধ্যমগুলোতে চর্চা হয়, তার মধ্যে কল্কি অবতার অন্যতম। তাই কল্কি অবতার আদৌ এসেছেন কি না, তা প্রমাণ করাই এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য।