অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার এর উপসর্গ কীভাবে দূর করা যায়? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
256 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (135,480 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (135,480 পয়েন্ট)
পানির অপর নাম জীবন।মানুষের দেহের শতকরা ৭০ ভাগই পানি দিয়ে গঠিত। আমাদের দিনে কম-বেশি আড়াই লিটার পানির প্রয়োজন হয়।তাই জীবন বাঁচাতে হলে পানি লাগবেই।কিন্তু পৃথিবীতে এমন কয়েকজন মানুষ রয়েছেন যাদের জন্য পানির অপর নাম ""অ্যালার্জি""।সত্যি বলছি তাদের পানিতে অ্যালার্জি আছে। এ রোগের নামই ""অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়া (Aquagenic urticaria)""।


অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার রক্তস্ফোট ;Healthline: Medical information and health advice you can trust.

অত্যন্ত বিরল এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত একশোরও কম। মেডিকেল জার্নালগুলো এই রোগের স্বীকৃতি দিয়েছে।আক্রান্ত রোগী পানির প্রতি অ্যালার্জিক, এমনকি নিজের কান্না বা ঘামের প্রতিও।প্রাপ্তবয়স্কদের দেহে এ রোগের উপসর্গ দেখা যায় তবে একদম কম বয়সে আক্রান্ত হবার নজিরও আছে।যেমন ধরা যাক ***১৮ মাস বয়সী আইভি অ্যাকারম্যান ***এর কথা। তাকে মাত্র পনেরো সেকেন্ড পানিতে রাখলেই তার দেহের এখানে-সেখানে দেখা যায় রক্তস্ফোট।


১৮ মাস বয়সী আইভি অ্যাকারম্যান Image:People.com | Celebrity News, Exclusives, Photos and Videos

অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়া আসলে একধরনের অ্যালার্জি। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক যখন পানির সংস্পর্শে আসে, তখন খুব দ্রুত তার দেহে রক্তস্ফোট বা লাল-লাল বিন্দু দেখা যায়। পানির তাপমাত্রা এই রক্তস্ফোট সৃষ্টিতে কোনো প্রভাব রাখে না।আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই জানান- রক্তস্ফোট উঠার সঙ্গে সঙ্গে তারা শরীরে চুলকানিও বোধ করেন।সাধারণত মেয়েরাই বেশি আক্রান্ত হয়। উপসর্গগুলো দেখা যায় বয়ঃসন্ধিকাল অথবা যৌবনের শেষ দিকে।

অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়া রোগের কথা প্রথম বর্ণনা করেন শেলী এবং রনসলি, ১৯৬৪ সনে।১৯৬৩ সালে এক পনেরো বছর বয়সী কিশোরী পানিতে স্কি করার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে।তার দেহে প্রথমে দেখা যায় রক্তস্ফোট এবং পরবর্তীতে ক্ষত।এ রোগটি খুবই বিরল।

যেহেতু এ রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির সংখ্যা খুবই কম তাই এ রোগ সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি।তবে কারো কারো মতে, পানিতে যোগ করা** ক্লোরিনই** এর কারণ। কেউ কেউ আবার খোদ পানিকেই এই অ্যালার্জির কারণ বলে উল্লেখ করে থাকেন।একই পরিবারের একাধিক সদস্যের মাঝে অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার উপস্থিতি সাধারণত লক্ষ্য করা যায় না।তবে কয়েকটা ক্ষেত্রে দেখাও গিয়েছে।একটা বিশেষ পরিবারে একাধিক সদস্য এই রোগে আক্রান্ত,সঙ্গে আরও একটা জেনেটিক রোগ আছে তাদের। সেটি হলো **বার্নার্ড-সলিয়ের সিন্ড্রোম**।এ রোগটি **শরীরে রক্ত-তঞ্চন জনিত সমস্যার জন্ম দেয়।**এ কারণে অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার সঙ্গে যে বংশগত বৈশিষ্ট্যের কোনো সম্পর্ক নেই- তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার উপসর্গঃ

প্রথমেই ত্বকে রক্তস্ফোট জন্ম নেয়, সেই সঙ্গে শুরু হয় চুলকানি এবং ব্যথা।ঘাড়, হাত এবং বুকের উপরের দিকেই মূলত ফুটে উঠে লাল-লাল রক্তস্ফোটগুলো।তবে শরীরের যেকোন অংশেই ওগুলো দেখা যেতে পারে।

এ রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির পানির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবার মিনিটখানেকের মাঝেই আরো যে-যে উপসর্গ দেখা যেতে পারে

১.ত্বক লাল হয়ে যাওয়া

২.জ্বলা-পোড়ার অনুভূতি

৩.ক্ষত

৪.ফুলে ওঠা

৫.প্রদাহ

তবে কিছু ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর উপসর্গ প্রথম দেখা দেয় পানি পান করার পর।তার মদ্ধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উপসর্গ হলোঃ

১.মুখের চারপাশে লাল দাগ

২.গিলতে সমস্যা

৩.শ্বাসকষ্ট

৪.শ্বাসের সঙ্গে শোঁশোঁ শব্দ হওয়া


দেহে লাল-লাল রক্তস্ফোট

সাধারণত শরীর থেকে পানি মুছে ফেললে, অথবা পানি থেকে দূরে সরে গেলে, আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মাঝে সব উপসর্গ দূর হয়ে যায়।গোসল করলে অথবা বৃষ্টিতে ভিজলে,সাঁতার কাটলে অথবা শরীরে পানি ঢাললে,ঘাম আসলে বা কান্না করলে এ রোগের উপসর্গগুলো দেখা যায় শরীরে।

এখন পর্যন্ত অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার কোনো চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি। তবে উপসর্গগুলো দূর করার জন্য নানা ওষুধের সাহায্য নেওয়া হয়।

###যেকোনো ধরনের অ্যালার্জির জন্য** অ্যান্টি-হিস্টামিনের** কোনো বিকল্প নেই।যেহেতু অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার একধরণের অ্যালার্জি;তাই এ রোগের উপসর্গগুলো দূর করতে অ্যান্টি-হিস্টামিন ব্যবহার করা হয়।

###এ অ্যালার্জি থেকে বাঁচতে **পেট্রোলিয়াম-সমৃদ্ধ ক্রিম** ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।কারণ এই ক্রিমগুলো ত্বক এবং পানির মাঝে একধরনের বাধা হিসেবে কাজ করে। তাই এ ক্রিম ব্যবহার করে পানির সংস্পর্শে আসতে হতে পারে এমন যেকোনো কাজ করা যেতে পারে।

###উপসর্গ অত্যন্ত প্রবল হলে রোগীর জীবন পর্যন্ত বিপন্ন হতে পারে। সেক্ষেত্রে **এপিনেফ্রিন বা অ্যাড্রেনালিনের** ব্যবহার করা হয় ।**এপিপেন**-এ থাকে সেই জীবনদায়ী ওষুধ এপিনেফ্রিন বা অ্যাড্রেনালিন যা দ্বারা রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।

এছাড়া আরো দুটি উপায় রয়েছে যা কিছু অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির উপসর্গ উপশমে এনেছে।সেগুলো হলো ফটো-থেরাপি এবং ওমালিযুমাব

###ফটো-থেরাপিঃ কিছু কিছু কেসে, আলট্রা-ভায়োলেট রশ্মির ব্যবহারে রোগীদের উপসর্গ কমে গিয়েছে বলে জানা যায়।

###ওমালিযুমাবঃবিশেষ এই ওষুধটি হাঁপানিতে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করে। বেশ কিছু অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়ার রোগীর ক্ষেত্রেও উপশম এনে দিয়েছে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 122 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 216 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 210 বার দেখা হয়েছে
20 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 328 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 133 বার দেখা হয়েছে
19 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)

10,729 টি প্রশ্ন

18,374 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

241,965 জন সদস্য

58 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 57 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. ShaunaTws105

    100 পয়েন্ট

  2. Phoebe904307

    100 পয়েন্ট

  3. EliLamm47807

    100 পয়েন্ট

  4. EdisonLin46

    100 পয়েন্ট

  5. LatonyaShrad

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য প্রাণী বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া গরম শীতকাল কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক শব্দ ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম হরমোন বিড়াল কান্না
...