আমাদের দেশে কাকের প্রজনন ঋতু হয়ে থাকে সাধারণত বর্ষার শুরু থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত। আবার কোকিলের প্রজনন ঋতু হয়ে থাকে মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। এখানে দেখুন কোকিলের প্রজনন ঋতুর সাথে কাকের প্রজনন ঋতুর ওভারল্যাপ হচ্ছে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু মাসে কাক ও কোকিলের উভয়েরই প্রজনন ঋতু থাকছে।
কোকিল বুদ্ধি করে কাকের বাসায় ডিম পাড়ে ঠিক এই কারণে যে কাকের ডিম সংখ্যা একাধিক হবার সম্ভাবনা থাকে। কোকিলের ডিমের প্যাটার্ন ও রঙ কাকের ডিমের মতই হয়। গবেষকরা দেখেছেন কোকিলের মত পরজীবী পাখিদের ডিমের রঙও হয় অন্যান্য পাখিদের ডিমের অনুকরণে। যেমন বাজ কোকিলের ডিমের রঙ ও আকৃতি হয় হুবহু সাতভাই ছাতারে (Jungle Babbler) পাখিদের ডিমের মত। ডিমের রঙ অনুকরণের এই বিবর্তন ঘটেছে মূলত যাতে পোষক পাখিরা এদের ডিমকে না সনাক্ত করতে পারে।
সাধারণত কোকিলের ডিম কাকের ডিমের তুলনায় একটু ছোট হয়ে থাকে। তবে কাক এটি মোটেও ধরতে পারেনা। আর ডিমের আকৃতি ছোট হওয়ায় এটি ফুটতেও অনেক কম সময় লাগে। তাই সবার আগেই কোকিলের ডিমটিই ফুটে।
কাক এর প্রজনন ঋতুতে সাধারণত গড়পড়তায় পাঁচটি ডিম পাড়ে। প্রতিদিন একটি করে ডিম পেড়ে থাকে। তার মানে পাঁচ দিনে পাঁচটি ডিম। আর ঠিক এ সময়ের মধ্যেই কোকিল কাকের বাসায় ডিম পাড়ে। যদি কোকিল এর একদিন আগেও ডিম পেড়ে থাকে তাহলে কোকিলের ডিম কাক চিনে ফেলে ও বাসা থেকে ফেলে দেয়। আর পাঁচদিন শেষ হবার পর ডিম পাড়লে ডিমটি পর্যাপ্ত যত্ন পায় না। তাই কাক ডিম পাড়া শুরু করার এক থেকে পাঁচদিনের মধ্যেই কোকিলরা কাকের বাসায় ডিম পেড়ে থাকে।