জি হ্যাঁ! সাপের কান আছে। মানুষের মতই সাপের সুগঠিত কান আছে।মানুষের কান প্রধান তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত।এগুলো হলো -বহিঃকর্ণ,মধ্যকর্ণ, অন্তঃকর্ণ। বহিঃকর্ণ কানের লতি বা পিনা,ছিদ্রপথ, কানের পর্দা বা ইয়ারড্রাম (টিমপেনিক পর্দা) নিয়ে গঠিত।
অন্তঃকর্ণের-গঠন
একারণে আমরা মানুষের কান বাহির থেকেই দেখতে পাই। কিন্তু সাপের বহিঃকর্ণ ও মধ্যকর্ণ নেই তাই এদের কান বাহির থেকে দেখা যায়না। সাপের শুধু অন্তঃকর্ণ আছে।অন্তঃকর্ণ চোখ ও চোয়ালের পেছনে থাকে।
সাপের অন্তঃকর্ণের বিশেষ গঠন
মানুষের অন্তঃকর্ণ তরল পদার্থ পূর্ণ একটি থলি নিয়ে গঠিত এতে ককলিয়া নামক প্যাঁচানো নল থাকে। কিন্তু সাপের অন্তঃকর্ণ বায়ুপূর্ণ থলি দিয়ে গঠিত। অন্তঃকর্ণের সাথে একটি সরু, হালকা হাড় যুক্ত থাকে,এই হাড় চোয়ালের হাড়ের সাথে সংযোগ রক্ষা করে।
সাপের-কান
সাপ কি জিহ্বা দিয়ে শোনে?
জি না! সাপ জিহ্বা দিয়ে শোনেনা। মানুষের ক্ষেত্রে শব্দ তরঙ্গ কর্ণ ছিদ্র দিয়ে কানের পর্দা বা ইয়ারড্রাম এ
আঘাত করে ফলে কম্পন সৃষ্টি হয়, এই কম্পন মধ্যকর্ণের অস্থির মাধ্যমে অন্তঃকর্ণ তে যায় ফলে আমরা
শব্দ শুনতে পাই।
শোনার পদ্ধতি
কিন্তু সাপের বহিঃকর্ণ ও মধ্যকর্ণ না থাকার জন্যে এরা মানুষের মত শুনতে পায়না। এদের মানুষের মতই সুগঠিত অন্তঃকর্ণ আছে যা দুই চোয়ালের সংযোগ স্থলে উপস্থিত একটি সুক্ষ্ণ হাড়ের সাথে যুক্ত।এই হাড় মানুষের মধ্য কর্ণের হাড়ের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
সাপ যখন মাটির উপর বা অন্যকিছুর উপর দিয়ে চলে তখন ঐ বস্তু বা মাটি হতে আগত শব্দ তরঙ্গ এদের চোয়ালের হাড়ে কম্পন সৃষ্টি করে, এই কম্পন সূক্ষ্ম হাড় হয়ে অন্তঃকর্ণে যায়। এর পর অডিটরি স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে যায় ফলে সাপ শুনতে পায়। সাপ মাটি থেকে মাথা উচু করলে আর শুনতে পায় না। একারণে সাপ চলার পথে বারবার মাটিতে মাথা ঠেকায়।
সাপ বাতাসে ভেসে বেড়ানো শব্দ সরাসরি শুনতে পায় না।এরা শুধু মাটি থেকে উৎপন্ন শব্দ চোয়ালের হাড় দিয়ে সংগ্রহ করে এবং শোনে। সাপ যদি শুনতে নাই পেত তাহলে শোনার জন্যে অডিটরি স্নায়ু কেন সাপের মাথায় আছে?(সাপ কি জিহ্বা দিয়ে শোনে?)
সাপ বারবার জিহ্বা বের করে কেন?
এবার নিশ্চয় প্রশ করবেন,সাপ জিহ্বা দিয়ে না শুনলে বারবার জিহ্বা বের করে কেন? সাপ বারবার জিহ্বা বের করে ঘ্রাণ নেয়ার জন্য।সাপের জিহ্বা বাতাস থেকে ঘ্রাণ সংগ্রহ করে তার জ্যাকবসন অঙ্গে ঠেকায়,এই
জ্যাকবসন অঙ্গ ঘ্রাণ বিশ্লেষণ করে। এদের বিশ্লেষণ ক্ষমতা এতই নিখুঁত যে, একসাথে অনেক প্রাণী থাকলেও ঘ্রাণ পরীক্ষা করে নির্দিষ্ট প্রাণিকে শনাক্ত করতে পারে।
Reference:
এই লেখা ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় এর নিউরোবায়োলজিস্ট বিভাগের গবেষক ব্রুস ইয়ং এর গবেষণা পত্র থেকে