কম বয়সে চুল পাকা মানে অস্বস্তিকর একটি বিষয়। লোকে বলতে শুরু করে—কুড়িতেই বুড়ি! কারণ কারও কারও কুড়ি বছর বা তার চেয়ে কম বয়সেই মাথায় চুল পেকে যেতে শুরু করে। কিন্তু কেন? গবেষকেরা বলছেন এর কোনো সঠিক কারণ তাঁরা বের করতে পারেননি এখনো। তবে জিনগত কারণেই কম বয়সে চুল পাকে।
একটি-দুইটি চুল পাকলে আবার অনেকে তা তুলে ফেলেন। এ নিয়েও অনেক কথার প্রচলন আছে। হয়তো কাউকে না কাউকে বলতে শুনেছেন, মাথায় একটা বা দুইটি চুল পাকতে শুরু করলে তা তুলে ফেলা উচিত নয়। কারণ, এতে ওই স্থানে দুটি চুল উঠতে পারে। মার্কিন বিশেষজ্ঞ রবার্ট বরিন বলছেন, এটা শুধু প্রচলিত কথা। মাথার পাকা চুল তুলে ফেলতে সেখান থেকে দুটো গজায় না। তবে পাকা চুল তোলাও ঠিক নয়।
যখন কেউ পাকা চুল তুলে ফেলেন তখনই ক্ষতিই হয়। এতে চুলের মূল থেকে যেভাবে চুল গজায় তা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায়। সাদা চুল হচ্ছে রঙহীন চুল। আমাদের যখন বয়স বাড়ে তখন চুলের রঙের জন্য দায়ী রঞ্জক পদার্থ মেলানিনের সক্রিয়তা কমতে শুরু করে। এতে চুলের রং হারিয়ে সাদা হয়ে যায়। জীবনের একটা পর্যায়ে এসে সবারই চুল পাকতে শুরু করে।
অনেকের ২০ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সেও চুল পাকতে দেখা যায়। একে বলা হয় চুলের অকালপক্বতা। গবেষকেরা বলছেন, কম বয়সে চুল পাকার পেছনে জিনগত প্রভাবের পাশাপাশি, অস্থিরতা, ধূমপান, দূষণ, মানসিক চাপ প্রভৃতি বিষয় কাজ করে।
চুল পাকলে তা রং করার জন্য নিয়মিত রাসায়নিক ব্যবহার করলে চুলের ক্ষতি হয়। স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য পুষ্টিমানসম্পন্ন খাবার অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাকৃতিকভাবে চুল পাকা বন্ধ করার উপায়:
আমলকী চুল পাকা সামলায়: আমলকীতে আছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। খাবারে আমলকী রাখলে চুল পাকা বন্ধ হতে পারে। এ ছাড়া মাথায় আমলকীর পেস্ট ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে উপকার পাওয়া যায়।
মেহেদিতে প্রাকৃতিক রং আসে: চুল পাকলে মেহেদির ব্যবহার অনেকেই করেন। এটি প্রাকৃতিক রং এনে দিতে পারে। মেহেদির সঙ্গে কফি পাউডার, একটু দই ও লেবুর রস যুক্ত করে মাথায় লাগিয়ে দুই-দিন ঘণ্টা রাখলে উপকার হয়। পরে পানি ও শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলতে হয়।
লেবুর রস ও বাদামের তেল: বাদামের তেলের সঙ্গে লেবুর রসে মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। এতে চুল পাকার হার কমবে।
ব্ল্যাক টি: কম বয়সে চুল পাকা ঠেকাতে ব্ল্যাক টি দারুণ কার্যকর। চায়ের পাতা সিদ্ধ করে তা ঠান্ডা করতে হবে। মাথায় এটি ঘণ্টাখানেক রাখতে হবে। পরে শ্যাম্পু ছাড়া ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
সরিষার তেল: ঈষৎ উষ্ণ সরিষা বা নারকেল তেল নিয়মিত মাথায় ম্যাসাজ করলে চুল পাকা কমতে পারে।
বেশি পানি পান: স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। শরীরের বিষাক্ত পদার্থ স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি চুল পাকার জন্য কারণ হতে পারে।
ফাস্ট ফুডে না: ফাস্ট ফুড খেলে চুল পরতে পারে ও চুল সাদা হয়ে যেতে পারে। যতটা সম্ভব এ ধরনের খাবার এড়িয়ে যেতে হবে।
সূত্র: জিনিউজ