সাধারণত নারীদের থেকে পুরুষদের কালার ব্লাইন্ড হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। আর পুরো ব্যাপারটাই সেক্স লিঙ্কড জিনের ইনহেরিটেন্সের কারণে হয়ে থাকে।
তাহলে সেক্স লিঙ্কড জিনের ইনহেরিটেন্স এই ব্যাপারটা কী?
জেনেটিক সায়েন্সের ভাষায়, প্রত্যেক পুরুষের দেহে একটি X ক্রোমোজোমের সঙ্গে অবশ্যই একটি Y ক্রোমোজোম থাকে । সুতরাং বলা যায় যে, পুরুষের দেহে XY ধরনের ক্রোমোজোম থাকে। আবার প্রত্যেক নারীর দেহে সব সময়েই দুটি X ক্রোমোজোম থাকে অর্থাৎ নারীদের ক্ষেত্রে ক্রোমোজোমের গঠন হচ্ছে XX । আর জেনেটিক সায়েন্সের মতে, লাল আর সবুজ রঙের রিসেপ্টরের জন্য যেই জিন নারী বা পুরুষ উভয়ের জন্যই রয়েছে সেটির অবস্থান X ক্রোমোজোমে। কালার ব্লাইন্ড হওয়ার পেছনে X ক্রোমোজোমের এই রিসেপ্টর জিনকেই দায়ী করা যায়। যেহেতু পুরুষের দেহে একটি মাত্র X ক্রোমোজোম থাকে, তাই কোনোভাবে যদি এই X ক্রোমোজোমের জেনেটিক কোডে কোনোরকম ব্যাঘাত ঘটে তাহলে X ক্রোমোজোমটির আর কোনো ব্যাকআপ থাকে না। আর এই ত্রুটিপূর্ণ জেনেটিক কোডের কারণেই পুরুষদের মধ্যে লাল-সবুজ রঙের বর্ণান্ধতা বেশি পরিলক্ষিত হয়। অপরদিকে নারীদেহে দুইটি X ক্রোমোজোম থাকায় একটি X ক্রোমোজোমের জেনেটিক ব্যাঘাত ঘটলেও অন্য X ক্রোমোজোমটি ব্যাকআপ দিতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে দুইটি X ক্রোমোজোমেরই জেনেটিক কোডে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা কম। তাই এই ক্ষেত্রে কালার ব্লাইন্ড এর সংখ্যাটাও তুলনামুলক ভাবে কম। আর এটাই কালার ব্লাইন্ড হওয়ার জেনেটিক কারণ।
বংশগত কারণেও কিন্তু কালার ব্লাইন্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন ধরুন, কোনো বাবা-মা উভয়ই কালার ব্লাইন্ড। উদাহরণের কল্পিত বাবা-মায়ের যদি কোনো মেয়ে সন্তান থাকে তাহলে মেয়েটির কালার ব্লাইন্ড হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। কারণ মেয়েটির বাবা-মা উভয়ের X ক্রোমোজোমের জেনেটিক কোডে ব্যাঘাত ঘটার ফলে কালার রিসেপ্টর অনুপস্থিত। আর মেয়েটির ক্রোমোজোমের গঠন যেহেতু তার বাবা এবং মায়ের থেকে একটি করে X ক্রোমোজোম নিয়ে গঠিত (XX) , সেক্ষেত্রে মেয়েটির ক্রোমোজোমের
গঠনেও কালার রিসেপ্টর অনুপস্থিত। তাই মেয়েটির কালার ব্লাইন্ড হওয়ার সম্ভাবনাও শতভাগ। এই X ক্রোমোজোমের লেনদেনের ফলেই কিন্তু বংশগত কারণে কালার ব্লাইন্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।