রাশিক আজমাইন Moderator:
সর্বপ্রথম রোগীর আশেপাশে ভিড় করতে দেওয়া যাবে না ৷ রোগী যেন শান্ত থাকে ৷ মানুষ উল্টাপাল্টা বকলে ভয়ার্ত রোগী আরও ভীত হয়ে বিষক্রিয়া শুরুর আগেই হার্টফেইল করে মরে যাবে ৷
সাপ চিনতে না পারলে:
রোগীকে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, সাপ বিষধর হলে প্রতিবিষ দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে ৷ যদি সাপ বিষধর হয় এবং পায়ে ছোবল দেয় তবে রোগী বেশি হাঁটলে রক্ত দ্রুত প্রবাহিত হবে এবং বিষ দ্রুত ছড়াবে ৷ তাই যেহেতু সাপ চিনতে পারা যায়নি তাই বিষধর ধরে পদক্ষেপ নিতে হবে ৷
সাপ চিনতে পারলে:
নির্বিষ সাপের (দাঁড়াশ, দুধরাজ, পাতি ঘরগিন্নি, জল ঢোঁড়া, অজগর, পাতি বালুবোরা ইত্যাদি) কামড়ে ভয়ের কিছু নেই যেহেতু বিষই নেই ৷ তবুও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে ক্ষতের চিকিৎসার জন্য যেন ক্ষত সংক্রমিত না হয় ৷ না নিয়ে গেলেও সমস্যা নেই ৷
মৃদু বিষধর সাপের (লাউডগা, কালনাগিনী, কুকুরমুখো নোনাবোরা, ওরিয়েন্টাল ঘরগিন্নি) কামড়ে বিষের প্রভাবে জ্বালাপোড়া করবে, ব্যথা হবে, ফুলে উঠবে কিন্তু মৃত্যু হবে না ৷ একটা ভীমরুল কামড়ালে যা হয় ৷ মৃত্যু না হলেও সাপভেদে মৃদু বিষধর সাপের বিষেও সামান্য জটিলতা আসতে পারে তাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ভালো ৷
বিষধর সাপের (গোখরা, শঙ্খচূড়, শঙ্খিনী, পাতি কালাচ, সিন্ধুকালাচ, কৃষ্ণকালাচ) কামড়ে যেখানে কামড়়েছে তার উপর চওড়া ও লম্বা কাপড় যেমন শাড়ির পাড় বা সবচেয়ে ভালো হয় ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে দেওয়া ৷ ব্যথা হলে কনুই বা হাঁটুতে যে ব্যান্ডেজগুলো পেঁচিয়ে বাঁধা হয় সেইগুলো ৷ চাপ ততটুকুই থাকবে যতটুকু ব্যথার জন্য বাঁধার সময় দেওয়া হয় ৷ খুব বেশি শক্ত বাঁধন দিলে রক্ত প্রবাহ আটকে পচন ধরে যাবে ৷ রক্ত প্রবাহের গতি কমাতে হবে যেন সময় পাওয়া যায় ৷ ভয় লাগলে বাঁধার দরকার নেই ৷ যে অঙ্গে কামড়েছে সেটা যত কম পারা যায় তত কম নড়িয়ে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে ৷
চন্দ্রবোড়া (Russell's Viper) এর ছোবলে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ এদের বিষ হেমোটক্সিন তাই রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না, লোহিত কণিকা নষ্ট হয়ে যায় ৷ রক্তনালী ফেটে গিয়ে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়ে চামড়ার নিচে জমা হয়, উপর থেকে লাল লাল দাগ দেখা যায় ৷ বেশি দেরি হলে এই সব লক্ষণ দেখা দেবে ৷ চন্দ্রবোড়া সবসময় মৃত্যু ঘটানোর মতো যথেষ্ট বিষ দেয় না তাই হয়তো মৃত্যু হবে না কিন্তু বিষে উপর্যুক্ত লক্ষণ দেখা দেবে ৷ সাথে কিডনিতে বিষের প্রভাবে রক্ত শুদ্ধিকরণ ব্যহত হয়ে প্রস্রাবে সমস্যা দেখা দেবে ৷ যেখানে কামড়েছে ওখানে ফোস্কা পড়বে, পচন ধরবে ৷ এর চেয়ে যেন মরে গেলেই ভালো হতো ! তাই চন্দ্রবোড়া ছোবল দিলে সাত-পাঁচ ভাবা বাদ দিয়ে যত দ্রুত পারা যায় সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে ৷ রক্তে বিষ প্রভাব ফেলে তাই কোনোভাবেই বাঁধন দেওয়া যাবে না ৷