আমাদেরকে ড্রাগসের বেসিক কনসেপ্ট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা রাখতে হবে। তা হলো: ADME. A= Absorption, D= Distribution,
M= Metabolism, E= Excretion, এই বেসিক কনসেপ্ট যখন আমরা বুঝে যাব তখন ঔষধের মেকানিজম সম্পর্কে আমাদের একটা ভালো ধারণা এসে যাবে। তো প্রথমে ড্রাগস এডমিনিস্ট্রেশন, অর্থাৎ ড্রাগস আমাদের শরীরে কিভাবে প্রবেশ করে অথবা আমরা কিভাবে ড্রাগস গ্রহণ করি? আমরা বিভিন্নভাবে ড্রাগস গ্রহণ করি, যেমন আমরা ড্রাগস খায়, ইনজেকশনের মাধ্যমে নিই, শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে নিই, কিংবা স্কিনের উপর এপ্লাই করি ইত্যাদি। বাট মোস্টলি আমরা ড্রাগস খায় বা জলের সঙ্গে পান করি। আমরা যখন ড্রাগস খায় তা আমাদের মুখের ভেতর দিয়ে পাকস্থলিতে পৌঁছাচ্ছে আর পাকস্থলীতে রয়েছে হাইড্রোক্লোরিক এসিড, এই এসিডে ঔষধের এফেক্টিভনেস নষ্ট হয়ে যায় বা কমে যায়। যেমম ইনসুলিন, হাইড্রোক্লোরিক এসিডের কারণে ঔষধের কার্যকারিতা কমে যায়, যেহেতু ইনসুলিন একটি প্রোটিন। এছাড়া কিছুকিছু ঔষধ আছে যা আমাদের পাকস্থলিতে ক্ষতের সৃস্টি করতে পারে অথবা আগে থেকেই পাকস্থলিতে ক্ষত বা আলসার থাকলে তা কয়েকগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। আর যেসব ড্রাগস এধরণের ক্ষতি সাধন করে তা আমরা ক্যাপস্যুল আকারে গ্রহণ করে থাকি। তো পাকস্থলী থেকে ড্রাগস আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রে বা স্মল ইনটাস্টিনে প্রবেশ করে এবং এরিমধ্যে ড্রাগস দ্রবীভূত হয়।
ড্রাগস Absorption: ড্রাগস Absorption হওয়া বা দ্রবীভূত হওয়া। আমাদের শরীরে ড্রাগস শোষিত হওয়ার পূর্বশর্ত হলো ড্রাগস দ্রবীভূত হওয়া। আর ড্রাগস দ্রবীভূত হতে পারলেই ড্রাগস ছোটছোট কণায় বিভক্ত হয়ে সহজেই ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রাচীর ভেদ করে আমাদের ব্লাডস্টিমে পৌঁছাতে পারে। যেভাবেই আমরা ড্রাগস নিই না কেন আল্টিমেট লক্ষ্য হচ্ছে ড্রাগস আমাদের রক্তে পৌঁছানো, কারণ রক্তের মাধ্যমেই শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারবে এবং সেসব অঙ্গে গিয়ে ড্রাগস তার এফেক্ট ফেলতে পারবে।
ড্রাগ Metabolism. ড্রাগ ম্যাটাবলিজমে যায় হয়: ব্লাডের মাধ্যমে ড্রাগস আমাদের লিভার বা যকৃতে পৌঁছাচ্ছে। আমরা জানি যকৃতে রয়েছে বিভিন্নরকম ডাইজেস্টিভ এনজাইমস। এনজাইমস হলো একরকম প্রোটিন যা বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় বিক্রিয়ায় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। এসব এনজাইমের কার্যকারিতায় ড্রাগসের পরিপাক হয় এবং সে পরিপাক-কৃত ড্রগস আবার আমাদের ব্লাডস্টিমের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছাতে পারে। পরিপাক-কৃত ড্রাগসের কার্যকারিতা অনেক সময় হ্রাস পায় আবার কোনোকোনো ড্রাগস আছে পরিপাক-কৃত হওয়ার ফলে এর কার্যকারিতা বহুগুণে বেড়ে যায় মানে এই ড্রাগসএর কণা গুলি, যদি এককভাবে চিন্তা করেন তবে এতটা এক্টিভ না কিন্তু সার্বিকভাবে পুরো ড্রাগসটার কার্যকারিতা অনেকগুণে বেড়ে যায়, যখন এরা সঠিকভাবে পরিপাককৃত হয়। যাইহোক, ব্যাপার হচ্ছে ড্রাগস আমাদের শরীরে কোথায় কোথায় এবং কিভাবে কাজ করবে তা আসলে কিভাবে নির্ধারিত হয়?
মানে ড্রাগস কি করে বুঝে আমাদের শরীরের কোন অংশে কোন অরগ্যানে তাকে সাপ্লাই দিতে হবে? ড্রাগস দুটি মাধ্যমে কাজ করে। প্রথমত ড্রাগস এনজাইমের কার্যকারিতার পরিবর্তন ঘটায়। কখনোকখনো অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয় আবার কখনোকখনো এনজাইমের কার্যকারিতাকে কিছুটা প্রতিহত করে। আর দ্বিতীয় মাধ্যমটা হচ্ছে - ড্রাগস রিসেপ্টরের সঙ্গে কাজ করে। আর রিসেপ্টর হলো আমাদের কোষে অবস্থিত গ্রাহকযন্ত্রের মতো, এই গ্রাহকযন্ত্রের সঙ্গে ড্রাগস বাইন্ড করে কোষের কার্যকারিতা চেইঞ্জ করে দেয়, যে চেইঞ্জটা আমাদের রোগ নিরাময়ের জন্য খুব দরকার ছিলো।
উল্লেখ, প্রতিটি ড্রাগসের জন্যই নির্দিষ্ট কিছু অরগ্যান বা টিস্যুতে নির্দিষ্ট কিছু রিসেপ্টর থাকে, ওই রিসেপ্টর ব্যতীত অন্যকোনো রিসেপ্টরের সঙ্গে ড্রাগস বাইন্ড হয় না।
আর এই কারণেই ড্রাগস আমাদের পুরো শরীরে ভ্রমণ করে আসলেও সে কাজ করবে শুধুমাত্র সেই নির্দিষ্ট কিছু টিস্যু বা অরগ্যানের উপর। এইভাবে আমরা ড্রাগসের থেকে কিছু নির্দিষ্ট এফেক্ট পেতে পারি।
সর্বশেষ ড্রাগ Excretion: মানে ড্রাগস তার নির্দিষ্ট বা প্রত্যাশিত কার্য সম্পাদন করার পরে সে আমাদের শরীরে হয়ে যায় অপ্রত্যাশিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত, কারণ সেসময় ড্রাগসটা টকসিন্স সাব্জট্যান্ট হিসেবে কাজ করে, সেই টকসিন্স সাব্জসট্যান্টকে আমাদের শরীর থেকে বের করে দেয়ার জন্য, কিডনি থেকে যেভাবে ইউরিন যেভাবে এক্সক্র‍্যাশন হয় ঠিক একইভাবে ইউরিনের সাথে ড্রাগস আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। আর এভাবেই ড্রাগসের পুরো একটি সার্কেল আমাদের শরীরে শেষ হয়।।