পলিমার রসায়নে একই পদার্থের অসংখ্য অণু বা একাধিক পদার্থের অসংখ্য অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বৃহৎ অণু গঠন করার প্রক্রিয়াকে পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলে। পলিমারকরন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী বিক্রিয়ককে মনোমার এবং উৎপন্ন বৃহৎ অণুকে পলিমার বলে।
বিক্রিয়ক এর কার্যকরী মূলক এবং স্টেরিক প্রভাবের উপর নির্ভর করে পলিমারকরণ বিক্রিয়া বিভিন্ন বিক্রিয়া কৌশল এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। সাধারণ পলিমারকরণ বিক্রিয়া তে অ্যালকিন সমূহ মুক্ত মূলক বিক্রিয়া কৌশল অর্থাৎ ফ্রী-রেডিক্যাল মেকানিজম অনুসারে পলিমার গঠন করে; অপরদিকে যেসব বিক্রিয়া তে কার্বনিল মূলক এর প্রতিস্থাপন এর প্রয়োজন হয়, তারা অধিকতর জটিল সংশ্লেষণ এর মাধ্যমে পলিমার গঠন করে। অ্যালকেন সমূহ শুধুমাত্র শক্তিশালী অ্যাসিড এর উপস্থিতি তে পলিমার গঠন করে।
যেহেতু অ্যালকিন সমূহ সাধারণ পলিমারকরণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়, তারা ফ্রী-রেডিক্যাল মেকানিজম অনুসারে অনেক প্রয়োজনীয় যৌগ যেমন পলিইথিলিন এবং পলিভাইনাল ক্লোরাইড (পিভিসি) তৈরি করে, যা বাণিজ্যিক পণ্য যেমন পাইপিং, ইনসুলেসন, প্যাকেজিং ইত্যাদি উৎপাদন প্রক্রিয়া তে প্রয়োজনীয়তার কারণে প্রতি বছর অধিক পরিমাণে প্রস্তুত করা হয়। সাধারণত, যে সব পলিমারে একই মনোমার ইউনিট পরপর যুক্ত হয়ে দীর্ঘ শিকল অথবা কাঠামো গঠন করে তাদের ''হোমোপলিমার'' বলা হয় যেমন পিভিসি, অপরদিকে যখন একাধিক মনোমার যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করে তখন তাদের ''কো-পলিমার'' বলা হয়।
অন্যান্য মনোমার ইউনিট, যেমন ফরমালডিহাইড হাইড্রেটস অথবা সরল অ্যালডিহাইড, অল্প তাপমাত্রায় পলিমারাইজ হয়ে ট্রাইমার গঠন করে যা ৩টি মনোমার ইউনিট দ্বারা গঠিত, যা অধিকতর বিক্রিয়ার মাধ্যমে টেট্রামার অথবা চার মনোমার ইউনিট যৌগ গঠন করে। অধিকতর যৌগ সমূহ কে অলিগোমার বলা হয়ে থাকে। সাধারণত ফরমালডিহাইড খুবই সক্রিয় ইলেক্ট্রোফাইল যা হেমিঅ্যাসিটাল ইন্টারমিডিইয়েটের নিউক্লিওফিলিক সংযোজন সমর্থন করে, যেটা সাধারণত স্বল্প-স্থায়ী এবং অস্থিতিশীল 'মধ্য-পর্যায়' যৌগ যা উপস্থিত অন্যান্য যৌগের সাথে বিক্রিয়া করে স্থায়ী পলিমারিক যৌগ গঠন করে।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া