হাইপার লুপ কী? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
483 বার দেখা হয়েছে
"প্রযুক্তি" বিভাগে করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

হাইপারলুপ হলো যাত্রী কিংবা মালামাল পরিবহনের জন্যে পরিকল্পিত এবং প্রস্তাবিত একটি পদ্ধতি। ইলন মাস্কের মালিকানাধীন দুটি প্রতিষ্ঠান ‘টেসলা’ এবং ‘স্পেসএক্স’-এর যৌথ উদ্যোগে প্রস্তাবিত একটি  ‘ওপেন-সোর্স ভ্যাকট্রেন’-এর নকশাকে বর্ণনা করতে গিয়ে শব্দটি প্রথম বার ব্যবহৃত হয়। ‘ভ্যাকট্রেন’ এর পূর্ণরূপ হলো ‘ভ্যাকুয়াম টিউব ট্রেন’। বায়ুশূন্য টিউব বা টানেলের মধ্য দিয়ে চৌম্বকীয় শক্তির সাহায্যে উচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেনকেই ‘ভ্যাকট্রেন’ বলা হয়। 

হাইপারলুপ মূলত একধরনের ভ্যাকট্রেন। হাইপারলুপ প্রযুক্তিতে নিম্ন বায়ুচাপ বিশিষ্ট একধরনের আবদ্ধ নল বা টিউবের সমন্বয়ে তৈরি সিস্টেমের মধ্য দিয়ে চলাচল করা যাবে। যাত্রীরা একধরনের পডের সাহায্যে হাইপারলুপ সিস্টেমে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাতায়াত করতে পারবেন। বায়ুচাপ কম থাকায় টানেলের মধ্য দিয়ে যাত্রী বা মালবাহী এসব পড কোনো ধরনের বাধা বা ঘর্ষণ ছাড়াই চলাচল করতে পারবে।


বিমানের সমান গতি বা হাইপারসনিক গতিতে মানুষ বা মালামাল পরিবহন করতে পারবে হাইপারলুপ প্রযুক্তি। জ্বালানীর দিক দিয়ে চিন্তা করলে প্রযুক্তিটি বর্তমানে ব্যবহৃত উচ্চ গতিসম্পন্ন রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার চাইতেও সাশ্রয়ী হবে। প্রযুক্তিটি যদি সত্যিই বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে এটি একটানা ১৫০০ কিলোমিটার বা ৯৩০ মাইল অনায়াসে পাড়ি দিতে পারবে। এই পরিমাণ দূরত্ব পাড়ি দিতে ট্রেন এবং এয়ারপ্লেনের তুলনায় হাইপারলুপে ভ্রমণের সময়ও অনেক কম লাগবে।      
 
হাইপারলুপ মূলত একটি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এর পরিকল্পনা করা হয়েছে ১৯৭২ সালে প্রস্তাবিত ভেরি হাই-স্পিড ট্রানজিট (ভিএইচএসটি) সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করে। সিস্টেমটিতে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন বা ম্যাগলেভ ট্রেনের সাথে লো প্রেশার ট্রানজিট টিউবের সমন্বয় নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ভিএইচএসটি-র মূল পরিকল্পনাকে আরো সম্প্রসারিত করে হাইপারলুপের নকশা প্রস্তাব করা হলেও এতে ভিএইচএসটি-র মতই টানেল এবং পড অথবা ক্যাপসুল ব্যবহার করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতের কথা বলা হচ্ছে।
 
হাইপারলুপের মাধ্যমে কত বেশি গতিতে ভ্রমণ করা সম্ভব?
 
হাইপারলুপকে স্বল্প দূরত্বের বিমান যাত্রার বিকল্প হিসেবে কল্পনা করা হচ্ছে। এই সিস্টেমটি হবে বর্তমান রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে দ্রুতগামী এবং বিমান যাত্রার তুলনায় ঝামেলাহীন। তবে হাইপারলুপে সর্বোচ্চ গতিতে চলাচল করা সম্ভব নয়। কারণ এই প্রযুক্তিতে চলাচলের সময় বাঁক নেয়ার ক্ষেত্রে মাধ্যাকর্ষণ বল অনেক বেশি অনুভূত হয়। ফলে সর্বোচ্চ গতিতে যাত্রী বা মালামাল পরিবহন করাটা সমস্যাজনক হয়ে দাঁড়ায়। তাই হাইপারলুপে যাত্রার জন্যে ঘণ্টায় ৭০০ মাইল গতিকে আদর্শ ধরে নেয়া হয়েছে। 
 
স্বল্প দূরত্বে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যাত্রার শুরু বা শেষে যাত্রীদের ওপর ত্বরণের বৃদ্ধি এবং হ্রাসের প্রভাব যাতে না পড়ে, সেটাও বিবেচনায় রাখতে হয়। বর্তমানে এই প্রযুক্তি নির্মাণে একাধিক প্রকল্পের অধীনে কাজ চলছে। এর মধ্যে দু’টি প্রকল্প সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক:

ইলন মাস্কের হাইপারলুপ যেভাবে কাজ করে:
 
গতিশীল যেকোনো যানবাহনের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঘর্ষণ। পড বা ক্যাপসুলের পৃষ্ঠতলের পাশাপাশি যেই পরিবেশের মধ্য দিয়ে পড চলাচল করবে, তার ওপরেও প্রভাব ফেলবে এই ঘর্ষণ। প্রচলিত চাকার পরিবর্তে পড চলাচলের জন্যে হাইপারলুপে এয়ার বিয়ারিংস ব্যবহার করা হবে। এর ফলে পডগুলি বতাসে ভাসমান থাকবে। তাড়িৎ চুম্বকীয় প্রযুক্তির ম্যাগলেভ ট্রেনের মতো অনেকটা একই পদ্ধতিতে কাজ করবে হাইপারলুপ। সাধারণত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযুক্তির কারণে ম্যাগলেভ ট্রেনের সাথে রেলপথের ঘর্ষণ হয় না। এভাবেই জাপানে প্রচলিত ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন ম্যাগলেভ ট্রেনের মতো ট্রেনগুলি উচ্চ গতিতে চলতে পারে। 
 
ইলন মাস্কের প্রকল্প ছাড়াও বর্তমানে 'ভার্জিন হাইপারলুপ ওয়ান' নামের একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এই হাইপারলুপে ম্যাগলেভ ট্রেনের মতোই প্যাসিভ ম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। অর্থাৎ যাত্রীবাহী ক্যাপসুলে ম্যাগনেট যুক্ত থাকবে, যা মূলত অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি ট্র্যাকের ওপরে চলাচল করবে। বর্তমানে ম্যাগলেভ প্রযুক্তি প্রয়োগের জন্য কপার কয়েল ট্র্যাকের প্রয়োজন হয়, যা বেশ ব্যয়সাধ্য। ইলন মাস্কের হাইপারলুপ লো প্রেশার টিউবের মাধ্যমে হাইপারলুপ প্রযুক্তিকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
 
যেভাবে কাজ করবে ভার্জিন হাইপারলুপ ওয়ান:
 
ভার্জিন হাইপারলুপ ওয়ান লস অ্যাঞ্জেলসের একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। পরিবহন ব্যবস্থাকে নতুন করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি একটি হাইপারলুপ ট্রেন তৈরির চেষ্টা করছে। ভার্জিন হাইপারলুপ সিস্টেম তৈরি হবে মাটির নিচে অবস্থিত টানেলের মাধ্যমে। এটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কাজ করে। ফলে চালকের ভুল বা আবহাওয়া বিপর্যয় সংক্রান্ত জটিলতার আশঙ্কা কম। পরিবেশবান্ধব এই প্রযুক্তিতে কার্বন নিঃসরণেরও কোনো সুযোগ নেই। এই প্রকল্পে লিনিয়ার ইলেক্ট্রিক মোটর, ম্যাগলেভ এবং ভ্যাকুয়াম পাম্পের মতো যেসব প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, তার মধ্যে অনেকগুলিই বেশ কয়েক বছর ধরে প্রযুক্তি বিশ্বে প্রচলিত। 
 
এই পরিবহন ব্যবস্থায় প্রথমে যাত্রী বা পণ্য হাইপারলুপ বাহনে তোলা হবে এবং লো প্রেশার টিউবে ইলেক্ট্রিক প্রোপালশনের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে এর গতি বৃদ্ধি করা হয়। বাহনগুলি ট্র্যাকের ওপরে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন ব্যবহার করে ভাসতে থাকে। 'ভার্জিন হাইপারলুপ ওয়ান' থেকে জানানো হয়েছে যে, হাইপারলুপে ভ্রমণ করার সময় যাত্রীদের মনে হবে তারা লিফট কিংবা যাত্রীবাহী প্লেনে অবস্থান করছেন। 
 
তথ্যসূত্র : City Touch

0 টি ভোট
করেছেন (1,140 পয়েন্ট)

 

হাইপার লুপ (Hyper loop) কী?

বর্তমান ক্রমবর্ধমান পৃথিবীতে সময় এর মূল্য অনেক।তবে আমরা আমাদের নিত্য দিনের একটি বিশেষ সময় শুধু এক স্থান হতে অন্য স্থানে পৌছাতে ব্যয় করে ফেলি। বহু বছর ধরে সাধারণত পরিবহনের ক্ষেত্রে মানুষ চারটি পন্থায় অবলম্বন করে থাকে।যেমন:বিমান,ট্রেন, অটো-মোবাইল এবং নৌকার সাহায্য।যার ফলে প্রচুর পরিমাণে সময় ব্যয় হয়।
আর সেই সমস্যা দূর করতেই ২০১২ সালে টেসলা এবং স্পেসএক্স এর প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক সর্বপ্রথম সকলের সামনে নিয়ে আসেন একটি কনসেপ্ট আর সেটিই হচ্ছে :-
"হাইপার লুপ (Hyper loop)"

হাইপার লুপ (Hyper loop) :-
মাস্কের মতে, এটি হচ্ছে ফিউচারিস্টিক হাই স্পিড ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম।যাতে একটি পড বা ভ্যাকুয়াম স্টিল এ করে খুব দ্রুত গতিতে এক স্থান হতে অন্য স্থানে পৌঁছানো সম্ভব।তার প্রাথমিক কনসেপ্ট অনুযায়ী নিম্নচাপের টিউবের মধ্যে লিনিয়ার ইন্ডাকশন মডেল এবং অক্ষীয় কম্প্রেসার ব্যবহার করে এয়ার বেরিং এর সাহায্যে এই সিস্টেমটি তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়।ইলন মাস্কের ধারণা অনুযায়ী যদি এটি সম্ভব হয় তবে আমেরিকার
San Francisco থেকে Los Angelas এর মধ্যকার একটি দীর্ঘ যাত্রা মাত্র ৩০ মিনিটে শেষ করা সম্ভব।তিনি আরো সাজেস্ট করেন যে টিউবের ঘর্ষণ কমাতে এবং ইয়ার বিয়ারিং তৈরি করতে কম্প্রেশন ফ্যানগুলো যাত্রীদের পডের চারদিকে ঘুরবে।এটির আনুমানিক খরচ ধরা হয় প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার।
শুরুতে এটাকে সাইন্স ফিকশন মনে করা হলেও এটিকে নিয়ে বর্তমানে যে সব কম্পানি কাজ করছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো:-

১)Hyper loop Transportation Technologies
২)Virgin Hyperloop One

এই দুটি প্রতিষ্ঠানই বিশ্বজুড়ে এই প্রজেক্টটি বাস্তায়ন করা জন্য কাজ করে যাচ্ছে।বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র,ফ্রান্স,স্পেন,ভারত এবং সৌদি আরব এ এর সবচেয়ে বেশি কাজ পরিচালনা হচ্ছে।যদি এটিকে বাংলাদেশে স্থাপন করা সম্ভব হতো তবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে সময় লাগত মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট।

Shah Sultan Nur

Source : Hyperloop Transportation Technologies.

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
4 টি উত্তর 556 বার দেখা হয়েছে
30 জানুয়ারি 2022 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Subrata Saha (15,210 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 241 বার দেখা হয়েছে
19 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 174 বার দেখা হয়েছে
19 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 286 বার দেখা হয়েছে
03 জানুয়ারি 2023 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ahsanul Islam Badhon (130 পয়েন্ট)

10,775 টি প্রশ্ন

18,459 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

266,108 জন সদস্য

83 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 81 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Nafis Hasan

    220 পয়েন্ট

  2. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  3. sobujalam

    110 পয়েন্ট

  4. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  5. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...