মাল্টিভার্স, একাধিক মহাবিশ্ব।
আমরা জানি বিগ ব্যং এর আগে সবকিছু এক
জায়গায় ঘনীভূত ছিল, যদিও বিগ ব্যং এর
আগে কি ছিল? কিছুই ছিলনা? এমন প্রশ্ন
অবান্তর। কিছুই ছিলনা তা হতে পারেনা।
আজ থেকে ১৫০০ কোটি বছর আগে ছোট্ট
একটি বিন্দুতে স্থান,কাল ও সময় ঘনীভূত
ছিল। সবকিছু জড়ো ছিল এক সিংগুলারিটি
পয়েন্টে। আমি, আপনি, আমরা সবাই,
আমাদের পৃথিবী সহ অসংখ্য গ্রহ, উপগ্রহ,
নক্ষত্র, নীহারিকা, ধূমকেতু, উল্কা,
মেঘমালা এমনকি এই সুবিশাল মহাবিশ্ব
সেই সামান্য একটি বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত
ছিল। তারপর এক মহাবিস্ফোরণের
মাধ্যমে আলোর চেয়ে বেশি গতিতে এই
মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হতে থাকে। যা
আজও হচ্ছে। যদিও আলোর গতির চেয়ে
দ্রুততর কোনো কিছুই নেই। তবে এই
মহাবিশ্ব স্থান কালের মধ্য দিয়েই
আলোর চেয়ে দ্বিগুণ/ তিনগুণ গতিতে
সম্প্রসারণ হয়েছে। তাই আমরা দেখি
মহাবিশ্বের বয়সের তুলনায় আয়তন বেশী
অর্থাৎ, ১৪ বিলিয়ন বছরে ৯৬ বিলিয়ন
আলোকবর্ষ ব্যাপ্তী এই মহাবিশ্ব।
কেউ যদি বলে, বয়সের তুলনায় সাইজে বড়
আমাদের এই মহাবিশ্ব। তাহলে কি আলোর
চেয়ে বেশি গতিতে সম্প্রসারণ হচ্ছিল
মহাবিশ্ব? তাহলে কি ধরে নেবো, আলোর
চেয়ে গতিশীল কিছু আছে?
জবাব হবে, না। কখনো না। আলোর চেয়ে
গতিশীল কোনো জিনিস নেই। এখনো
পর্যন্ত সেকেন্ডে তিন লক্ষ কিঃ মিঃ
বেগে চলার মতো কোনো বস্ত বা যান
আবিস্কার হয় নাই। তবে আমাদের এই
মহাবিশ্ব স্হান-কালের মধ্য দিয়ে আলোর
চেয়ে দ্রুতি নিয়ে চতুর্দিকে সম্প্রসারিত
হচ্ছে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত। গ্যালাক্সি
গুলো পারস্পরিক দূরত্বে চলে যাচ্ছে, চলে
যাচ্ছে দূর-বহুদূর। এর মধ্যেও সত্য একটি
বিষয় হলো, শুধুমাত্র এন্ড্রোমিডা
গ্যালাক্সি আমাদের মিল্কিওয়ের দিকে
ধেয়ে আসছে। উভয়টি (মিল্কোমিডা)
একদিন সংঘর্ষে লিপ্ত হবে। হতে পারে
উভয় গ্যালাক্সি মিলে বড় একটি
গ্যালাক্সিতে রূপ নেবে। তবে তার
অনেক দেরী আছে। (এ নিয়ে অন্যদিন
বিস্তারিত আলোচনা হবে)
মুল কথা হলো, মাল্টিভার্স বা একাধিক
মহাবিশ্ব। আসলে একাধিক মহাবিশ্ব
কাগজ- কলমে, সাইন্স ফিকশনের বইগুলাতে
আর আমাদের কল্পনায় সীমাবদ্ধ। এর যথেষ্ট
কোনো প্রমাণ নেই, এটা হাইপোথেসিস
ব্যাপার স্যাপার। তবে বিজ্ঞানীরা ও
বসে নেই। পরীক্ষা -নিরীক্ষা -গবেষণা
চালিয়ে যাচ্ছেন এই মাল্টিভার্স নিয়ে।
একাধিক মহাবিশ্ব কি? বাস্তবে এর
কোনো সত্যতা আছে কি?
ধারণা করা হচ্ছে, সেই বিগ ব্যং এর সময়
সৃষ্টি হওয়া সাবানের বুঁদবুঁদের মতো
অসংখ্য বুঁদবুঁদের একটি হতে পারে
আমাদের এই মহাবিশ্ব। তবে ধারণা যদি
সত্য হয়, তাহলে এটা প্রমাণের জন্য আরো
অনেক সময় লাগবে আমাদের।
©