প্রথমে আলোচনা করা যাক সূর্য থেকে আলো এবং তাপ আসা ও পরবর্তীতে সেই তাপ বিলীন হয়ে যাওয়া সম্পর্কে।
দিনের বেলায় সূর্য থেকে যে আলোকরশ্মি(তাপ ও আলো) বিকিরণ আকারে আসে তার তরঙ্গদৈর্ঘ হয় বেশ ছোট। এ কারণে তা খুব সহজেই বর্ষার মেঘ ভেদ করে ভূপৃষ্ঠে চলে আসতে পারে। এই বিকিরণ ভূপৃষ্ঠে সহজে আসতে পারলেও প্রতিফলিত হয়ে মহাকাশে চলে যেতে পারে না। কারণ প্রফলন হবার সময়ে এদের তরঙ্গদৈর্ঘ বেশ বড় হয়ে যায় ফলে তখন আর সহজে মেঘ ভেদ করতে পারে না। সেগুলি মেঘের গায়ে ধাক্কা খেয়ে মাটির দিকে ফিরে আসে। এ কারণে মেঘলা দিনে/রাতে ভূপৃষ্ট থেকে বির্কীর্ণ তাপের একটা অংশ মেঘ ও মাটির মধ্যেকার বায়ুমন্ডলে আটকে পড়ার ফলে মাটি এবং তার লাগোয়া বাতাসের স্তর ঠান্ডা তো হয়ই না, বরং বেশ গরম হয়েই থাকে। এতে আবহাওয়ার উষ্ণতা বেড়ে যায় বলেই গরমটা বেশি লাগে।
এবারে আসা যাক গরম/ঠান্ডা লাগার কারণ সম্পর্কে।
এক বস্তু থেকে আরেক বস্তুর মাঝে তাপ চলাচলের শর্ত হলো তাদের মাঝে তাপমাত্রার পার্থক্য থাকতে হবে। এদের মাঝে কোনো একটির মাঝে বেশি তাপমাত্রা এবং অন্য কোনো একটির মাঝে কম তাপমাত্রা থাকতেই হবে। উভয়ের তাপমাত্রা সমান সমান হয়ে গেলে কোনোভাবেই তাপের প্রবাহ ঘটবে না।
অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি কোথাও দাঁড়ালে যদি তার আশেপাশের বায়ুগুলো ঠান্ডা থাকে তবে বায়ুগুলো তার দেহ থেকে তাপ গ্রহণ করে। তখন ওই ব্যক্তি ঠান্ডা/প্রশান্তি বোধ করেন।
কিন্তু কোনো ব্যক্তি কোথাও দাঁড়ানো থাকা অবস্থায় যদি তার আশেপাশের বায়ুগুলোও তার শরীরের সমান তাপমাত্রায় থাকে তবে বায়ু তখন আর ওই ব্যক্তির দেহ থেকে তাপ গ্রহণ করে না ফলে ক্রমাগত ওই ব্যক্তির দেহ উত্তপ্ত হয়ে যায়। তখন ওই ব্যক্তি গরম/অস্বস্তি বোধ করেন।
গরম বা ঠান্ডা বোধ হবার অন্য আরেকটি কারণ হলো বায়ুতে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতি। যখন বায়ুতে জলীয়বাষ্প কম থাকে, তখন বায়ু সহজেই আমাদের দেহ থেকে ঘাম শুকিয়ে নেয়, ফলে তখন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হয়। অন্যদিকে বায়ুতে জলীয়বাষ্প বেশি থাকলে তখন আর বায়ু আমাদের শরীরের ঘাম সহজে শুকিয়ে নেয় না, ফলে বেশি গরম/অসহ্য লাগে।
আমরা জানি বর্ষাকালে বায়ুমণ্ডল জলীয় বাষ্পে ভরা থাকে। ফলে হয় কি, তখন সহজে দেহ থেকে ঘাম বাষ্পীভূত হতে পারে না। কারণ বায়ু এমনিতেই জলীয় বাষ্প ধারণ করে আছে। নতুন করে আর বাষ্প ধারণ করতে পারছে না। ফলে দেহ থেকে তাপও বের হতে পারে না , যার কারণে খুব অস্বস্তি লাগে তখন।
- আমিনুল ইসলাম