বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি মানুষের আকর্ষণ থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে কেন থাকে এ আকর্ষণ? কখনো কী এমন প্রশ্ন মাথায় এসেছে আপনার? সম্প্রতি এক দল গবেষক এ আকর্ষণের কারন অনুসন্ধান করেছেন। তাদের গবেষণার গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ন্যাচার কমিউনিকেশন জার্নালে প্রকাশিত হয়।
গবেষক দল বলছেন যে, কিসপেপটিন নামক আমাদের মস্তিষ্কের এক ধরণের হরমোন বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আমাদের আকর্ষণের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও আমাদের যৌন আচরণ কেমন হবে তাও নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন। শুধু তাই নয়, সাইকোসেক্সুয়াল ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায়ও এই হরমোন সহায়ক হতে পারে বলে দাবি গবেষকদের।
জার্মানির সার্ল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উলরিখ বোহেম গবেষণা সম্পর্কে বলেন, “এই গবেষণা থেকে আমরা নতুন এক ধরণের তথ্য পাই যে, বাহক বাইরের পৃথিবী থেকে পাওয়া তথ্য কীভাবে মস্তিষ্কে পাঠায় আর মস্তিষ্ক কীভাবে তা বুঝতে সক্ষম হয়। একই সাথে সেই তথ্যের সহায়ক প্রতিক্রিয়াও মস্তিষ্ক যোগান দেয়”।
বয়ঃসন্ধির এবং প্রজনন ক্ষমতার সূচনায় কিসপেপটিন হরমোনই যে মূল ভূমিকা রাখে ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা তা জানেন। গিনিপিগ ইঁদুরের ওপর চালানো এ গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের নিউরনের একটি সহ উপাদান বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ এবং যৌন আচরণ প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।
পুরুষ ইঁদুরের মস্তিষ্কে ফেরমোন নামক এক ধরণের রাসায়নিক উপাদান উৎপাদন ও নির্গত হয়। এই উপাদানটিই নিউরনের অন্যান্য অংশে এক বার্তা পাঠায় যার কারণে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অনুভুত হয়। একই সাথে, এই উপাদান নিউরনের অন্যান্য অংশে আরেকটি বার্তা পাঠায় যার কারণে নিউট্রোট্রান্সমিটার নাইট্রিক এসিড উৎপন্ন হয়। এই এসিডই বাহকের যৌন আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে।
এই গবেষণা কাজে লাগিয়ে হাইপোসেক্সুয়াল ডিসঅর্ডার যেমন অতিরিক্ত যৌন কাজের চাহিদার মতো অসুখের চিকিৎসা করা যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন অধ্যাপক বোহেম।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস