প্লাসিবো হচ্ছে (/pləˈsiːboʊ/ plə-SEE-boh; Latin placēbō, "I shall please"[১] from placeō, "I please")[২][৩] এক ধরনের পদ্ধতি বা বস্তু যা মূলতঃ কোন ঔষধি প্রভাব না ফেলেই চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।[৪] সাধারণত, রোগীকে মানসিকভাবে আশ্বস্ত করার জন্য যে, তাকে ঔষধ প্রয়োগে চিকিৎসা করা হচ্ছে, প্লাসিবো প্রয়োগ করা হয়। ঔষধ পরীক্ষা করার সময়, কন্ট্রোল হিসেবে প্লাসিবো ব্যবহার করা হয়। এতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকেরা জানতে পারে না তাদের উপর প্রয়োগকৃত ঔষধ আসলেই কার্যকরী কি কার্যকরী না। ফলে, পরীক্ষার ফলাফল কোনভাবে প্রভাবিত হওয়ার সুযোগ থাকেনা। [৫][৬] এটি একটি মানসিক অবস্থা তৈরি করে, ফলে রোগীর মনে হয় তার রোগ সেরে যাচ্ছে। যদিও এতে ঔষধি প্রভাব নয় বরং রোগীর মানসিক ইচ্ছেটাই কাজ করে। এই প্রভাবকে প্লাসিবো ইফেক্ট বা প্লাসিবো প্রভাব বলা হয়।[৭][৮] অদ্যাবধি প্লাসিবো ইফেক্ট নিয়ে গবেষণা চলে আসছে। [৯]চিকিৎসা গবেষণায় প্লাসিবো গুরূত্বপূর্ণ হাতিয়ার। নিষ্ক্রিয় ট্যাবলেট (চিনির তৈরি ঔষধের মত ট্যাবলেট) , শ্যাম সার্জারি (যাতে রোগীকে বুঝ দেয়ার জন্য অস্ত্রোপাচারের অভিনয় করা হয়)[১০] এবং আরো অনেক পদ্ধতিতে মিথ্যে তথ্যের ব্যবহার প্লাসিবো হিসেবে অহরহ ব্যবহার হয়ে আসছে। [১] এমনকি প্রমাণ আছে যে, রোগীদের যদি জানানো হয়, এই প্লাসিবো প্রয়োগে তাদের রোগের উন্নতি ঘটবে দেখা যায়, সত্যিকার অর্থেই তাদের রোগের অবস্থার উন্নতি ঘটাচ্ছে। অর্থাৎ, প্লাসিবো তাদের সুস্থ বোধ করতে অবদান রাখছে। .[১১] এটাও লক্ষণীয় যে, রোগীর অজান্তে প্লাসিবো ব্যবহারে সাধারণত তা রোগে কোন অবদান রাখে না বললেই চলে।[১২] পারকিনসন ডিজিজ, বিষন্নতাসহ বিভিন্ন রোগে ব্যাথানাশক হিসেবে প্লাসিবোর ব্যবহার নিয়ে স্নায়ুবিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। [১৩] এমেরান মেয়ার, জোহানা জারকো এবং ম্যাট লিবারম্যান মস্তিষ্ক ইম্যাজিং পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখিয়েছেন, প্লাসিবোর প্রভাব সত্যিকার অর্থেই মস্তিষ্কের গঠনে লক্ষ করার মত পরিবর্তন আনে।[১৪] প্লাসিবো শরীরের গাঠনিক বেশ কিছু পরিবর্তন যেমন হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ ও মস্তিষ্কের রাসায়নিক কার্যক্রমের পরিবর্তনের ভূমিকা রাখে। ব্যাথাসংক্রান্ত, বিষন্নতা এবং পারকিনসন ডিজিজের মত রোগে এই পরিবর্তনসমূহ লক্ষনীয়। তবে এজমা বা শ্বাসকষ্টের মতো প্লাসিবো কোন পরিবর্তন না আনলেও রোগীরা কিছুট সুস্থবোধ করছে এরকম মত ব্যক্ত করায় এটা নিয়ে বিতর্ক রয়ে যায়।[১৫]
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া