তোতলামি জিনিসটাকে আমাদের সমাজে অনেকটা হাসি-তামাশার বিষয় হিসেবে দেখা হয়। এটা স্বাভাবিক কারো কাছে সাময়িক মজার জিনিস মনে হলেও, যার তোতলামির সমস্যা আছে, তার জন্য ব্যাপারটা বেশ পীড়াদায়ক।
তোতলামি বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। এর পেছনে শারীরিক, মানসিক, পরিবেশগত বিভিন্ন কারণ কাজ করে। অনেক সময় পরিবার থেকেও এই তোতলামি পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। সাধারণত মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের তোতলামির পরিমাণ বেশি হয়। তোতলামির সমস্যা থাকা প্রতি ৫ জন ছেলের বিপরীতে মেয়ে আছে মাত্র ১ জন। আর পুরো পৃথিবীতে তোতলামির সমস্যায় ভুগছে, এমন লোকের সংখ্যা মাত্র ১%।
বয়সের সাথে তোতলামির একটা সম্পর্ক আছে। বিভিন্ন বয়সে এর কারণ ভিন্ন। চলুন এবার দেখে নেয়া যাক, বয়সের সাথে সাথে তোতলামির সমস্যাগুলো কী হতে পারে।
১. ভাষাগত জটিলতা
সাধারণত ২-৫ বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে তোতলামির লক্ষণ দেখা যায়। তবে এটা হয়ে থাকে নতুন কথা বলা শেখার কারণে। নতুন নতুন শব্দ শেখা, এর সাথে পরিচয় হওয়া, নতুন শব্দ উচ্চারণের চেষ্টা করা- এগুলোর কারণে বাচ্চাদের তোতলামি দেখা যায়। নিজের ভাষার সাথে পরিচিত হয়ে গেলে কিংবা অভ্যস্ত হয়ে গেলে এই তোতলামি চলে যায়। এক্ষেত্রে তোতলামির সমস্যাটা স্থায়ী নয়।
২. শারীরিক ও মানসিক জটিলতা
অনেকের মধ্যে তোতলামির কারণে কথা আটকে যাওয়ার একটি ভয় কাজ করে। এই ভয়ের কারণে কথা আরো বেশি জড়িয়ে যায়। কথা আটকে যাওয়ার যে ভয় কাজ করে, তার পেছনে একটি রোগ দায়ী। একে বলে সেলিসমোফোবিয়া। এই রোগটি সম্পূর্ণ মানসিক। এই রোগের কারণে কেউ কেউ সবার সামনে কথা বলতে ভয় পায়। মনে করে, কথা বলতে চাইলেই মুখ দিয়ে কথা বের হবে না। তখন নিজেদের সবার সামনে লজ্জায় না ফেলার জন্য কথা গুটিয়ে নেয়। তবে কারো সাহায্য কিংবা অনুপ্রেরণা পেলেই এই সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব।