আমরা জানি পিঁপড়েরা কখনো ঘুমায় না। এটি কি সত্য? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+6 টি ভোট
3,085 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (54,300 পয়েন্ট)
সম্পাদিত করেছেন

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (71,130 পয়েন্ট)


ঘুম হলো গভীর বিশ্রাম দশা যেখানে শরীর ও মন কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকে। পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাপেক্ষে মস্তিষ্ককে অকার্যকর মনে হলেও ঘুমের সময় সে নিজেকে গুছিয়ে নেয়। প্রতিদিন প্রচুর স্মৃতি মস্তিষ্কে জমা হয় যার মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় কিংবা ক্ষণস্থায়ী ও দীর্ঘস্থায়ী। এই স্মৃতিগুলোকে বিন্যাস্ত করা ও যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন পড়ে।

শরীরের অভ্যন্তরে প্রচুর জৈবরাসায়নিক বিক্রিয়া চলে প্রতিনিয়ত। রোগবালাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়, সারাদিন কাজ করে চলা স্নায়ু কোষেরও বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ে। উপরোক্ত কার্যক্রম তখনই ভালো ভাবে ঘটতে পারে যখন আমরা শরীরকে পুরোপুরি বিশ্রাম দেই। আর সে জন্যেই আমরা ঘুমিয়ে থাকি।

পিঁপড়া কি ঘুমায়? প্রথমেই পিঁপড়ার চোখ নিয়ে দুটা কথা। এদের দুইটি পুঞ্জাক্ষি ও তিনটি সরলাক্ষি বিদ্যমান। আর এই দুই ধরনের চোখের কোনটিতেই চোখের পাতা নেই। ঘুম মানেই চোখ বন্ধ করে পড়ে থাকা নয়। আমাদের না হয় চোখের পাতা আছে বন্ধ করে ফেলি। যাদের চোখের পাতা নেই তারা কি তাহলে ঘুমাবে না? পিঁপড়াও ঘুমায় তবে তাদের সে ঘুম হুবহু আমাদের মতো নয়। এখানে ঘুম বিষয়টিকে আমরা গভীর বিশ্রামের সাথে তুলনা করতে পারি। পিঁপড়ার ঘুম নিয়ে কিন্তু গবেষণা পর্যন্ত হয়ে গেছে।

পিঁপড়া গর্তে থাকে। তো উনাদের ঘুমে দিন-রাত খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারবে বলে মনে হয়না। রানী পিঁপড়াকে কেন্দ্র করেই কলোনি গড়ে ওঠে। ঘুমের ক্ষেত্রে রানী আর কর্মী পিঁপড়ার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য লক্ষণীয়। পিঁপড়ার গভীর বিশ্রাম দশায় যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন এবং এই বিশ্রামদশা ২৪ ঘণ্টায় অনেকগুলো ক্রমে ঘটার বিবরণ পাওয়া যায়। কিছু পিঁপড়া যখন বিশ্রাম নিতে থাকে তখন অন্য পিঁপড়া তাদের বাসস্থানের দেখভালের পুরো দায়িত্ব পালন করে। আর বিশ্রাম চলা কালে পিঁপড়ার ম্যান্ডিবল ও অ্যান্টেনার সঞ্চালন বেশ কমে যায় স্বাভাবিকের তুলনায়। তাই এই দশাকে গভীর বিশ্রাম দশা নাম দেন।

পিঁপড়ার গভীর বিশ্রাম দশাই যে প্রচলিত অর্থে ঘুম তা জানিয়ে দেন। মানুষ যেমন একবারে ৮/৯ ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকে, পিঁপড়া ঠিক এমনভাবে ঘুমায় না। ওদের ঘুম ছোট ছোট পর্বে বিভক্ত। কর্মী পিঁপড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৫০ বারের মতো ঘুমায়। আর প্রতিবার তারা মাত্র ১ মিনিটেরও কম সময় ঘুমিয়ে থাকে। সবমিলিয়ে ২৪ ঘণ্টায় একটি কর্মী পিঁপড়া সাড়ে চার ঘণ্টার মতো ঘুমাতে পারে। তারা কখনোই একসাথে সবাই ঘুমায় না, অন্তত ৮০% জেগে থাকে। কিছু পিঁপড়া যখন বিশ্রামে যায় তখন পর্যাপ্ত সংখ্যক পিঁপড়া জেগে থাকে প্রতিরক্ষা কিংবা কাজের তাগিদে।

অন্যদিকে, রানী পিঁপড়া একটু অলস বলা যায়। যদিও সে ২৪ ঘণ্টায় ৯০ বারের মতো ঘুমায়, কিন্তু প্রতিবারে প্রায় ৬ মিনিটের মতো সময় নেয়। সবমিলিয়ে রানী পিঁপড়া ৯ ঘণ্টার মতো ঘুমায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। তাহলে দেখা গেল রানী পিঁপড়া আমাদের সমপরিমাণ ঘুম দিলেও একটানা নয়। মজার বিষয় হলো একটি কলোনিতে একাধিক রানী পিঁপড়া থাকলে তারা ঘুমানোর সময় একসাথেই ঘুমায়, একরকম জড়াজড়ি করে। কিন্তু ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর তারা আলাদা হয়ে পড়ে।

রানী পিঁপড়া মাঝে মাঝে মুখ খুলে অ্যান্টেনা একটু পাশের দিকে রেখে ঘুমায়। আবার অনেক সময় মুখ বন্ধ করে অ্যান্টেনা খাঁড়া রেখে ঘুমায়, আর এটিই এদের গভীর বিশ্রাম দশা। সদ্য জেগে ওঠা থেকে ওঠা পিঁপড়া কিছু সময় ঢুলুঢুলু ভাবে চলাফেরা করে, এটা কিন্তু আমাদের সাথে বেশ মিলে যায়।

মস্তিষ্ক থাকলে ঘুমের দরকার পড়বেই বলা চলে। সেই ঘুমের প্যাটার্ন একেক প্রাণীর একেক রকম। আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণী যারা কিনা পতঙ্গ নামে পরিচিত, এদের চোখের পাতা নেই। অন্যদিকে বেশ উন্নত প্রাণী মাছেরও চোখের পাতা নেই। তাই ঘুম বলতে প্রচলিত অর্থে আমরা যেমনটি দেখে থাকি তেমনটা এসব প্রাণীদের ক্ষেত্রে দেখা যাবে না।

[লেখক : আরিফুল ইসলাম]

0 টি ভোট
করেছেন (2,990 পয়েন্ট)

 পিঁপড়ে অতি অদ্ভুত একটি প্রাণী। আমাদের চোখের সামনে সর্বক্ষণ ঘোরাঘুরি করলেও এদের ব্যাপারে অনেককিছুই আমরা জানি না। পিঁপড়ের ফুসফুস নেই, কানও নেই। এদের হাঁটু এবং পায়ে আছে বিশেষ এক ধরণের সেনসিং ভাইব্রেসন যার মাধ্যমে এরা আশেপাশের পরিস্থিতি বুঝতে পারে। পোকামাকড়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্কের অধিকারী এই পিঁপড়ে।

 

আরেকটি অদ্ভুত ব্যাপার হলো যে পিঁপড়েরা কখনও ঘুমায় না। দিন নেই, রাত নেই, সারাক্ষণ কাজ করে চলেছে। ছোটবেলায় আমরা সকলেই ঘাসফড়িং ও পিঁপড়ের গল্পটি পড়েছি। সেখান থেকেই আমরা জানতে পারি যে পিঁপড়েরা কতোখানি পরিশ্রমী। বাস্তব জীবনেও তাই, সত্যিই তারা পরিশ্রমী। তাহলে কি ব্যস্ততার জন্য তারা ঘুমায় না? ব্যাপারটা তা নয়। পিঁপড়ের চোখের পাতা নেই, তাই এরা চোখ বন্ধ করতে পারে না। তবে তার জন্য এদের দেখতে কোনো সমস্যা হয় না। অধিকাংশ পিঁপড়ের দুটি চোখ থাকে, এতে কয়েকটি লেন্স থাকে যার সাহায্যে এরা খুব ভালো দেখতে পায়। কিছু কিছু পিঁপড়ের অবশ্য তিনটি সাধারণ চোখ থাকে। এই চোখের প্রতিটিতে একটি করে লেন্স থাকে। তবে নিশাচর প্রাণীদের মতো মাটির নীচে বসবাসকারী কিছু পিঁপড়ে দিনে দেখতে পায় না। কারণ এদের চোখে কোনো প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না। তাই এরা কেবল রাতেই ভালো দেখে।[1]

শুধু পিঁপড়েই নয়, এদের মতো আরো অনেক প্রাণী আছে যারা আপাতদৃষ্টিতে আমাদের খুবই পরিচিত, কিন্তু অনেক অজানা তথ্য লুকিয়ে আছে তাদের মধ্যে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 226 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,262 বার দেখা হয়েছে
+8 টি ভোট
4 টি উত্তর 772 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
3 টি উত্তর 721 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

273,299 জন সদস্য

32 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 32 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Shourov Viperr

    110 পয়েন্ট

  4. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  5. Eyasin

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...