নোমোফোবিয়া শব্দটি এসেছে No Mobile Phobia থেকে। অর্থাৎ, মোবাইল ফোনের অনুপস্থিতিতে মানুষ যে ভীতি অনুভব করে তাকে নোমোফোবিয়া বলে। এই ফোবিয়াতে আক্রান্ত মানুষের মোবাইল ফোনের সাথে অতিরিক্ত মানসিক সংযোগ থাকায় তারা মোবাইল ফোন ছাড়া এক মুহূর্তেও থাকতে পারেন না। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে নারীদের চেয়ে পুরুষরাই এই ফোবিয়াতে বেশি আক্রান্ত।
নোমোফোবিয়ার লক্ষণ :
১. মোবাইল ফোনের ব্যবহার করতে না পারায় বা ফোনের ব্যাটারির চার্জ কমে গেলে দুশ্চিন্তা, হতাশা, ভয়, আতঙ্ক অনুভব করা। অন্য কেউ ফোন ধরলে অস্বস্তি অনুভব করা।
২. ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল নিয়ে ব্যয় করা। বাথরুম, গোসল, খাওয়া, ঘুমানোর সময়ও ফোন সাথে রাখা। মোবাইল ছাড়া নিজেকে অসহায় অনুভব করা।
৩. ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোম হওয়া। অর্থাৎ, মোবাইল ফোন ভাইব্রেট না হলেও ফোনের কম্পণ অনুভব করা। সাইন্স বী
৪. অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কে ডোপামিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায়। এর ফলে মানুষ নতুন কাজ করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলে।
৫. শারীরিক উপসর্গ: নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া, শরীর কাঁপা, ঘাম হওয়া, মাথা ঘুরানো, হৃদসম্পন্দন বেড়ে যাওয়া।
নোমোফোবিয়ার কারণ :
নোমোফোবিয়াকে আধুনিক ফোবিয়া বলা হয়। এই ফোবিয়ার কোন নির্দিষ্ট কারণ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। প্রযুক্তির প্রতি অত্যাধিক নির্ভরতা, প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগ না করতে পারার ভয়, একা থাকার ভয়, ইত্যাদি এই ফোবিয়ার কারণ হিসেবে ধরা হয়। সাইন্স বী
নোমোফোবিয়ার চিকিৎসা :
নোমোফোবিয়ার কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এই ফোবিয়া দেখা দিলে প্রথমত নিজের উপর নিয়ন্ত্রন আনার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিদিন কিছুটা সময় মোবাইল থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে, সৃজনশীল কাজে মনোযোগ দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার যতটা সম্ভব কমিয়ে আনুন। ঘুমানোর সময় মোবাইল হাতের নাগালের বাইরে রাখুন। পরিবার-বন্ধুবান্ধব এর সাথে সময় কাটান। এইসব করেও নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে সাইকিয়াট্রিস্টের সহায়তা নিতে হবে। সাধারণ CBT থেরাপি, এক্সপোজার থেরাপি, ঔষধের মাধ্যমে নোমোফোবিয়ার চিকিৎসা করা হয়।
লিখেছেন: নিশাত তাসনিম (সায়েন্স বী)