পৃথিবীতে মানুষ কবে এসেছিল এমন প্রশ্ন বহুদিনের। অবশেষে উত্তর পেলেন বিজ্ঞানীরা। ৬৫০ মিলিয়ন বছর আগে শ্যাওলা জাতীয় পদার্থ থেকে বহুকোষী প্রাণীর সৃষ্টি হয়। এমন মনে করছেন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। সে সময় বড়সড় পরিবর্তন এসেছিল পৃথিবীর আবহাওয়ায়। যা বহুকোষী প্রাণের সৃষ্টিতে সহায়তা করেছিল। এই বহুকোষী প্রাণী থেকেই ধীরে ধীরে বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে তৈরি আজকের মানুষ।
গবেষক দলের নেতৃত্বে আছেন অধ্যাপক জোসেফ ব্রুকস। নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত এক রিপোর্টে তিনি এই বিবর্তনের ইতিহাসকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ব্যাখ্যা করেছেন। মধ্য অস্ট্রেলিয়া থেকে উদ্ধার করা বেশ কয়েকটি অতি প্রাচীন যুগের বেশ কিছু পাথর দিয়ে চলেছে পরীক্ষা।
পাথরগুলিকে ভেঙে গুঁড়ো করে প্রাচীন প্রাণের নিদর্শন মিলেছে। তিনি বলেন, পাথরের কণা থেকে বোঝা যাচ্ছে ৬৫০ মিলিয়ন বছর আগে প্রাকৃতিক অনুকূল পরিস্থিতির জন্যই প্রাণের বিকাশ ঘটে। বিশেষ করে বহুকোষী প্রাণের। ব্রুকস একে ব্যাখ্যা করেছেন ইকোসিস্টেমের বিপ্লব হিসেবে।
বৈজ্ঞানিকদের মতে, তখন পৃথিবীতে চলছে বরফ যুগ। বরফের জমাট বাধা অবস্থা ছিল তখন গোটা বিশ্ব জুড়ে। ৫ কোটি বছর ধরে বরফের পুরু থেকে পুরুতর স্তরে ঢাকা ছিল এই গ্রহ। বিশাল হিমবাহ ভেঙে পড়ে গোটা পর্বতমালাকে মাটিতে মিশিয়ে দেয়।
ফলে পাহাড় ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারে পুষ্টিকর দ্রব্য। এরপরই শুরু হয় উষ্ণ যুগ। গলতে শুরু করে বরফ। বরফগলা পানিতে মিশে নদী ও সমুদ্রে। বরফ শীতল পানি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসে। তৈরি হয় প্রাণ সৃষ্টির প্রয়োজনীয় পরিবেশ।
বরফের স্তর ভেঙে বেরিয়ে আসা পুষ্টিকর পদার্থ সমুদ্রে মিশে। ধীরে ধীরে তৈরি হয় সামুদ্রিক প্রাণ। স্থলে জন্ম নেয় বহুকোষী প্রাণী। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন পানিতেই প্রথম বহুকোষী প্রাণীর জন্ম হয়েছিল। এই বহুকোষী প্রাণী বিবর্তিত হয়ে মানুষের উৎপত্তি।