Warman Hasbi-সূর্য আমাদের থেকে অনেক দূরে হওয়ায় এবং অনেক বেশি উত্তপ্ত হওয়ায় এর কাছে গিয়ে তাপমাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি, তবে কোন কিছুর তাপমাত্রা নির্ণয়ের জন্য এর কাছে যাওয়াই আবশ্যক নয়।
সূর্যের সার্ফেস এর তাপমাত্রা খুব সহজেই বের করা যায়, এর অনেক গুলো পদ্ধতি আছে।
নক্ষত্র থেকে আসা আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য থেকেই বুঝা যায় নক্ষত্রটি কেমন উত্তপ্ত, তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত ছোট এর শক্তি তত বেশি, আর নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি তাই নীল তারা বেশি উত্তপ্ত এবং লাল তারা সেগুলোর চেয়ে কম উত্তপ্ত হয়, এভাবে তারা থেকে আসা আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য থেকে হিসেব করে এর তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
আমরা থার্মাল ক্যামেরা বা ইনফ্রা-রেড ক্যামেরা সম্পর্কে জানি, করোনার সময় এটা দিয়ে মানুষের দেহের তাপমাত্রা নির্ণয় করা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে, প্রতিটি বস্তুই তাপ শোষন করে বা তাপ ত্যাগ করে, ০ ডিগ্রীর উপরে তাপমাত্রার সকল বস্তুর কণাগুলোর মধ্যেই এক প্রকার পারস্পরিক কম্পন হয় যার ফলে শক্তি উৎপন্ন হয় এবং রেডিয়েশন নির্গত হতে থাকে, আর ইনফ্রা-রেড ক্যামেরায় এই রেডিয়েশন বা তরঙ্গদৈর্ঘ্য ধরা পরে যা আমাদের চোখের দৃষ্টিসীমার বাইরে (তবে সাপসহ অনেক প্রাণী দেখতে পায়), থার্মাল ক্যামেরায় এই রেডিয়েশন ডিটেক্ট করে বুঝা যায় কোন জায়গা থেকে কতটুকু শক্তি নির্গমন হচ্ছে, যেখান থেকে রেডিয়েশন/শক্তি বেশি আসছে সেটার তাপমাত্রাও তত বেশি হয়, এ থেকেই সেটার তাপমাত্রা নির্ণয় হয়ে যায়।
পাইরোমিটার এমনি একটি যন্ত্র যা এভাবে ৮০০ থেকে ৬০০০ ডিগ্রী পর্যন্ত তাপমাত্রা নির্ণয় করতে পারে, পাইরোমিটার দিয়েও সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা নির্ণয় করা যায় সহজেই।
সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রা এর উপরিভাগের মত এভাবে নির্ণয় করা যায়নি, এর জন্য কিছু থিউরির প্রয়োগ হয়েছে,
আমরা পানিকে গরম করলে সেটা যখন বাস্প হয় তখন উড়ে যায় কারণ গ্রাভিটি আর বায়ুর ঘনত্বের মাঝে সাম্যাবস্তা আর থাকেনা মানে গ্রাভিটি বাস্পকে মাটিতে আটকে রাখতে পারেনা কারণ বাস্প উত্তপ্ত হয়ে অনেক কম ঘনত্বের হয়ে যায়, এখন ভাবুন সূর্য আছে কিন্তু মারাত্নক উত্তপ্ত অবস্থায় মানে বায়বীয় এর চেয়েও উপরে প্লাজমা অবস্থায়, এবং সূর্যের ঘনত্ব এবং গ্রাভিটি থেকে বুঝা যায় যদি কেন্দ্রে প্রচুর তাপ না থাকে তাহলে প্লাজমা অবস্থায় থাকা সূর্য এর নিজের মধ্যাকর্ষণ টানে কেন্দ্রের দিকে ছোট হয়ে যাবে, এর গ্রাভিটি নিজের দিকে টানে এবং তাপশক্তির ফলে সেটা এর বিপরীতে শক্তি পায় যার ফলে ভারসাম্য ঠিক থাকে(যেমন গ্রাভিটি পানিকে নিচে টানে ,তাপশক্তি দিলে বাস্প হয়ে সেটা উপরে উঠে)। সূত্র এপ্লাই করে বের করা যায় ঠিক কতটুকু তাপ কেন্দ্রে থাকলে সেটা সূর্যকে ধরে রাখতে পারবে। এছাড়া সূর্যের কেন্দ্রে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ার দ্বারা হাইড্রোজেন অনু মিলে তৈরি হচ্ছে হিলিয়াম এতেও প্রচুর তাপ উৎপন্ন হচ্ছে যার সম্পর্কে মানুষের ধারণা আছে। এই তথ্য গুলো থেকে ক্যালকুলেশনের মাধ্যমে সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রা নির্ণয় সম্ভব হয়েছে।
(সহজ করার জন্য ক্যালকুলেশন টা এখানে লিখিনি)