মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে কিংবা বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে আপনা আপনি কাঁপুনি দিয়ে ওঠে কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+6 টি ভোট
34,629 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (47,700 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+2 টি ভোট
করেছেন (47,700 পয়েন্ট)

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ঝাঁকুনি দিয়ে ঘুম ভেঙে যাওয়াকে বলে Hypnic Jerk বা Myoclonic Jerk বা Sleep Start। হিপনিক জার্ক হচ্ছে এক ধরনের মাংসপেশির অনৈচ্ছিক টান যা সাধারণত মানুষ ঘুমানোর পর ঘটে, একে মায়োক্লোনাস বলে। এমন ঘটনা মানুষের ঘুম ও জাগরণ এর মাঝে ঘটে। হিপনিক জার্ক কেন হয় তার কোন নির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি। বিজ্ঞানীদের ধারণা মায়োক্লোনাস এর উৎপত্তি মস্তিষ্কে। এর সৃষ্টি মস্তিষ্কের সেরেব্রাল কর্টেক্স বা মস্তিষ্কের যে অংশের জন্য আপনি চমকে উঠেন তা থেকে। এমনও হতে পারে যে জাগ্রত অবস্থা থেকে যখন মানুষ ঘুমন্ত অবস্থায় যায় তখন এই স্থানের নিউরোট্রান্সমিটার এর অস্থিতিশীলতার জন্য হিপনিক জার্ক ঘটে। এছাড়াও যেসব কারণে হিপনিক জার্ক হতে পারে :

১. ক্যাফেইন, নিকোটিন, চা কফি ও অন্যান্য উত্তেজক পানীয় মস্তিষ্ক ও দেহকে জাগিয়ে রাখে।মাত্রাতিরিক্ত, বিশেষ করে পড়ন্ত বিকেল ব সন্ধ্যায় এইসব পানীয় গ্রহন করলে নিদ্রাহীনতা হতে পারে। পাশাপাশি পানীয়তে থাকা রাসায়নিকের প্রভাবে হিপনিক জার্ক হতে পারে।

২. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ এর মধ্যে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুমের সমস্যা হয়। এর কারণ মানসিক চাপ এর ফলে মানুষের মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে এবং নানা ধরনের চিন্তা মাথায় ঘুর ঘুর করে। এর ফলে ঘুমের মাঝে ঝাঁকুনি বা হিপনিক জার্ক এর মতো সমস্যা হতে পারে।

৩. দুশ্চিন্তার মতো ব্যায়ামও মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও সতেজ রাখে। তবে সকাল বা দিনে ব্যায়াম না করে রাতে ব্যায়াম করলে তার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যায়াম করলে হিপনিক জার্ক হতে পারে।

৪. রাত জাগার অভ্যাস, অতিরিক্ত পরিশ্রম, রাতে ঘুমানোর আগে ফোন-ল্যাপটপ ব্যবহার, দীর্ঘ সময় নেট ব্রাউজিং, খাটাখাটুনি করে ঘুমানো, ইনসোমনিয়া বা নিদ্রাহীনতায় যারা ভুগেন তাদের হিপনিক জার্ক হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

তাছাড়া শরীরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের অভাব; ঘুমের মধ্যে হাতে পায়ে ঝিঁঝিঁ; উচ্চশব্দ ইত্যাদির প্রভাবে হিপনিক জার্ক হতে পারে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা ঘুমের মধ্যে ঝাঁকুনির কারণ হিসেবে ইভোলিউশন ভিত্তিক কিছু মতবাদ দিয়েছেন। এছাড়া হিপনিক জার্ক এর কারণ হিসেবে স্নায়ুবিজ্ঞানীদের কিছু থিউরিও আছে। নির্দিষ্ট কারণ এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। 

হিপনিক জার্ক এর ধরণ একেক মানুষের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। সাধারণত হিপনিক জার্ক হলে ঘুমের মাঝে পড়ে যাওয়ার অনুভূতি হয়, আলো ঝলকানি বা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখা বা হ্যালুসিনেশন হয়, কিছু ভেঙে যাওয়ার মতো মড়মড় শব্দ শুনা যায়। ঝাঁকুনি দিয়ে ঘুম ভেঙে গেলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। হিপনিক জার্ক প্রতিরোধের জন্য জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা আবশ্যক। যেমন: মেডিটেশন করা, নিজের মন মস্তিষ্ককে চিন্তামুক্ত রাখা, নিয়ম করে ঘুমানো, রাতে ব্যায়াম না করে দিনে ব্যায়াম করা, ক্যাফেইন এর মতো উত্তেজক পানীয় কম গ্রহণ করা ইত্যাদি। তবুও যদি ঝাঁকুনির সমস্যা থেকে মুক্তি না মেলে তবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।

- Nishat Tasnim (Science Bee Family)

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 996 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,174 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
1 উত্তর 370 বার দেখা হয়েছে
+9 টি ভোট
2 টি উত্তর 26,042 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,459 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

266,134 জন সদস্য

53 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 53 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Nafis Hasan

    220 পয়েন্ট

  2. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  3. sobujalam

    110 পয়েন্ট

  4. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  5. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...