অনুপম মল্লিক আদিত্য-
#Muscae_volitantes / #Floaters
মাঝে মাঝে চোখের সামনে উড়তে থাকা স্বচ্ছ জিনিসগুলো আসলে কী?
খেয়াল করে দেখেছেন কিনা, কোনো দিকে তাকালে মাঝে মাঝে প্যাঁচানো স্বচ্ছ জিনিস বা জিনিসের ছিটাফোঁটা দেখা যায়। ঐ জিনিসটিতে ফোকাস করতে চাইলে তা অন্যত্র চলে যায়। ক্ষান্ত দিয়ে আবার মূল বস্তুতে দৃষ্টি ফেরালেই আবার স্বচ্ছ জিনিসটি ফিরে আসে। কখনোই এর উপর ফোকাস করা যায় না। দৃষ্টিসীমায় আশ্চর্য আচরণ করে। স্বচ্ছতার মাত্রা বেশি হবার কারণে যে বস্তুর দিকে তাকিয়েছেন তাতে কোনো আড়াল পড়ে না কিন্তু প্যাঁচানো বস্তুর উপস্থিতি ঠিকই বুঝা যায়।
আপনার দৃষ্টির মাঝে এমনটা হয়? ভয় পাবার কিছু নেই। মস্তিষ্ক মাতাল আচরণ করছে না। আকার আকৃতিতে পোকা বা কেঁচোর মতো হলেও এগুলো ঐরকম কিছু নয়। চোখের এই ঘটনাটি স্বাভাবিক। একে বলা হয় #Muscae_volitantes
ল্যাটিন এই শব্দ-যুগলকে বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘উড়ন্ত মাছি’ (flying flies)।
এই জিনিসগুলোর তৈরি হয় মূলত চোখের অভ্যন্তরের ক্ষুদ্র টিস্যু বা প্রোটিনের আবরণ কিংবা রক্তকণিকার কারণে। কোনো বস্তু থেকে আলোক রশ্মি যখন চোখের রেটিনায় এসে পড়ে তখন এই পথের মাঝে যদি এই উপাদানের কোনো একটা আড়াল হিসেবে পড়ে তখন তার ফলাফল হিসেবে দৃষ্টিক্ষেত্রে স্বচ্ছ কোনোকিছুর উপস্থিতি দেখা যায়।
মাঝে মাঝে কারো কারো ক্ষেত্রে এরকম বস্তুগুলো কিছুটা অস্বচ্ছও হতে পারে। ঐ পরিস্থিতিতে মনে হবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তু সাপের চলার মতো এদিক ওদিকে সামান্য দ্রুত বেগে চলাচল করছে। এমন হলেও আসলে ভয় পাবার কিছু নেই। চোখের রক্তনালী খুব সরু হয়ে থাকে। শ্বেত রক্তকণিকাগুলো অন্য রক্তকণিকা থেকে বড় হয়ে থাকে। তুলনামূলকভাবে বড় আকৃতির কণিকা যখন সরু রক্তনালী দিয়ে যায় তখন দিয়ে যায় তখন নালীর পথ এক অর্থে সবটাই দখল হয়ে যায়। পেছনে লোহিত রক্তকণিকা জমতে শুরু করে। সম্মিলিত অবস্থায় শ্বেত কণিকার পেছনে পেছনে চলতে থাকে। লোহিত কণিকা অস্বচ্ছ পদার্থ। তারা যখন সম্মিলিত অবস্থায় থাকে তখন আলোকরশ্মি তাদের অতিক্রম করতে পারে না। তাই চোখের দেখায় মনে হয় কালো রকমের কী যেন চলাফেরা করছে!
Reference: Mayoclinic, Wikipedia