চারদিক ভালোভাবে দেখার জন্য চোখের মণি সব সময় নড়াচড়া করে। এ জন্য চোখ ভেজা থাকতে হয়। চোখের পানি সামান্য নোনা থাকলে সেটা চোখ পিচ্ছিল রাখতে সাহায্য করে। চোখের পানিতে বিভিন্ন রকম লবণ দ্রবীভূত হয়। এই লবণ সম্ভবত আসে রক্ত থেকে।
আমরা যে খাবার খাই, তার একটি উপাদান লবণ। শরীরের পাকস্থলী খাদ্য থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে। এ সময় লবণ রক্তপ্রবাহে সঞ্চালিত হয়। ল্যাক্রিম্যাল গ্ল্যান্ড থেকে চোখের পানি বের হয়। এই গ্ল্যান্ড দিয়ে রক্ত সঞ্চালিত হওয়ার সময় চোখের পানি লবণাক্ত হয়ে পড়ে।
চোখের পানিতে লবণ কতটা ও কী অনুপাতে আছে, তার রাসায়নিক বিশ্লেষণ সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ১৭৯১ সালে, ফরাসি রসায়নবিদ ল্যাভয়সিঁয়ে সম্পাদিত একটি বৈজ্ঞানিক সাময়িকীতে। সেখানে উল্লেখ করা হয় যে চোখের পানিতে সবচেয়ে বেশি রয়েছে সোডিয়াম ক্লোরাইড। এটা হলো সেই লবণ, যা আমরা রান্নার সময় ব্যবহার করি। এরপরই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লবণ হলো পটাশিয়াম ক্লোরাইড। এ ছাড়া রয়েছে ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেট, ম্যাঙ্গানিজসহ আরও কিছু উপাদান, যা লবণ তৈরিতে সাহায্য করে।
১৯৫০ সালে এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, চোখের পানিতে সোডিয়ামের ঘনত্ব যতটা, রক্তের মূল উপাদান রক্তরসেও ততটা। সে জন্য রক্তের স্বাদও নোনা। রক্তরসের এই সোডিয়ামই চোখের পানিকে নোনা করে।
প্রশ্ন হলো, নোনা পানিতে তো চোখ জ্বালা করার কথা, সেই অস্বস্তি হয় না কেন? আসলে চোখের পানি নোনা হলেও তাতে লবণের ভাগ খুবই কম। এত হালকা নোনা হওয়ার কারণেই চোখের পানিতে তেমন কোনো অস্বস্তিবোধ হয় না।
তথ্যসূত্রঃ প্রথম আলো