আলোর গতি কিভাবে পরিমাপ করা হয়েছিলো? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+8 টি ভোট
1,744 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (123,390 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (123,390 পয়েন্ট)
 
সর্বোত্তম উত্তর

বর্তমানে শূণ্যস্থানে আলোর গতি ধরা হয় 

(2.9979*10^8) মিটার(m)/সেকেন্ড(s)।

এই আলোর গতি মাপার পরীক্ষা অনেক ব্যক্তি অনেকভাবে করেছেন । 

১৬৩০ সালে প্রথম এ পরীক্ষাটি করেছেন গ্যালিলিও। তিনি ও তাঁর সহযোগী ১.৫ কি.মি. দূরত্বের দুটি পাহাড়ের চূড়ায় প্রদীপ নিয়ে দাঁড়ান। শর্ত হচ্ছে যখন একজন আলো জ্বালাবে তখন অপরজনও আলো জ্বালিয়ে সাথে সাথে বন্ধ করে দিবেন। এভাবে একজন বাতি জ্বালানোর কতক্ষণ পর সে অপর প্রান্তের আলো দেখতে পান তা নোট করে বের করেন আলোর গতি ০.০০০০৫ কি.মি./সেকেন্ড। তবে এত আগে এত ক্ষুদ্র সময় পরিমাপের ঘড়ি না থাকায় তিনি বলেন যে "আলোর গতি অনেক বেশি"।

তারপর ১৬৭৬ সালে আরেকটি পরীক্ষা করেন ড্যানিশ পদার্থবিদ Ole Rømer। তিনি টেলিস্কোপ দিয়ে বৃহস্পতি গ্রহ ও তার একটা চাঁদ আইও (IO) এর গতি পর্যবেক্ষণ করে জানান যে আলো পৃথিবীর ব্যাসের সমান দূরত্ব অতিক্রম করতে ২২ মিনিট সময় নেয়। ঐ সময় যদি পৃথিবীর ব্যাস জানা থাকতো তাহলে তিনি হয়তো আলোর গতি বের করতেন (2.27*10^8)  m/s যা ব্যবহার অযোগ্য।

১৮৪৯ সালে ফরাসি পদার্থবিদ Armand Hippolyte Louis Fizeau সে সময়ের সবচেয়ে ভালো ফলাফলটি দেন। তিনি সমান পুরুত্বের ৭২০ টি দাঁতওয়ালা ও ৭২০টি ফাঁকওয়ালা একটি গোল চাকতি (wheel) ব্যবহার করেন। এর সামনে হেলানো আয়না ও পিছনে ঠিক ১৬ কি.মি. দূরে আরেকটি আয়না বসিয়ে সামনের আয়না দিয়ে আলো প্রবেশ করান। আলো আয়না দিয়ে প্রতিসরিত হয়ে 13 rev/sec-এ ঘূর্ণনশীল চাকতির ক্ষুদ্র ফাঁক দিয়ে একবার প্রবেশ করে ১৬ কি.মি. দূরের আয়নায় প্রতিফলিত হয়ে পুনরায় আর চাকতিটির ক্ষুদ্র ফাঁক দিয়ে বের না হয়ে চাকার দাঁতে আটকে পড়ত। তখন সামনে থেকে তিনি কোনো আলো দেখতে পেতেন না। এভাবে, 

১টি দাঁতের দৈর্ঘ্য অতিক্রমে সময় লাগে {১/(১৩*৭২০*২)} সেকেন্ড = আলো ১৬০০০ মিটার যায় {১৬০০০/c} সেকেন্ডে । 

এখানে থেকে Fizaeu C= ৩.১৩*১০^৮ মি/সে. হিসাব দেন যা অনেকটাই গ্রহণযোগ্য।

১৮৬২ সালে Léon Foucaul ঘূর্ণণশীল আয়না ব্যবহার করে (২.৯৮*১০^৮ মি/সে.) এর হিসাব দেন যেখানে (+,-৫০০) পর্যন্ত error ছিল । ১৮৭৭ সাল থেকে ১৯৩১ পর্যন্ত Albert Abraham Micheson (ইনিই ইন্টারের ফিজিক্স বইয়ের মাইকেলসন-মোরলের সেই ভদ্রলোক), Foucaul-এর থিওরীকে পরিমার্জন করে আরো ভালো ঘূর্ণনশীল আয়না ব্যবহার করে আলোকে লস অ্যাঞ্জেলেসের St. Mount থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার Mount San Antonio পর্যন্ত পরিভ্রমণ করিয়ে আলোর আরো নিখুঁত গতি পান (২.৯৯৭৯৬*১০^৮ মি/সে.) যেখানে error value মাত্র (+,-৫০)।

মাক্সওয়েলের তরঙ্গতত্ত্ব প্রকাশিত হবার পর আলোর গতি নির্ণয়ের পথ আরো সুগম হয় । ১৯৫৮ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী (এখনো জীবিত) #Keith_Davy_Froome মাইকক্রোওয়েভ ইন্টারোফেরোমিটার ব্যবহার করে (২.৯৯৭৯২৫*১০^৮ মি/সে.) মান পান যেটা কেবলই (+,-০.১) error দেখায় । 

বিজ্ঞানী Lord Kelvin (১৮৭৯) ও Isidor Rabi (১৯৪৫) প্রস্তাবিত ধারণা থেকে উদ্ভাবিত Atomic Clock ও ১৯৭০ এর দিকের পরিমার্জিত লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরবর্তীতে অনেক নিঁখুত পরীক্ষা চালানো হয় । Kabir's প্রথম যাঁরা এর সফল পরীক্ষা করেন বলে জানা যায় তাঁরা হলেন KM Evenson সহ প্রমুখ। মূলত, পরপর নিঃসরিত লেজার বীম কোনো আয়নায় প্রতিফলিত হয়ে Atomic Clock-এ একবার পড়লেই সেটা রেকর্ড হয়ে যায়। এভাবে প্রতিটা বীমের মোট ভ্রমণ দূরত্ব ও Time delay মেপে আলোর গতি পর্যবেক্ষণ করা হয় । Evenson-এর পাওয়া ফলাফলটি ছিল (2.997924574*10^8  মি/সে.), ত্রুটি মাত্র (+,- ০.০০১)। 

Atomic Clock আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা থিওরী মেনে চলে যেখানে ১ মাইক্রো সেকেন্ড ভুল হলে প্রায় ৩০০ মিটারের গড়মিল হবে । আইনস্টাইন ও নিউটন আলোর বেগ মাপার অনেক পরীক্ষা করেছেন তবে সমসাময়িক ফলাফলের ভিত্তিতে তাঁদের এই পরীক্ষাগুলো অতটা স্বীকৃতি পায়নি। এছাড়াও আধুনিক GPS-এ Atomic Clock ব্যবহার করা হয় যা আলোর গতির প্রায় শতভাগ নির্ভুল মান দেয়।

©Kabir's

0 টি ভোট
করেছেন (20,400 পয়েন্ট)
অনেক বিজ্ঞানী অনেকভাবে আলোর বেগ নির্ণয় করেছেন ৷ ১৯৮৩ সালে নির্ণিত মানটি যা ২৯৯৭৯২.৪৫৮ কিমি/সেকেন্ড সর্বজন গৃহীত ত্রুটিহীন মান বলে স্বীকৃত ৷ তরঙ্গের সূত্র দিয়ে খুব সহজেই আলোর বেগের মান পাওয়া যায় ৷ সূত্র c = fλ যেখানে c হলো আলোর বেগ, f হলো কম্পাঙ্ক ও λ তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৷ উদাহরণ স্বরূপ যে আলো দিয়ে আমরা সব কিছু দেখি সেই আলো বা দৃশ্যমান সাদা আলো সাত রঙের সমষ্টি ৷ এর মধ্যে বেগুনি আলোর জন্য গড় তরঙ্গদৈর্ঘ্য 400 ন্যানোমিটার = 400×10^–9 m এবং গড় কম্পাঙ্ক 750 টেরাহার্টজ = 750×10¹² হার্টজ ৷
তাহলে, c = 400×10^–9×750×10¹² = 3×10^8 মিটার/সেকেন্ড = 3,00,000 কিমি/সেকেন্ড ৷
এরকম,
নীল আলো = ২,৯৯,৭০০ কিমি/সে.
আসমানি আলো = ২,৯৯,৫০০ কিমি/সে.
সবুজ আলো = ২,৯৯,৭৫০ কিমি/সে.
হলুদ আলো = ২,৯৯,২৮০ কিমি/সে.
কমলা আলো = ৩,০০,০০০ কিমি/সে.      
লাল আলো = ২,৯৯,৩৭৬ কিমি/সে.    
তাহলে দৃশ্যমান আলোর গড় বেগ = ২,৯৯,৬৫৮ কিমি/সে. ৷ এভাবে অবলোহিত, অতিবেগুনি সব আলোর বেগ করা যাবে ৷

১৯৮৩ সালে যত রকম আলো হওয়া সম্ভব সব আলোর গড় বেগ শূন্য মাধ্যমে ২,৯৯,৭৯২.৪৫৮ কিমি/সে. গণনা করা হয় ৷ সেকেন্ডে ৩ লাখ কিলোমিটার মানটা আসন্ন মান ৷ এই মান শূন্য মাধ্যমে বা ভ্যাকুয়ামে ৷ শূন্য মাধ্যম একটা স্বচ্ছ মাধ্যম ৷ অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে আলো প্রবেশ করলে মাধ্যমের ঘনত্ব বাড়ে-কমে সে অনুযায়ী আলোর বেগও কমে-বাড়ে ৷ শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ সবচেয়ে বেশি ৷ বাতাস মাধ্যমে তার চেয়ে কম, পানিতে তার চেয়ে কম, কাচে আরও কম, হীরাতে এদের চেয়েও কম ৷ মাধ্যম যত ঘন হবে আলোর বেগ তত কমবে ৷

 

- রাশিক আজমাইন

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 162 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
2 টি উত্তর 690 বার দেখা হয়েছে
01 অগাস্ট 2022 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন স্বপ্নিল (7,560 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
1 উত্তর 1,492 বার দেখা হয়েছে
17 অক্টোবর 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন তানভীর. (220 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
1 উত্তর 9,725 বার দেখা হয়েছে
03 অগাস্ট 2021 "প্রযুক্তি" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Muaz Affan Rafin (1,630 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
1 উত্তর 449 বার দেখা হয়েছে
29 সেপ্টেম্বর 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন shahadat (2,110 পয়েন্ট)

10,761 টি প্রশ্ন

18,429 টি উত্তর

4,739 টি মন্তব্য

253,684 জন সদস্য

43 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 43 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayesha Akter

    160 পয়েন্ট

  2. Zeet Baral 1

    140 পয়েন্ট

  3. Md Abu Mostafa

    130 পয়েন্ট

  4. Raha

    120 পয়েন্ট

  5. Alisha178911

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা #science পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #biology বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক শব্দ ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম হরমোন বাংলাদেশ বিড়াল
...