Nishat Tasnim-
সন্তানের শারীরিক, মানসিক গড়ন, বৈশিষ্ট্য অনেকটাই নির্ধারিত হয় বাবা মায়ের থেকে পাওয়া জিনের সূত্রে। বিভিন্ন জেনেটিক রোগ এবং স্বাস্থ্য সমস্যাও একই ভাবে পরিবাহিত হতে পারে। রক্তের গ্রুপও এরকম একটি বৈশিষ্ট্য যার উপাদান বাবা মায়ের থেকে আসে। তবে তার মানে এই নয় যে সন্তানের ব্লাড গ্রুপ বাবা অথবা মায়ের সাথে পুরোপুরি মিলতেই হবে। বিষয়টি বুঝতে হলে একটু বিস্তারিত জানা প্রয়োজন।
আমাদের রক্তকণিকার গায়ে কিছু বিশেষ প্রোটিন বা এন্টিজেন থাকে যার উপর নির্ভর করে আমাদের রক্তের গ্রুপ কি হবে। এগুলো প্রধানত চার ধরণের - এ, বি, এবি এবং ও। যদি রক্তকণিকার গায়ে ‘এ’ প্রোটিন থাকে, তবে ব্লাড গ্রুপ ‘এ’। একইভাবে ব্লাড গ্রুপ ‘বি’ নির্ধারিত হয়। আর যদি ‘এ’, ‘বি’ দু’টো প্রোটিনই থাকে তবে সেই ব্যক্তির গ্রুপ ‘এবি’। ‘ও’ প্রোটিনটি হচ্ছে নিষ্ক্রিয় প্রকৃতির, অর্থাৎ ‘এ’ অথবা ‘বি’ প্রোটিনের সাথে রক্তকণিকার গায়ে এটি উপস্থিত থাকলেও এর কোন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় না, রক্তের গ্রুপ ‘এ’ বা ‘বি’ই হয়ে থাকে। তবে যদি শুধুমাত্র ‘ও’ প্রোটিন বর্তমান থাকে, তখন রক্তের গ্রুপ হবে ‘ও’।
তাহলে সন্তানের ব্লাড গ্রুপ নির্ধারিত হবে বাবা মায়ের কাছ থেকে সে কোন প্রোটিনের জিনটি পেয়েছে তার ভিত্তিতে। এমনও হতে পারে যে বাবা অথবা মায়ের রক্তকণিকায় ‘এ’ কিংবা ‘বি’ এর সাথে ‘ও’ প্রোটিন উপস্থিত ছিল এবং এই প্রোটিনের জিনটিই কেবল সন্তানের শরীরে গিয়েছে। এক্ষেত্রে বাবা মায়ের দেহে ‘এ’ বা ‘বি’ গ্রুপের রক্ত থাকা সত্ত্বেও সন্তান ‘ও’ গ্রুপের হবে। আবার একজনের থেকে ‘এ’ এবং অপরজনের থেকে ‘বি’ প্রোটিনের জিন পেলে সন্তানের ব্লাড গ্রুপ হবে ‘এবি’।