খাবার খাওয়ার সাথে সাথে মলত্যাগ আপনার পরিপাকতন্ত্র কম কার্যকর বা অতি কার্যকর এমনটা বোঝায় না। এনওয়াইইউ ল্যানগোন মেডিক্যাল সেন্টারের সহকারী অধ্যাপক ও পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ লিসা গাঞ্জু বলেন, ‘খাবার খাওয়ার ঠিক পরই মলত্যাগ হলো একটি রিফ্লেক্স, যা শিশুদের রয়েছে।’ কিছু লোকের ক্ষেত্রে এই রিফ্লেক্স কখনো চলে যায় না। তবে তিনি আরো যোগ করেন, এর আরেকটি কারণ হতে পারে আপনার ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক্ট ভালোভাবে বিকশিত হয়নি।
নিউ ইয়র্ক-প্রেসবাইটেরিয়ান অ্যান্ড ওয়েইল কর্নেল মেডিসিনের অন্তর্গত জে মোনানহান সেন্টার ফর গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল হেলথের পরিচালক ফেলিস স্কনোল সাসম্যান বলেন, ‘যেসব লোকের এই রিফ্লেক্স রয়েছে তাদের খাবার খাওয়ার পর বাথরুমের কাছে থাকা ভালো এবং এটি নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।’
তবে এক্ষেত্রে ব্যাপারটা এমন নয়, যে আপনি যা মাত্র খেয়ে এসেছেন তাই–ই এক্ষুনি বেরিয়ে গেল। এটা পূর্বের খাবার গুলো শোষণের পর বেরিয়ে যায়, মাত্র খাওয়া খাবার গুলোর পুষ্টি শোষণের জন্য আপনার দেহ পর্যাপ্ত সময় পাবে।
কিন্তু তরল মল, পানিতে ভাসমান মল ও তীব্র দুর্গন্ধময় মল এটা ইঙ্গিত দিতে পারে যে, আপনার শরীরে ফ্যাট ভালোভাবে শোষিত হয়নি অথবা আপনার ডায়রিয়া রয়েছে- বলেন ডা. স্কনোল-সাসম্যান। ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে বাওয়েল মুভমেন্টের ওপর শরীরের নিয়ন্ত্রণ থাকে না বললেই চলে এবং অবিলম্বে বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে, আপনি এইমাত্র খাবার খেলেও কিংবা না খেলেও। ডায়রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সাধারণ উপসর্গগুলো হলো:
* তরল মল
* পেট ব্যথা
* পেটফাঁপা
* বমিবমি ভাব
* জরুরি ভিত্তিতে বাথরুমে যাওয়া
* মলে রক্ত(এটি অনেক সময় পাইলস বা অর্শ্বরোগের উপসর্গও হয়)।
যাদের মধ্যে শিশুদের মতো এই রিফ্লেক্স রয়েছে তাদের এটা মনে রাখা ভালো যে, খাবার খাওয়ার পর মলত্যাগের জন্য কোনো স্বাভাবিক সময় নেই, যখন তখন মলত্যাগের তাড়না আসতে পারে। কিছু পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞের মতে, উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার (যেমন- মসুর ডাল, শাকসবজি ও গোটা শস্য) হজম হতে অন্যান্য খাবারের চেয়ে বেশি সময় নেয়।
যেসব লোকের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস), ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ বা অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ (আইবিডি), ক্রন’স রোগ অথবা সেলিয়াক রোগের মতো মেডিক্যাল কন্ডিশন রয়েছে, তাদের খাবার খাওয়ার পর অন্যদের চেয়ে বেশি ঘনঘন বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, কারণ কিছু খাবার উপসর্গকে উদ্দীপ্ত করে।
তথ্যসূত্র: এনটিভি, রাইজিং বিডি।