প্রশ্ন: মানুষ সেই ১৯৬৯ সালে চাঁদে গেলো কিন্তু বর্তমানে সব প্রযুক্তি এতো উন্নত হওয়া সত্বেও কেনো মানুষ আর চাঁদে যায় না? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
299 বার দেখা হয়েছে
"বিবিধ" বিভাগে করেছেন (260 পয়েন্ট)
প্রশ্ন: মানুষ সেই ১৯৬৯ সালে চাঁদে গেলো কিন্তু বর্তমানে সব প্রযুক্তি এতো উন্নত হওয়া সত্বেও কেনো মানুষ আর চাঁদে যায় না?

3 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (260 পয়েন্ট)

উত্তর:
সর্বপ্রথম কথা আপনার জানায় ভুল আছে। সর্বশেষ মানুষবাহী সফল চন্দ্রমিশন ১৯৬৯ সালে না, হয়েছে ১৯৭২ সালে।
১৯৬৯-১৯৭২ সাল এই ৩ বছরে মোট ৬টি সফল মানুষবাহী মিশন হয়েছে। এই ৬টি অ্যাপোলো মিশনে ১২ জন মহাকাশচারী চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে। এর মধ্যে সর্বপ্রথম মানুষবাহী চন্দ্র মিশন নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। এই বিতর্কের শুরু মূলত বিল কেইসিং এর লেখা একটা কন্সপিরেসি থিউরি "We never go to the Moon" প্রকাশ হওয়ার পর থেকে।
তবে শুধুমাত্র প্রথম চাঁদে অবতরণ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও পরবতী ৫টি মিশন নিয়ে কিন্তু কোনো বিতর্ক নেই। কিন্তু  আমাদের বাংলাদেশের অনেকেই বাকি সফল মিশনগুলোর কথা না জেনেই বলে বসে ১৯৬৯ এর পর মানুষ চাঁদে মিশন করলো না কেনো। তাদেরকে আবারো জানাতে চাই ১৯৬৯ সালে সর্বপ্রথম সফল মানুষবাহী চন্দ্র মিশন ছিলো, মোটেই এটা একমাত্র সফল মিশন নয় এবং শেষ মিশনও এটা নয়। সর্বশেষ মানুষবাহী চন্দ্র মিশন ১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে হয়েছিলো। অ্যাপোলো ১১, ১২, ১৪, ১৫, ১৬ এবং ১৭ অভিযানগুলোতে মানুষ সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করে।

তৎকালীন সময়ে নাসার বিপক্ষে সবথেকে শক্ত অবস্থানে ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়ন। অ্যাপোলো-১১ মিশনের সকল কিছু সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের নজরদারিতে রেখেছিলো এবং প্রথম মানুষবাহী চন্দ্র মিশনকে সোভিয়েত ইউনিয়ন মেনেও নিয়েছে। যদি এই মিশনটা সত্যি না হতো তাহলে কেনো নাসার সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী সোভিয়েত ইউনিয়ন এটাকে মেনে নিলো? আপনার প্রতিপক্ষ যদি কোনো মিথ্যা প্রচার করে তাহলে তো আপনি চুপ করে তার কথা মেনে নেবেন না, অবশ্যই সেটা নিয়ে কথা বলবেন।

এখন আসি কেনো পরবর্তীতে চন্দ্রমিশন বাদ দেওয়া হলো তার উত্তরে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৬০-এর দশকে চাঁদে পৌঁছানোর জন্য একটি প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ছিল। ১৯৭২ সালে নাসা শেষবারের মতো চাঁদে নভোচারীদের পাঠায় অ্যাপলো-১৭ মিশনে এবং এটাই ছিলো শেষ অ্যাপোলো মিশন।

চাঁদে যাওয়ার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথমত, চাঁদ পৃথিবী থেকে দূরে। চাঁদে পৌঁছানোর জন্য মহাকাশযানকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও মধ্যাকর্ষণকে ছাড়িয়ে যেতে হবে। দ্বিতীয়ত, চাঁদে কোনও বায়ুমণ্ডল এবং পানযোগ্য পানি নেই তাই মহাকাশচারীদেরকে সমস্ত অক্সিজেন এবং পানি নিয়ে যেতে হবে।

তৃতীয়ত, চাঁদে যাওয়ার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়, এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। প্রেসিডেন্ট জন কেনেডি অ্যাপোলো মিশনে অনুমান করেছিল $7 বিলিয়ন ডলার খরচের কিন্তু শেষ পর্যন্ত মোট খরচ ছিল $20 বিলিয়ন (সোর্স: Royal Museum Greenwich) ডলার। একটি মহাকাশযান তৈরি করা, রকেটের মাধ্যমে তাকে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বাইরে বের করা এবং চাঁদে পাঠানো খুব ব্যয়বহুল। এছাড়াও, নভোচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তাদেরকে চাঁদে নিয়ে যাওয়া আবার তাদেরকে ফেরত আনাও ব্যয়বহুল।
এছাড়াও চন্দ্র মিশন নিয়ে জাতীয় সমর্থনও কম ছিল। অ্যাপোলো মিশনগুলো সমস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অস্থিরতার পটভূমিতে সংঘটিত হয়েছিল এবং মহাকাশ ভ্রমণে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা আমেরিকান জনসাধারণের কাছে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল।
এইসব  চ্যালেঞ্জগুলোর কারণে নাসা আর কোনো নভোচারী পাঠায়নি। তবে, অনেক দেশ চাঁদে আবার যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। নাসা সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুনরায় মানুষবাহী চন্দ্রমিশন করবে এবং ২০২৪-২৫ সাল নাগাদ আর্টেমিস মিশনের আওতায় মানুষবাহী চন্দ্রমিশন হওয়ার কথা রয়েছে। এই বছরের শুরুর দিকে নাসা অফিসিয়ালি এই মিশনের ক্রুদের সাথে বিশ্ববাসীর পরিচয় করিয়েছে।

তথ্যসূত্র: NASA, Space.com, Royal Museum Greenwich, Spaceflightnow.com, Britannica, National Geographic, BBC

বিবিসির এই আর্টিকেল টা পড়তে পারেন। এখানে অনেক তথ্য আছে:
https://www.google.com/amp/s/www.bbc.com/bengali/news-62727556.amp

© Mahabub Islam

Source-1: https://www.space.com/all-moon-missions 

Source-2: https://www.rmg.co.uk/stories/topics/why-did-we-stop-going-moon 

Source-3: https://spaceflightnow.com/2023/04/03/nasa-names-crew-for-first-human-mission-to-the-moon-in-more-than-50-years/

Source-4: (আর্টেমিস মিশন) https://www.nasa.gov/specials/artemis/

Source-5: https://www.britannica.com/story/how-many-people-have-been-to-the-moon

Source-6: https://kids.nationalgeographic.com/history/article/moon-landing

0 টি ভোট
করেছেন (9,190 পয়েন্ট)
এখানে দেখতে পারুনঃ https://www.youtube.com/watch?v=syTlKXgcWdM
0 টি ভোট
করেছেন (1,010 পয়েন্ট)

১৯৬৯ সালে মানুষ প্রথম চাঁদে পৌঁছেছিল, এটা সত্যি। কিন্তু বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও মানুষ আর চাঁদে যায় না, তার কারণ বেশ কিছু:

কারণ

  • উদ্দেশ্যের অভাব: চাঁদে যাওয়ার প্রথমিক উদ্দেশ্য ছিল মহাকাশ প্রতিযোগিতায় সোভিয়েত ইউনিয়নকে ছাড়িয়ে যাওয়া। সেই লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার পর চাঁদে বারবার যাওয়ার যৌক্তিকতা কমে যায়।
  • অর্থনৈতিক দিক: চন্দ্র অভিযান অত্যন্ত ব্যয়বহুল। বর্তমানে, মহাকাশ গবেষণার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ অন্যান্য প্রকল্পে (যেমন মঙ্গল গ্রহ অভিযান) ব্যয় করা হচ্ছে।
  • নিরাপত্তা ঝুঁকি: চন্দ্র অভিযানে নভোচারীদের জীবনের ঝুঁকি থাকে। বারবার ঝুঁকি নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই।
  • প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা: চাঁদে দীর্ঘস্থায়ী বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এখনও পুরোপুরি বিকশিত হয়নি।
  • অন্যান্য গ্রহের প্রতি আগ্রহ: বর্তমানে, মঙ্গল গ্রহ, শুক্র গ্রহ, এবং অন্যান্য গ্রহের প্রতি বিজ্ঞানীদের আগ্রহ বেশি।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা:

যদিও বর্তমানে মানুষ চাঁদে যাচ্ছে না, তবে ভবিষ্যতে আবার চাঁদে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ:

  • চন্দ্র সম্পদের প্রতি আগ্রহ: চাঁদে পানি, খনিজ সম্পদ, এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পদের সম্ভাবনা রয়েছে।
  • চাঁদকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার: চাঁদকে মঙ্গল গ্রহ এবং অন্যান্য গ্রহে যাওয়ার জন্য ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • নতুন প্রযুক্তির বিকাশ: নতুন প্রযুক্তির বিকাশ চন্দ্র অভিযানকে আরও সহজ ও নিরাপদ করে তুলতে পারে।
 

বর্তমানে মানুষ চাঁদে না গেলেও ভবিষ্যতে আবার চাঁদে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। চন্দ্র সম্পদের প্রতি আগ্রহ, চাঁদকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার, এবং নতুন প্রযুক্তির বিকাশ ভবিষ্যতের চন্দ্র অভিযানকে সম্ভব করে তুলতে পারে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+2 টি ভোট
1 উত্তর 264 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
1 উত্তর 301 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 215 বার দেখা হয়েছে

10,723 টি প্রশ্ন

18,367 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

241,447 জন সদস্য

32 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 32 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Hasan rafi

    140 পয়েন্ট

  5. Israt Jahan Taha

    130 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন গ্রহ রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...