উৎস এবং পর্যবেক্ষকের মধ্যকার আপেক্ষিক গতির কারণে কোন তরঙ্গ-সংকেতের কম্পাঙ্ক পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে ডপলার ক্রিয়া (ইংরেজি: Doppler Effect) বলা হয়।[১][২] ক্রিস্টিয়ান আনড্রেয়াস ডপলার এর নামে এই ক্রিয়াটির নামকরণ করা হয়েছে।
গাড়ির সাইরেনের ক্ষেত্রে ডপলার ক্রিযা
রাজহাসের পানিতে চলার সময় ডপলার ক্রিযা
একটি তরঙ্গ উৎস বামদিকে অগ্রসর হচ্ছে। ডপলার ক্রিয়ার কারণে কমাঙ্ক বামে বেশি এবং ডানে কম।
ডপলার ক্রিয়ার সমীকরণ সম্পাদনা
ধরা যাক, কোন একটি উৎস থেকে T সময় পরপর একটি করে তরঙ্গ চূড়া নির্গত হচ্ছে। এখন যদি উৎসটি জনৈক পর্যবেক্ষক থেকে V বেগে দূরে সরে যেতে থাকে, তাহলে পরপর দুটি তরঙ্গ চূড়া পর্যবেক্ষকের কাছে পৌছানোর মধ্যে উৎস আরো VT দূরত্ব অতিক্রম করবে। এর ফলে তরঙ্গ চূড়াগুলি উৎস হতে নির্গত হয়ে পর্যবেক্ষকের নিকট পৌছতে আগের চেয়ে VT/c (এখানে c হলো শব্দের দ্রুতি) পরিমাণ বেশি সময় নেবে। সুতরাং পরপর দুটি তরঙ্গ চূড়া পর্যবেক্ষকের নিকট পৌছাতে অতিবাহিত সময়,
{\displaystyle T'=T+({\frac {VT}{c}})}T' = T + ( \frac {VT}{c} ) হবে।
উৎস হতে নির্গত হওয়ার সময়কার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য,
{\displaystyle \lambda =\,cT}\lambda = \,cT ;
আর পর্যবেক্ষকের নিকট পৌছানোর সময়কার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য,
{\displaystyle \lambda '=\,cT'}\lambda' = \,cT' হবে।
সুতরাং, এই দুই তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের মধ্যকার অনুপাত,
{\displaystyle \lambda '/\lambda =\,T'/T=}\lambda'/\lambda = \,T'/T = 1 {\displaystyle +({\frac {V}{c}})}+ (\frac {V}{c}) হবে।
উৎস যখন পর্যবেক্ষকের দিকে এগিয়ে আসতে থাকবে তখনকার হিসাব-নিকাশও হবে উপর্যুক্ত পদ্ধতির অনুরূপ, কেবল V এর জায়গায় বসবে -V ।
যদি উৎসের দিকে পর্যবেক্ষক এগিয়ে আসে, তাহলেও পর্যবেক্ষক উৎসের থেকে বেশি মাত্রায় তরঙ্গচূড়া অনুভব করবে। এটাও কম্পাঙ্ক পরিবর্তনের কারণ।
ধরা যাক উৎসের থেকে x দূরত্ব দূরে পর্যবেক্ষক একটি তরঙ্গচূড়া অনুভব করে, আর T' সময় পরে তার পরের তরঙ্গচূড়াটি অনুভব করে, তাহলে,
{\displaystyle x=(V+c)T'}
x=(V+c)T'
যদি পর্যবেক্ষক স্থিতিশীল থাকত তাহলে ও T সময় বাদে তরঙ্গচূড়াটি অনুভব করত, যেখানে
{\displaystyle x=cT}
সুতরাং,
{\displaystyle cT=(V+c)T'} cT=(V+c)T'
সুতরাং, এই দুই তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের মধ্যকার অনুপাত,
{\displaystyle \lambda '/\lambda =\,T'/T={\frac {1}{1+({\frac {V}{c}})}}}\lambda'/\lambda = \,T'/T =\frac{1}{1 + (\frac {V}{c})} হবে।
পর্যবেক্ষক যখন উৎস থেকে দূরে সরে যেতে থাকবে তখনকার হিসাব-নিকাশও হবে উপর্যুক্ত পদ্ধতির অনুরূপ, কেবল V এর জায়গায় বসবে -V ।
ধরা যাক পর্যবেক্ষক উৎসের দিকে {\displaystyle V_{1}} V_1 দ্রুতি নিয়ে এগিয়ে যায়, আর উৎস পর্যবেক্ষকের দিকে {\displaystyle V_{2}} V_2 দ্রুতি নিয়ে এগিয়ে আসে, তাহলে, এই দুই তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের মধ্যকার অনুপাত\lambda'/\lambda = \,T'/T =\frac{1 - (\frac {V_2}{c})}{1 + (\frac {V_1}{c})} হবে।
(সর্বোপরি, এই পদ্ধতিটি শব্দ তরঙ্গ ছাড়াও বহু প্রকার তরঙ্গের জন্য সমভাবে প্রযোজ্যে, তবে সেই সব তরঙ্গের দ্রুতি আলোর দ্রুতির থেকে অনেক কম হতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ, কন্যাস্তবকের অন্তর্গত ছায়াপথগুলি আমাদের ছায়াপথ, আকাশ-গঙ্গা, হতে সেকেন্ডে প্রায় ১,০০০ কি. মি. গতিতে দূরে সরে যাচ্ছে। আলোর দ্রুতি হলো প্রতি সেকেন্ডে ৩,০০,০০০ কি. মি. । কাজেই কন্যাস্তবক থেকে আগত কোন বর্ণালী-রেখার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য {\displaystyle \lambda '}\lambda', তার প্রকৃত মান {\displaystyle \lambda }\lambda অপেক্ষা {\displaystyle (\lambda '/\lambda )}(\lambda'/\lambda) গুণ বৃহত্তর হবে যেখানে
{\displaystyle \lambda '/\lambda =1+{\frac {1000km/s}{300000km/s}}=1.0033},)