“মানুষের মতো বিড়ালের ঘর্মগ্রন্থি নেই, কিন্তু এরাও ঘামে। এদের থাবার মাধ্যমে ঘাম নির্গত হয় এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়।&rsqu
মাঝেমধ্যে বিড়ালের ভেজা পদাঙ্ক মাটিতে দেখা যায়। কিন্তু এদের পদচিহ্ন ঘাম বাষ্পীভূত হলে আর দেখা যায় না। এরা পদচিহ্নের মাধ্যমে সঙ্গীকে খুঁজে বেড়ায় এবং একে অপরের সামনে নিজেকে জাহির করে। কুকুরের মতো বিড়ালও মাটিতে হামাগুড়ি দেয় যাতে শরীরের শীতলতা বৃদ্ধি পায় এবং উষ্ণতা হ্রাস পায়। এভাবে এরা দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। আবার, এদের লালাগ্রন্থি হতে নিঃসৃত লালাও ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে।
বিড়ালের বেশি গরম লাগলে, এরা খুব ঘামতে থাকে। এদের থাবাতে ভেজা ঘাম দেখা যায়। হয়ত খেয়াল করে থাকবেন, ঘরের তাপমাত্রা বেশি থাকলে এরা ক্রমাগত মানুষের পা শুকতে থাকে। বিড়ালের বাচ্চারা বেশি খেলাধুলা করে বলে এরা খুব ঘামে। আবার, স্নায়বিক উত্তেজনার কারণেও এরা ঘামে।
বিড়াল মানুষের মতো খুব বেশি ঘামে না। তাই এতে তাদের খুব অসুবিধে হয়। এরা ঘামলে, খুব দ্রুত শীতল হয়ে যায়। মনে রাখবেন, কখনো আপনার বিড়ালকে উষ্ণ কিংবা বদ্ধ পরিবেশে রাখবেন না। যেমন, গাড়িতে। বিড়াল খুব বেশি গরম সহ্য করতে পারে না। এতে তারা মারাও যেতে পারে।
বিড়ালের দেহের বিভিন্ন অংশের গ্রন্থিতে সুগন্ধি থাকে। বিশেষ করে এদের চোয়ালে সুগন্ধি ধারণকারী গ্রন্থি থাকে।
যখন এরা তাদের সুগন্ধিগুলো আসবাবপত্রে ছড়িয়ে দেয়, তখন অবশ্য মানুষ এর গন্ধ না পেলেও অন্য বিড়াল এই সুগন্ধি অনুভব করতে পারে। আসলে, বিড়াল কোনো আসবাব পছন্দ করলে, তাতে তার সুগন্ধি ছড়িয়ে দেয়। তবে এই সুগন্ধি শুধুমাত্র তারাই অনুভব করতে পারে এবং মনে করতে পারেন, তা আপনাদের বাড়ির প্রসাধনীর মতোই।
বিড়ালের দেহের সুগন্ধি দ্বারা তারা তাদের নিজস্ব সত্ত্বার পরিচয় দেয়। বিড়াল ও মানুষের মধ্যে একটি ব্যপারে খুব মিল। যখন আমরা আমাদের পছন্দের সুগন্ধি ঘরে ব্যবহার করি, তখন আমরা খুব স্বস্তি বোধ করি। বিড়ালের ক্ষেত্রেও তা একই।
মানুষ তার নিজস্ব সত্ত্বা প্রকাশ করার মাধ্যমে খুব আনন্দিত বোধ করে, বিড়ালের ক্ষেত্রেও তা সত্য। বিড়াল খুব অহংকার বোধ করে, যখন সে তার সুগন্ধি ছড়ানোর মাধ্যমে নিজ সত্ত্বা প্রকাশ করে।
আপনারা হয়ত ভাবছেন, আমি হঠাৎ বিড়ালের সুগন্ধি নিয়ে কথা বললাম কেন এবং তাদের সুগন্ধি গ্রন্থিগুলো আর কোথায় অবস্থান করে? সত্যি কথা বলতে, বিড়ালের সুগন্ধি গ্রন্থিগুলো মূলত তাদের থাবায় অবস্থান করে। আবার, এর মাধ্যমে এদের দেহের ঘাম নিঃসৃত হয়।