মাকড়সার টেলিপোর্টেশন কি সম্ভব? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
204 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (7,560 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (7,560 পয়েন্ট)
সম্পাদিত করেছেন

টেলিপোর্টেশনই যদি হবে, তবে সেট মাকড়সারই বা কেন? মানুষের হলে দোষ কী?

 

কারণ একটা গল্প। সেটার লেখক বাংলাদেশের আধুনিক থ্রিলারের জনক সদ্যপ্রয়াত কাজী আনোয়ার হোসেন। ভদ্রলোকের লেখার সঙ্গে যাঁরা পরিচিত, তাদের বলে দিতে হয় না, লেখক বা অনুবাদক হিসেবে কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম থাকা মানে বিশেষ কিছু। সবার প্রিয় কাজীদা ১৯৭৫ সালে লেখেন তিনটি উপন্যাসিকা নামে একটি বই। তাতে তিনটি রোমহর্ষক উপন্যাসিকা ঠাঁই পেয়েছিল। যার শেষটার নাম ‘মাকড়সা’। বাংলাদেশের কজন মানুষ টেলিপোর্টেশন নাম শুনেছে সেকালে, হাতে গুণেই হয়তো সংখ্যাটা বলে ফেলা যাবে। সেইসময় কাজীদার এই লেখা! অবশ্য গল্পটা মৌলিক নয়। ফরাসি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক জর্জ ল্যাংলানের ‘দ্য ফ্লাই’ গল্প অবলম্বনে লেখা। তবে সেই গল্পটিই বাংলা কল্পবিজ্ঞানে টেলিপোর্টেশনের মাইলফলক হয়ে আছে।

 

গল্পের শুরুটা হয় একটা খুনের রহস্য থেকে। বিখ্যাত বিজ্ঞানী ড. আশফাক চৌধুরীকে খুন করেন তাঁর স্ত্রী লায়লা আশফাক। ভাইয়ের কারখানায় হ্যামারের নিচে পিষ্ট করে। তারপর নিজেই ফোন করে জানিয়ে দেন ড. আশফাকের বড় ভাইকে। বলেন, পুলিশে খবর দিতে, পুলিশ যেন তাঁকে অ্যারেস্ট করে। এখান থেকেই আসলে রহস্যের শুরু। ভাবতে পারেন, খুনি নিজেই যখন স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন, তখন রহস্যটা আর রইল কোথায়!

 

আসলে ড. আশফাকের বড় ভাই মাহমুদ চৌধুরী ছোট ভাইয়ের বউকে খুনি ভাবতে পারছিলেন না। তাছাড়া সুখের সংসার তাঁদের, স্বামীকে খুন করার কোনো কারণ তিনি খুঁজে পেলেন না। পুলিশকর্তা বন্ধু আলি জাকেরকেও জানান কথাটা। কিন্তু পুলিশ সেই রহস্যের কিনারা করতে পারে না। কিছুতেই মোটিভ খুঁজে বের করতে পারে না ড. আশফাকের খুনের। ফলে রহস্য সমাধানে নিজেই লেগে পড়েন আশফাকের বড় ভাই মাহমুদ চৌধুরী। বেরিয়ে আসে এক অবিশ্বাস্য সত্য। কোনো একভাবে নাকি নিজেকে বদলে ফেলেছিনে আশফাক চৌধুরী। মেটামরফসিসের মতো বদল নয়। আবার স্পাইডারের মতোও নয়—আক্ষরিক অর্থেই তিনি পরিণত হয়েছিলেন মাকড়সা-মানবে। দেহের অর্ধেকটা মাকড়সা, অর্ধেক মানুষ। কুৎসিত প্রাণীতে পরিণত হওয়ার পর আর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কোনো উপায় ছিল না তাঁর। স্ত্রী-সন্তানেরা যেখানে তাঁকে দেখে আতঙ্কিত হয়, চিৎকার দিয়ে ওঠে, সেখানে বাইরের মানুষের সামনে তাঁর অবস্থাটা কেমন হবে, ভেবে দিশাহীন হয়ে পড়েন আশফাক চৌধুরী। নিজেকে আবার বদলে আগের জীবনে ফেরত আসার চেষ্টা তিনি করতেই পারেন। এমনকী সম্ভবও সেটা। কিন্তু সেজন্য চাই ওই মাকড়শাটাকে, যেটা তাঁর শরীরের অর্ধেকটা নিয়ে ভেগে গেছে। কিন্তু কিছুতেই সেই মাকড়সার হদিস তিনি পাননি। তাই স্ত্রীর সহযোগিতায় হ্যামারের নিচে নিজেকে সমর্পন করে বেছে নেন স্বেচ্ছা মৃত্যু। অন্যদিকে অপরাধবোধে ভোগা স্ত্রী ভাসুরের শরনাপন্ন হয়ে নিজে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলতে চান।

 

গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু এর কাহিনি ধাবিত হয়েছে আরও রহস্যের দিকে, ধীরে ধীরে ডালপালা মেলেছে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার অদ্ভুত নীতির দিকে।

 

আশফাক চৌধুরীর শরীরের এই পরিবর্তন কেন হলো?

 

উত্তর সোজা। নিজেকে টেলিপোর্টেশন করতে গিয়ে বিপত্তিটা ঘটিয়েছিলেন। সত্যি বলতে কি, নিজেকে টেলিপোর্টেশন করেওছিলেন তিনি। সফলও হয়েছিলেন। তবে ঝামেলা করেছিল একটা মাকড়সা। সেই ব্যাপারটা পুরোপুরি বুঝতে হলে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার আরেকটা অদ্ভুত নীতির সঙ্গে পরিচিত হতে হবে, যার পোশাকি নাম টেলিপোর্টেশন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আলোর চেয়েও বেশি গতিতে কোনো বস্তু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠানো সম্ভব। কীভাবে সম্ভব টেলিপোর্টেশন, আমরা বরং তাত্ত্বিক অনুসন্ধানই করতে পারি। টেলিপোর্টেশনের ভেতর-বাহির অনুসন্ধান করতে হলে আসলে আমাদের ফিরে যেতে কোয়ান্টাম এন্ট্যাঙ্গলমেন্টের কাছে। আর এন্ট্যাঙ্গলমেন্টের ধারণাটা এসেছিল ‘ইপিআর প্যারাডক্স’ নামে বিখ্যাত থট এক্সপেরিমেন্ট থেকে।

 

দুই

 

১৯৩৫ সাল। সে বছর আইনস্টাইন আরেকটি তোপ দাগেন কোয়ান্টাম বলবিদ্যার বিরুদ্ধে। প্রমাণ করতে চান কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অনিশ্চয়তায় ভরা তত্ত্বগুলো ভুল। এ জন্য তিনি সামনে টেনে আনেন আপেক্ষিকতা থেকে বেরিয়ে আসা তাঁর চিরায়ত সেই স্বীকার্য—কোনো বস্তুর বেগ আলোর বেগের চেয়ে বেশি হতে পারে না।

 

আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, মহাকর্ষ বল দূরক্রিয়া। অর্থাৎ মহাকর্ষ বলের খবর পৌঁছতে সময় লাগে না। ধরা যাক, কোনোভাবে সূর্য ধ্বংস হয়ে গেল। তার প্রভাব পৃথিবীর ওপরে পড়বে। সূর্য না থাকলে পৃথিবীও আর নিজের কক্ষপথে ঘুরতে পারবে না। সরলরৈখিক গতিতে ছিটকে যাবে অসীম মহাশূন্যের দিকে । কিন্তু পৃথিবী কতক্ষণে বুঝবে সূর্য ধ্বংস হয়ে গেছে? কখনই বা সে বন্ধ করে দেবে কক্ষপথে ঘোরা।

 

নিউটনের সূত্র এমনভাবে গড়ে উঠেছে, মহাকর্ষ বলের প্রভাব মুহূর্তেই কাজ করে, দুটি বস্তু যত দূরেই থাক। তাই সূর্য ধ্বংস হয়ে গেলে পৃথিবী সঙ্গে সঙ্গেই সে খবর পেয়ে যাবে। নিজের কক্ষপথে ঘোরা বাদ দিয়ে ধেয়ে যাবে অসীম মহাশূন্যের দিকে। কিন্তু আইনস্টাইন বললেন, সেটা সম্ভব নয়। বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব গড়েই উঠেছিল ওই স্বীকার্যের ওপর ভিত্তি করে—মহাবিশ্বে কোনো কিছুর বেগ আলোর চেয়ে বেশি হতে পারে না। তাই আলোর বেগের চেয়ে বেশি গতিতে কোনো তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব নয়। সুতরাং মহাকর্ষ বলকেও সেটা মানতে হবে। মহাকর্ষীয় প্রভাব কখনোই আলোর বেগের চেয়ে বেশি হতে পারে না। আইনস্টাইন তাঁর সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বে দেখালেন সেটাই। এটা করতেই গিয়েই বেরিয়ে এলো মহাকর্ষ তরঙ্গ নামে সম্পূর্ণ অপরিচিত এক তরঙ্গ। মহাকর্ষ বলের সংবাদ বয়ে নিয়ে যায় এই তরঙ্গ। সেটা আলোর বেগের সমান গতিতে।

 

আইনস্টাইন দেখলেন, অনিশ্চয়তা তত্ত্বে এসে ধাক্কা খায় তাঁর এই তত্ত্ব। কোয়ান্টাম কণাগুলো নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে মুহূর্তের মধ্যেই। এ জন্য তিনি সহকর্মী বোরিস পেডেলস্কি আর নাথান রোজেনকে সাথে নিয়ে ইপিআর (EPR—আইনস্টাইন, পেডোলস্কি আর রোজেনের নামের আদ্যক্ষর সাজিয়ে এই নাম) নামে একটা প্যারাডক্সের জন্ম হলো। মজার এবং মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া ধাঁধা। সেই ধাঁধা থেকেই জন্ম হলো কোয়ান্টাম এন্ট্যাঙ্গলমেন্ট নামে এক নতুন তত্ত্বের।

 

কোয়ান্টাম এন্ট্যাঙ্গলমেন্ট কী, সেটা বোঝার জন্য আমরা একটা সিনেমার উদাহরণ দিতে পারি। আশির দশকের জনপ্রিয় এক বাংলা সিনেমার নাম ‘লাইলি মজনু’। বিখ্যাত আরব্য লোককথা অবলম্বনেই সিনেমাটা বানানো হয়েছে। লাইলি-মজনুর প্রেমের গভীরতা কোন পর্যায়ে গিয়েছিল সেটা তুলে ধরা হয়েছে সিনেমায়। তাদের প্রেমে পারিবারিক ও সামাজিক বাধা প্রকট। সমাজ-সংসারের চাপে একসময় পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় দুজন । বহুদূরের তাদের অবস্থান। লাইলিকে ভুলে যাবার জন্য নানা রকম চাপ আসে মজনুর ওপর। সঙ্গে অবর্ণনীয় অত্যাচার। যারা মজনুকে অত্যাচার করছে তারা লাইলির আপনজন। লাইলির ক্ষতি তারা চায় না। কিন্তু ওরা জানে না, মজনুর গায়ে যে কটা আঘাত পড়ছে, তার সবগুলোর ব্যথা অনুভব করছে লাইলি। অনেক দূর থেকেও। এমনকি মজনুর পিঠে যেখানে যেখানে চাবুকের আঘাত পড়ছে, লাইলির পিঠেও সেখানে আঘাতের দাগ তৈরি হচ্ছে। এ অদ্ভুত, অবাস্তব ভালোবাসা, কখনোই সম্ভব নয়।

 

 

লাইলি-মজনুর সেই ভালোবাসায় যেন উঠে এল আইনস্টাইনের (EPR) প্যারাডক্সে। ১৯৩৫ সাল নাগাদ কোয়ান্টাম মেকানিকস তত দিনে দাঁড়িয়ে গেছে শক্ত ভিতের ওপর। ঠিক সে সময় আঘাত হানলেন আইনস্টাইন। রোজেন আর পেডোলস্কি নিয়ে ফিজিক্যাল রিভিউ-তে লিখলেন চার পৃষ্ঠার একটা প্রবন্ধ। তাতে একটা থট এক্সপেরিমেন্ট বা মানস পরীক্ষার মুখোমুখি দাঁড় করালেন পাঠককে। ধরা যাক, দুটো ইলেকট্রন ছুটছে পরস্পরের দিকে। দুটোর গতি আর ভরবেগ সমান। তারপর একসময় তাদের সংঘর্ষ হবে। পরস্পরকে তারা দেবে জোর ধাক্কা। দুটো ইলেকট্রন সমান গতিতে বিপরীত দিকে পরস্পরের দিকে ছুটতে থাকবে। ধরা যাক, এভাবে ইলেকট্রন দুটি পরস্পর থেকে এক কিলোমিটার দূরে চলে গেল। একজন বৈজ্ঞানিক একটা ইলেকট্রন পরীক্ষা করলেন। নির্ণয় করলেন তার ভরবেগ আর গতিশক্তি।

 

সেই মুহূর্তে অন্য ইলেকট্রনের ভাগ্যে কী ঘটছে? যখন বিজ্ঞানী ইলেকট্রনের গতিশক্তি বের করছেন, সেই মুহূর্তে তিনি অন্য ইলেকট্রনের গতিশক্তিও বের করে ফেলতে পারবেন। কারণ দুটোরই ভর, গতি সমান। তাই একটা দেখেই আরেকটার অবস্থান, ভরবেগ বের করে ফেলা যায়। অথচ সেই ইলেকট্রনটা তার থেকে এক কিলোমিটার দূরে। অর্থাৎ সময় ব্যয় না করে অতদূরের আরেকটা ইলেকট্রনের ধর্ম বের করে ফেলা যাচ্ছে।

 

ধরা যাক, এভাবে ইলেকট্রন দুটি চলতে চলতে বহুদূরের পথ পাড়ি দিল। দুজনের মধ্যবর্তী দূরত্ব এখন ২৫ লাখ আলোকবর্ষ। একটার অবস্থান আমাদের পৃথিবীতে হলে আরেকটা চলে গেছে অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সিতে। আমরা পৃথিবীর ইলেকট্রনের ভরবেগ আর গতিশক্তি ও অন্যান্য ধর্ম পরীক্ষা করে বলে দিতে পারি, অ্যান্ড্রোমিডাতে চলে যাওয়া সেই ইলেকট্রনের এই মুহূর্তের ধর্মও। সবচেয়ে বড় কথা একটা ইলেকট্রনের কোনো বৈশিষ্ট্য যদি আপনি বদলে ফেলেন অনিশ্চয়তা তত্ত্ব অনুযায়ী বহুদূরের সেই ইলেকট্রনের বৈশিষ্ট্য বদলে যাবে। ধরা যাক, পৃথিবীতে থাকা কোনো ইলেকট্রনের স্পিন যদি বদলে আপ থেকে ডাউন করা হয়, তাহলে এর এন্ট্যাঙ্গলড ইলেকট্রনের স্পিন বদলে ডাউন থেকে আপ হয়ে যাবে। আর সেটা ঘটবে মুহূর্তের মধ্যেই, তা সে যতই হোক ইলেকট্রন দুটির দূরত্ব।

 

এটাই ছিল আইনস্টাইন–পোডেলস্কি–রোজেনের সেই ইপিআর থট এক্সপেরিমেন্টের সারকথা। এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আসলে আইনস্টাইন কোয়ান্টাম অনিশ্চিয়তাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করলেন। এত দূর থেকেই যদি একটা কণার অবস্থা বলে দেওয়া যায়, কোয়ান্টামের অনিশ্চয়তা কোথায়? এটাও আইনস্টাইনের অন্যতম প্রশ্ন।

 

ইপিআর নাড়া দিল শ্রোডিঙ্গারকে। তিনি একটু অন্যভাবে ব্যাখ্যা করতে চাইলেন বিষয়টাকে। বললেন, দুটো কোয়ান্টাম কণা, পরস্পরের সাথে মিলিত হয়েছে। এতেই তাদের ভেতর তৈরি হয়ে হয়ে গেছে সেই মিলিত হওয়ার রেশ। ভালোবাসাও বলা যেতে পারে এটাকে। কোয়ান্টাম ভালোবাসা। তাই বহুদূরে গিয়েও রয়ে গেছে তাদের সেই ভালোবাসার রেশ। লাইলি-মজনুর ভালোবাসার মতো। এই ব্যাপারটার নাম দিলেন কোয়ান্টাম এন্ট্যাঙ্গেলমেন্ট। অর্থাৎ এক জোড়া কণার মধ্যে তৈরি হয়েছে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। আর সেই সম্পর্কের জেরে কণা দুটো বয়ে বেড়ায় বহুদূর থেকেও। শ্রোডিঙ্গার বললেন, কোয়ান্টামের জগৎটাই আসলে অদ্ভুত। কতটা? সেটার জন্য তিনিও একটা মানস পরীক্ষা বা থট এক্সপেরিমেন্ট উদাহরণ দিলেন। জন্ম দিলেন তাঁর বিড়াল কাহিনির।

 

একটা ধাতব বাক্স, তার ভেতরে বন্দী করে রাখা হলো একটা বিড়ালকে । রাখা হলো একটা তেজস্ক্রিয় পদার্থের উৎস, একটা হাতুড়ি আর একটা বিষপাত্র। হাইড্রোসায়ানিক বিষ আছে সেই পাত্রে। যেকেনো সময় তেজস্ক্রিয় উৎসটার একটা পরমাণু ভাঙতে পারে। তার ফলে বিকিরিত হবে শক্তি। সেই শক্তি হাতুড়িকে নাড়িয়ে দেবে। হাতুড়িটা তখন আঘাত করবে বিষপাত্রের গায়ে। পাত্র যাবে ভেঙে, বিষক্রিয়ায় মারা পড়বে বিড়ালটি।

 

বাক্সটা এভাবে বন্ধ করে রাখা হলো এক ঘণ্টা। বাইরে থেকে বাক্সের ভেতরটা দেখা যায় না। বলতে পারবেন বিড়ালটা এই মুহূর্তে জীবিত না মৃত?

 

এন্ট্যাঙ্গলমেন্টের হিসাবটা এখানে তেজস্ক্রিয় পরমাণুর সঙ্গে হাতুড়ির। হাতুড়ির সঙ্গে বিষপাত্রের। বিষপাত্রের সঙ্গে বিড়ালের। আপনি যদি নিশ্চিত হন, তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটেছে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই নিশ্চিত হবেন, বিড়ালটিও মৃত। শ্রোডিঙ্গার বললেন, যখনই আপনি সুনির্দিষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন, তখনই বিড়ালটার সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ছে। তিনি বললেন, কোয়ান্টাম কণিকাদের ক্ষেত্রেও হিসাবটা এ রকম। আপনি যখন কোয়ান্টাম কণাদের কোনো সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য পর্যক্ষণ করতে যাবেন, কণাগুলো সেই চরিত্রই আপনাকে দেখাবে।

 

অনিশ্চয়তাবাদীরা কোয়ান্টাম কণিকাদের এই অদ্ভুতুড়ে আচরণ মেনে নিয়েছিলেন। তাই বোর, আইনস্টাইনের প্রশ্নের জবাব দিয়ে বলেছিলেন, ‘আপনাকে বলে দিতে হবে না, ঈশ্বর কী করবেন আর কী করবেন না।’

 

আইনস্টাইন মানুন আর না মানুন, কোয়ান্টাম কণিকাদের এই অদ্ভুত চরিত্রই কিন্তু পরে প্রমাণ হয়। ১৯৮১ সালে এবং ১৯৯৭ সালের দুটি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া গেছে কোয়ান্টাম এন্ট্যাঙ্গলমেন্ট সঠিক।

 

তিন

 

একটু ভাবলেই কোয়ান্টাম এন্ট্যাঙ্গলমেন্টের সঙ্গে টেলিপোর্টেশনের সম্পর্কটা স্পষ্ট হয়ে যায়। অ্যান্টঙ্গলমেন্ট যেমন দেখাচ্ছে আলোর চেয়েও বেশি গতিতে তথ্য আদান প্রদান করা সম্ভব—টেলিপোর্টেশনের ব্যাপারটা অনেকটা এমনই। তবে তথ্যের বদলে বস্তু পাঠাতে হবে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে। সেটা আলোর বেগের বেশি গতিতে। এখানেও আসলে থিওরি অব রিলেটিভিটি মার খেয়ে যায়। আলোর চেয়ে বেশি গতিতে কোনো বস্তু চলা মানে ভেঙে পড়ে আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব।

 

কিন্তু আলোর চেয়ে বেশি গতিতে না হোক আলোর সমান গতিতেই যদি টেলিপোর্টেশন করা সম্ভব হয়, তবুও বর্তে যান বিজ্ঞানীরা। এর জন্য একটা ফরমুলাও আছে। গাণিতিক ফর্মুলার দিকে যাব না। বস্তুগতভাবে কীভাবে সম্ভব সেটা বলতে পারি। বিখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকু ফিজিকস অব দ্য ইমপসিবল বইয়ে টেলিপোর্টেশনের নানা রকমফের দেখিয়েছেন। দেখিয়েছেন সম্ভাবনা ও অসম্ভবের সবকটি পথ। আগ্রহী পাঠকেরা বইটা পড়ে দেখতে পারেন। প্রথমা প্রকাশন এটার বাংলা অনুবাদও বের করেছে।

 

যাইহোক, টেলিপোর্টেশনের মূলনীতি হলো বস্তুকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাই ভাঙতে হবে। সেই কণাগুলো ভেঙ্গে পরিণত করতে হবে শক্তিতে। আর শক্তি যদি তরঙ্গ আকারে বা ফোটনের রূপ দিয়ে কোনো ফাইবার অপটিকসের ভেতর দিয়ে চালানো যায়, তাহলে আলোর গতিতে সেটা পৌঁছে যাবে যেখানে আপনি পাঠাতে চান সেখানে। তারপর সেই শক্তি বা ফোটন যদি আবার আগের নিয়েমে বস্তুতে রূপান্তর করা যায়, তাহলে শক্তিকে আবার বস্তুতে পরিণত করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যেই আপনাকে হিসাব রাখতে হবে পাই টু পাই। প্রাথমিক অবস্থায় বস্তুটি কেমন ছিল, তার সার্বিক অবস্থার রেকর্ড রাখতে হবে। বস্তুটির বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ দুই অবস্থার হিসাবেই রাখতে হবে। যেমন বস্তুটার, আকার, আয়তন, ঘনত্ব, তাপমাত্রার ইত্যাদি নোট করতে হবে কাঁটায় কাঁটায়। তারপর সেটার ঢুঁ মারতে হবে ভেতরে। জানতে হবে, সেটার ভেতরে কতগুলো কণা ও পরমাণু ছিল, সেগুলোর কোনটার অবস্থা কেমন ছিল, এমনকী পরমাণুগুলির ভেতরে ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন, এমনকী কোয়ার্ক ও গ্লুয়নের মতো কণাদের প্রত্যেকটির হিসাব রাখতে হবে। তারপর প্রতিটা কণায় ভাগ করে, সেগুলোর ভরকে শক্তিতে রূপান্তর করে, শক্তি তথ্যে বদলে ফেলে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে। যেখানে থাকবে একটা রিসিভার। সে তথ্যগুলো হিসাব করে সেগুলো শক্তিতে রূপান্তর করবে। আরেকটা কাজও করা যেতে পারে। রিসিভারে থাকবে শক্তির উৎস, এমনকী মূল কণিকাদের জোগানও থাকতে পারে। তারপর এপাশ থেকে যাওয়া তথ্যগুলো রিসিভারের কম্পিউটার প্রথমে পড়বে। তারপর তথ্য অনুযায়ী তৈরি করবে ডায়াগ্রাম। সেই ডায়াগ্রাম অনুযায়ী রিসিভার যন্ত্র বাইরে থেকে পুশ করা এনার্জি বা মূল কণিকাদের নিয়ে থ্রি ডি প্রিন্টারের মতো করে বস্তুটি তৈরি করে দেবে। তবে এখানে একটা মূল পার্থক্য থাকবে থ্রিডি প্রিন্টারের সঙ্গে। থ্রিডি প্রিন্টা বস্তু তৈরি করতে অনেক সময় নেয়, টেলিপোর্টেশনের রিসিভার সেটা নিলে চলবে না। সেটাকে কাজ করতে হবে মুহূর্তের মধ্যে।

 

চার

 

তাত্ত্বিকভাবে টেলিপোর্টেশন সম্ভব, বোঝাই যাচ্ছে। বাস্তবে টেলিপোর্টেশন কী সম্ভব?

 

সম্ভব। টেলিপোর্টেশনের সফল পরীক্ষা করা হয়েছে বেশ কয়েকবার। এখনো চেষ্টা চলছে। কিন্তু সেগুলোর সবই হয় ফোটন জাতীয় কণার, নয়তো পারমাণবিক পর্যায়ে। এছাড়া প্রাকৃতিক টেলিপোর্টেশন তো রয়েছেই। সেটা আবার কেমন?

 

ওই যে, ইলেকট্রনের যখন কোয়ান্টাম লাফ দিয়ে এক শক্তিস্তর থেকে আরেক শক্তিস্তরে যায়, তখন এদের কোনো সময়ই ব্যয় করতে হয় না। মাঝখানের কোনো পথ ধরেও যেতে হয় না। নিম্নশক্তিস্তর থেকে ঠিক যে মুহূর্তে ইলেকট্রন লাফ দেবে, ঠিক সেই মুহূর্তে ইলেকট্রন উদয় হবে উচ্চশক্তিস্তরে। সময় যেমন লাগে না, মাঝখানের কোনো পথও পাড়ি দিতে হয় না। এটাও একধরনের টেলিপোর্টেশন।

 

টেলিপোর্টেশন যেমন এন্ট্যাঙ্গলমেন্টনির্ভর আছে। তেমনি এন্ট্যাঙ্গলমেন্ট ছাড়াও টেলিপোর্টেশন করা হয়েছে। তবে সেসবের আলোচনায় যেতে চাই না। যাঁরা আগ্রহী তাদের মিচিও কাকুর ফিজিকস অব দ্য ইমপসিবল বইটা পড়ে দেখার অনুরোধ করব। আমরা বরং ফিরে যাই, আমাদের প্রাথমিক প্রশ্নে। মাকড়শার টেলিপোর্টেশন কি সম্ভব?

 

পাঁচ

 

ফিরে যাই তিনটি উপন্যাসিকার মাকড়সা গল্পে। ড. আশফাক চৌধুরী আবিষ্কার করেছিলেন বস্তুকে টেলিপোর্টেশন করার পদ্ধতি। তারপর সেটার উন্নতি করেন ধীরে ধীরে। এক সময় জীবিত প্রাণীকেও টেলিপোর্টেশন করার চেষ্টা করেন। সেটা করতে গিয়ে মিনি নামের নিজের পোষা বিড়ালটিকে তিনি গায়েব করে ফেলেন। বিড়ালটাকে তিনি সেন্ডার বক্সে রেখে অণু-পরমাণুতে ভাগ করে ফেলেছিলেন। তারপর সেটাকে পাঠাতে চেয়েছিলেন অন্য ঘরে রাখা রিসিভার বক্সে। কিন্তু বিড়ালটা রিসিভার বক্সে পাওয়া যায়নি। স্পেস-টাইমের অন্য কোথাও হয়তো ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছিল বিড়ালটা, যার সমাধান পাননি আশফাক চৌধুরী। তার আগে একটা সিগারেটের অ্যাশট্রে টেলিপোর্ট করতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছিলেন, আয়নার প্রতিবিম্বের মতো উল্টো গিয়েছিল অ্যাশট্রেটা। মিনি গায়েব হয়ে যাওয়ার পর আরও সূক্ষ্মভাবে হিসাব কষতে শুরু করেন আশফাক চৌধুরী। আরও নিখুঁত, আরও উন্নত হয় তাঁর টেলিপোর্টেশন প্রক্রিয়া। এরপর একটা গিনিপিগ টেলিপোর্ট করেন সফলভাবে। তারপর নিজের পোষা কুকুর। দশ-বারোবার সেটাকে টেলিপোর্ট করেন স্ত্রীর সামনেই। তারপরেই মন দেন নিজেকে টেলিপোর্ট করার কাজে। প্রথমবার সফল হন। দ্বিতীয়বার বাঁধে বিপত্তি। কোয়ান্টাম তত্ত্বের গাণিতিক হিসেবে একটুখানি গড়বড় হলে তার ফল হতে পারে মারাত্মক। আশফাক চৌধুরীর ক্ষেত্রেও তেমনটা ঘটেছিল। দ্বিতীয়বার যখন সেন্ডার বক্সে নিজেকে ঢোকান, তখন একটা মাকড়শা ঢুকে পড়েছিল সেই বাক্সে। আশফাক চৌধুরী খেয়াল করেননি সেটাকে। ফলে ঘটে যায় এক মহাদুর্ঘটনা। রিসিভার বাক্সে তিনি যখন আবার উদয় হন, তখন তার শরীর কিছুটা মানব আর কিছুটা বিড়াল আর কিছুটা মাকড়সা। অন্যদিকে মাকড়শাটা পরিণত হয়েছে অর্ধেক মাকড়সা আর অর্ধেক মানুষে। মাকড়সার অনেক বৈশিষ্ট্যেই দেখা দেয় আশফাকের শরীরে। গলার স্বর হারিয়ে ফেলেন। পাগুলো মাকড়সার মতো হয়ে গেছে। বদলে গেছে খাদ্যাভ্যাস। বিভৎস-কুৎসিত চেহারা।

 

কিন্তু দুর্ঘটনার পর নিজেকে যখন মাকড়সা–বিড়াললমানবরূপে আবিষ্কার করেন আশফাক চৌধুরী, এক মুহূর্ত লাগে বুঝতে। তাই প্রথমেই খোঁজ করেন মাকড়সা আর বিড়াল টাকে। যদি পাওয়া যেত, তাহলে ওটাকে সঙ্গে নিয়ে ঠিকঠাক মতো হিসেব কষে আবার টেলিপোর্টেশন করতেন নিজেকে। কিন্তু চোখটার অর্ধেক বদল হয়েছে। দৃষ্টিশক্তি কিছুটা মাকড়সা আর কিছুটা মানুষের মতো। তাই ভালোমতো দেখতে পারছিলেন না কিছুই। মাকড়সাটা যে কোথায় গা ঢাকা দিয়েছে—তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তার আর হদিস মেলেনি। পরে লায়লাকে দেন মাকড়সা খোঁজার দায়িত্ব। তিনিও পাননি। সুতরাং, আশফাকে তাই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, মাকড়সা–বিড়ালমানব হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। তাই স্ত্রীর সহযোগিতায় আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন।

 

বাস্তবেও এমনটা কী ঘটা সম্ভব। হতেই পারে। দুটো আলাদা জিনিসকে একসঙ্গে টেলিপোর্ট করতে চাইলে ঘটনাটা কী দাঁড়াবে সেটা বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। তবে জড় পদার্থ হলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। দুটো জিনিসেরই ডিটেইল তথ্য থাকলে রিসিভারেও দুটো আলাদা জিনিস তৈরি হওয়ার কথা। কিন্তু জীবন্ত প্রাণীর ক্ষেত্রে সেটা কেমন হবে? এ প্রশ্নের কিন্তু জবাব নেই। প্রাণ বাদ দিলে মানুষের শরীরটা একটা জড় পদার্থ ছাড়া কিছুই নয়। তাই একে অণু-পরামাণুতে ভাগ করে টেলিপোর্ট অসম্ভব হয়তো নয়। কিন্তু একবার মরলে তো কোনো প্রাণীকে আবার জীবিত করে তোলার কোনো পদ্ধতিই তো বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারেননি। ‘প্রাণ কী’ এর স্পষ্ট সংজ্ঞাও কি মানুষের অভিধানে আছে? প্রাণ আছে বলেই দেহ নামের জৈব রাসায়নিক যন্ত্রটা চলে। তাহলে প্রাণও কি জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ারই কোনো ফসল? হতে পারে। কিন্তু প্রাণ নিয়ন্ত্রণ বা পুনরায় প্রাণ সঞ্চার করার কোনো পদ্ধতিই মানুষ এখনো আবিষ্কার করতে পারেনি। অদূর ভবিষ্যতে কী ঘটবে বলা যায় না। মানব, জীব কিংবা মাকড়সার শরীরের সব জৈব রাসায়নিক তথ্য জোগাড় করতে পারলে হয়, অপর দিকের রিসিভারে টেলিপোর্ট করা জ্যান্ত প্রাণীও হয়তো পাওয়া যেতে পারে। আসলে জীবের টেলিপোর্টেশন পদ্ধতি আর প্রাণের সঠিক সংজ্ঞা— দুটোর জন্যই আসলে আমাদের ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে থাকতে হবে। এই মুহূর্তে বা অদূর ভবিষ্যতে এর উত্তর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

 

সুত্র:

 

১.ফিজিকস অব দ্য ইমপসিবল/মূল: মিচিও কাকু, রূপান্তর আবুল বাসার/প্রথমা

 

২. ফিজিকস ওয়ার্ল্ড

 

- বিজ্ঞানচিন্তা

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+7 টি ভোট
1 উত্তর 249 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 527 বার দেখা হয়েছে
+18 টি ভোট
3 টি উত্তর 678 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 697 বার দেখা হয়েছে
27 অগাস্ট 2021 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Turjay Paul (3,190 পয়েন্ট)
+8 টি ভোট
4 টি উত্তর 848 বার দেখা হয়েছে

10,772 টি প্রশ্ন

18,455 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

262,992 জন সদস্য

80 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 80 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  2. AmadoLarsen

    100 পয়েন্ট

  3. AltaPitt1334

    100 পয়েন্ট

  4. MickiVandorn

    100 পয়েন্ট

  5. Donette38S82

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা #science পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...