গিরগিটি ও অক্টোপাস কীভাবে গায়ের রঙ পরিবর্তন করে? তাদের দেহে এমন বিশেষ কী আছে,যা তাদের এ কাজে সাহায্য করে ? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+16 টি ভোট
992 বার দেখা হয়েছে
"প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে করেছেন (71,130 পয়েন্ট)
বিভাগ পূনঃনির্ধারিত করেছেন

4 উত্তর

+10 টি ভোট
করেছেন (71,130 পয়েন্ট)
অক্টোপাস এবং গিরগিটির ত্বকে chromatophore বা রঞ্জকগ্রন্থি থাকে যার ফলে এরা রঙ বদলাতে পারে।
যেমনঃ গিরিগিটির ক্ষেত্রে, তাদের যে চামড়া বা ত্বক তাতে তিনটে স্তর থাকে আর প্রত্যেক স্তরে এক-এক রকমের chromatophore বা রঞ্জকগ্রন্থি থাকে। সচেয়ে বাইরের যে স্তর তাতে থাকে xanthophore, যেগুলো লাল আর হলুদ রঙের জন্য দায়ী। মাঝেরটায় থাকে iridophore যেগুলো নীল রঙের জন্য দায়ী, এই iridophore-কে আবার guanophores-ও বলে, কারণ ওই গ্রন্থীগুলোতে বর্ণহীন guanine crystal থাকে, আর এগুলোর মধ্যেই আলো reflected এবং সচাত্তেরেদ হয়ে নীল দেখায়। সবচেয়ে ভিতরের তিন নম্বর স্তরটায় থাকে কালো রঙের রঞ্জক পদার্থ নিঃসরণকারী গ্রন্থী melanosome তাই ওটার নাম melanophore, আর এগুলোই রং বদলানোর জন্য মূল ভূমিকা পালন করে।
+9 টি ভোট
করেছেন (7,950 পয়েন্ট)
গিরগিটি নিজের দেহের রং পরিবর্তন করতে পারে যাকে বলা হয় ক্যামোফ্লাজ I কিন্তু সবথেকে প্রচলিত ভুল ধারণাটি হলো যে একটি গিরগিটি তার পার্শ্ববর্তী পরিবেশের রঙের সাথে তাল মিলিয়ে গা ঢাকা দেওয়ার জন্য ক্যামোফ্লাজ করে I একদমই নয় I

গিরগিটি নিজের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, নিজের আবেগের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে এবং অপর একটি গিরগিটির সাথে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে ক্যামোফ্লাজ করে থাকে I আমাদের মতো গিরগিটি নিজেদের দেহের তাপমাত্রা পরিবেশের তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে সাথে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না আর ঠিক তাই তাদের প্রয়োজন হয় ক্যামোফ্লাজের I যেমন, উষ্ণপ্রধান অঞ্চলে অথবা গরমকালে গিরগিটি হালকা বর্ণ ধারণ করে I যার ফলে অতিরিক্ত সূর্যালোক প্রতিফলিত হয়ে দেহের তাপমাত্রা বজায় রাখে I আবার শীতকালে গিরগিটি গাঢ় বাদামি বা খয়েরি বর্ণ ধারণ করে যা অতিরিক্ত সূর্যালোক শোষণ করে নেয় I

গিরগিটির দেহের ত্বকে সবথেকে ওপরের স্তরটি স্বচ্ছ বা ট্রান্সপেরেন্ট I এর নিচে আছে একধিক স্তর যেখানে বিভিন্ন পিগমেন্ট বা রঞ্জক পদার্থ ছোট ছোট থলির মধ্যে অবস্থান করে I সবথেকে ওপরে অবস্থান করে ইরিডোফোর (iridophore) যা নীল বর্ণের জন্য দায়ী I এছাড়াও আছে এরিথ্রোসাইট (erythrocyte) যা লাল বর্ণ এবং জ্যান্থসাইট (Xanthocyte) যা হলুদ বর্ণ সৃষ্টি করে I একদম নিচের স্তরে রয়েছে উপস্থিত রয়েছে মেলানোসাইট (Melanocyte) যা মেলানিন উৎপন্ন করে I

বিভিন্ন পরিস্থিতিতে স্নায়ুতন্ত্রের সাহায্যে গিরগিটি গ্ল্যান্ডের সংকোচন ও প্রসারণ ঘটিয়ে নির্দিষ্ট একটি বা একাধিক রঞ্জক পদার্থের মাধ্যমে ক্যামোফ্লাজ করে I উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একটি গিরগিটি যখন উত্তেজিত হয়ে ওঠে তখন সমস্ত এরিথ্রোফোরগুলিকে সম্পূর্ণরূপে প্রসারিত করে এবং অন্যান্য রঞ্জক পদার্থের নিঃসরণ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে লাল বর্ণ ধারণ করে I অন্য দিকে একটি শান্ত গিরগিটি স্বাভাবিক অবস্থায় তার এরিথ্রোফোরগুলিকে সংকুচিত করে এবং ইরিডোফোরের সাহায্যে নীল এবং জ্যান্থফোরের মাধ্যমে হলুদ বর্ণের মিশ্রনে সবুজ বর্ণ সৃষ্টি করে।
0 টি ভোট
করেছেন (43,930 পয়েন্ট)
তাদের বিশেষ কিছু কোষ থাকে যা তাদের রং পরিবর্তনের ব্যাপারে সাহায্য করে। প্রাণীদের রং পরিবর্তনের ব্যাপারটির সাথে আলোর একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। আলোর সংশ্লেষণ এবং প্রতিফলন প্রাণীদের রং পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গিরগিটি রং পরিবর্তনের জন্যও আলোর ভূমিকা রয়েছে।
0 টি ভোট
করেছেন (20,400 পয়েন্ট)

জলের দৈত্য অক্টোপাস আর স্থলের সরীসৃপ গিরগিটি - এদের মধ্যে  বিভিন্ন স্বভাবগত আর শারীরিক পার্থক্য থাকলেও খুবই অদ্ভুত এক জায়গায় তাদের মিল- উভয়ই খুব ভালোভাবে ছদ্মবেশ ধারণ করতে পারে আর পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিজেদের দেহের ত্বকের রঙ আর রঙের শেড পরিবর্তন করতে পারে। বিস্ময়কর এক শারীরিক গঠন আর সমন্বয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অক্টোপাস আর গিরগিটি প্রয়োজন অনুযায়ী কাজটি সম্পন্ন করে।
আসুন আজকে জেনে নেই, কিভাবে অক্টোপাস আর গিরগিটি পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজেদের শরীরের রঙ পরিবর্তন করতে পারে।

প্রথমে অক্টোপাসের কথা বলি।
ছদ্মবেশ ধারণ করার ক্ষেত্রে অক্টোপাস অতুলনীয়। দেহত্বকের রঙ আর শারীরিক গড়ন পরিবর্তন করে এবং সুনিয়ন্ত্রিত স্নায়বিক ক্রিয়ার দ্বারা অক্টোপাস প্রতিকূল পরিবেশে নিজের আত্মরক্ষা করে। পাশাপাশি শিকার করার সময়ও তারা ছদ্মবেশ ধারণ করে। 

অক্টোপাসের ত্বকের ঠিক নিচে ক্রোমাটোফোর নামক কোষস্তর থাকে যেখানে প্রজাতি ভেদে লাল, হলুদ, খয়েরি, কালো ইত্যাদি রঙের যৌগসমৃদ্ধ উপাদান থাকে, যা অক্টোপাসের দৃষ্টি অনুসারে বাইরের পরিবেশের রঙের ধরণ আর উজ্জ্বলতা অনুযায়ী রঙ ধারণ করতে পারে।

অক্টোপাস ত্বকের ক্রোমাটোফোর কোষগুলোর ঠিক নিচে থাকে ইরিডোফোর নামক আরেক বিশেষায়িত কোষের স্তর। ইরিডোফোর কোষের ভিতরে রিফলেক্টোসোম নামক কোষীয় উপাদান থাকে- যেগুলো আয়নায় মতোই কাজ করে! রিফলেক্টোসোম বাইরের পরিবেশের আলোর প্রায় একই  তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো প্রতিফলন করতে পারে আর আশেপাশের বস্তুগুলোর রঙ ধারণ করে ফেলতে পারে। একইসঙ্গে রিফলেক্টোসোম প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রোমাটোফোর কোষগুলোর রঙিন যৌগগুলোর উজ্জ্বলতা আরো ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। মূলত যেসব রঙের উপাদান ক্রোমাটোফোর কোষগুলো তৈরি করতে পারে না, ত্বকে সেসব রঙ ধারণের ক্ষেত্রে ইরিডোফোর কোষ গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
অক্টোপাসের ইরিডোফোর কোষের নিচে আরো এক ধরণের বিশেষ কোষ থাকে- যাকে বলা হয় লিউকোফোর। লিউকোফোর কোষগুলো পরিবেশ থেকে ত্বকে আসা আলো চারদিকে বিচ্ছুরণ করতে পারে এবং বাইরের পরিবেশের আলোর ধরণ আর রঙ অনুসারে বিচ্ছুরিত আলোর বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করতে পারে। লিউকোফোর কোষের কার্যক্রমে ইরিডোফোর কোষ যথেষ্ট পরিমাণ সাহায্য করে। 

এতক্ষণ আমরা অক্টোপাসের ত্বকের রঙ পরিবর্তন আর নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে জানলাম, এখন আসি গিরগিটির রঙ পরিবর্তন করার কথায়।

গিরগিটির ত্বকের সবচেয়ে বাইরের স্তর স্বচ্ছ থাকে আর তার নিচে থাকে ক্রোমাটোফোর কোষের স্তর, যেখানে বিভিন্ন রঙবিশিষ্ট যৌগ উপাদান তৈরি হয় এবং প্রয়োজনমতো ক্রোমাটোফোর কোষের অভ্যন্তরীণ রঙিন উপাদান গুলোর মাধ্যমে ত্বক  নির্দিষ্ট বর্ণ প্রদর্শন করে। পাশাপাশি ক্রোমাটোফোর কোষগুলোর নিচে মেলানোফোর কোষ থাকে, যারা বাদামি বর্ণের মেলানিন ধারণ করে। মেলানিন গিরগিটির ত্বকের শেড নির্ধারণ করে আর ত্বকের ক্রোমাটোফোর কোষের প্রদর্শিত রঙের উজ্জ্বলতাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
গিরগিটির ত্বকের অভ্যন্তরে আরো থাকে ইরিডোফোর নামক বিশেষ কোষস্তর- যা আশেপাশের পরিবেশের আলোর অনুযায়ী নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো প্রতিফলিত করতে পারে। পাশাপাশি বিশেষায়িত কোষ যেমন: ব্লু ইরিডোফোর- নীল, জেনথোফোর- হলুদ আর ইরাইথ্রোফোর- লাল বর্ণের আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাতে সক্ষম। 

আত্মরক্ষা আর শিকার ধরার কাজে প্রয়োজন পড়লেও মজার বিষয় হলো, গিরগিটি মূলত দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ আর অন্যান্য গিরগিটির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার মাধ্যম হিসেবে দেহত্বকের বর্ণ পরিবর্তন করার ক্ষমতাকে কাজে লাগায়। 
দেহতাপ বেড়ে গেলে গিরগিটির ত্বক হালকা বর্ণ ধারণ করে যাতে অতিরিক্ত তাপ সহজে দেহ থেকে বের হয়ে যেতে পারে আর সূর্যের আলো প্রতিফলিত করার মাধ্যমে দেহ শীতল হতে পারে। আবার দেহতাপ কমে গেলে গিরগিটির ত্বক গাঢ় বা কালো বর্ণ ধারণ করে যাতে সূর্যের আলো থেকে তাপ সহজেই শরীরে শোষণ করা সম্ভব হয়। আর গিরগিটিরা নিজেদের ভিতরে যোগাযোগের ভাষা হিসেবেও প্রয়োজন মতো ত্বকে বিভিন্ন রঙের প্রদর্শন করে থাকে।

আজকের লেখাটি পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্ট সেকশন এ জানাবেন। সামনে আরো কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায়- তাও বলবেন। 

লেখকঃ Fahad Mannan | Team Science Bee

#science #bee #facts #blog #octopus #chameleon

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+2 টি ভোট
3 টি উত্তর 371 বার দেখা হয়েছে
01 নভেম্বর 2021 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Anupom (15,280 পয়েন্ট)
+9 টি ভোট
1 উত্তর 405 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 685 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

272,774 জন সদস্য

47 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 45 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Shourov Viperr

    110 পয়েন্ট

  4. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  5. Eyasin

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...