বাংলাদেশে কেন ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া যায় না? ভারতে তো পাওয়া গিয়েছে। - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
3,106 বার দেখা হয়েছে
"তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে করেছেন (9,390 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (9,390 পয়েন্ট)

বাংলাদেশে কি ডাইনোসর ছিল ? বাংলাদেশে কি ডাইনোসরের ফসিল আবিষ্কারের সম্ভাবনা আছে ? ভারতে ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া গেলে বাংলাদেশে কেন যাবেনা ?
  
প্রথম প্রশ্নের উত্তরটা সোজা। না, ছিল না। কারণ, ডাইনোসর যখন ছিল,বাংলাদেশ নিজেই তখন ছিল না। তখনো এই ভূখন্ডের জন্মই হয় নি।

বাংলাদেশে কি ডাইনোসর ছিল ?

মোটা দাগে পৃথিবীর বুকে ডাইনোসরদের বিচরণকাল আজ থেকে ২৩ কোটি বছর পূর্ব থেকে সাড়ে ৬ কোটি বছর পূর্ব পর্যন্ত। অথচ বাংলাদেশ ভূখন্ডের বয়স কোটির ঘর অবধিও পৌঁছায় নি। কিন্তু ভারতে ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া গেল যে? ঝাড়খণ্ডের পাহাড়েও তো পাওয়া গেছে, বেশি দূর তো না। তবে বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না কেন? এই যে আজকের ভারত উপমহাদেশ-ডাইনোসর আমলের ভারত কিন্তু এখানে ছিল না-ছিল দক্ষিণ গোলার্ধে! গোড়া থেকে শুরু করি।
 

জটিল টার্ম এবং ব্যাখ্যা বাদ দিয়ে যথাসম্ভব সহজ কথায় বর্ণনা করা হলো,সূক্ষ্ম ভুল ইগনোর করবেন। ডাইনোসর আমল : ২৩ কোটি থেকে সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে। ২৭ কোটি বছর আগের কথা (ডাইনোসর আসতে বাকি ৪ কোটি বছর)। পৃথিবীতে তখন একমাত্র মহাদেশ-প্যাঞ্জিয়া, একমাত্র মহাসাগর-প্যান্থালাসা।

২০ কোটি বছর আগে প্যাঞ্জিয়া দুই ভাগে ভাঙলো-উত্তরে লরিশিয়া, দক্ষিণে গন্ডোয়ানা (লক্ষ্য করুন, ততদিনে ডাইনোসর আমল শুরু হয়ে গেছে)। দুই কোটি বছর যেতে না যেতে গন্ডোয়ানায়ও দুটো ভাগ, ফোকাস আনা যাক দক্ষিণ-পূর্ব ভাগটার উপর। কারণ : এন্টার্কটিকা, অস্ট্রেলিয়া আর মাদাগাস্কারের সাথে একসাথে আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশটিও ছিল ঐ ভাগটারই অংশ! জুরাসিক যুগ-ডাইনোসরদের স্বর্ণযুগ চলছে।

ভারত দক্ষিণ-পূর্ব গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অংশ, সেই সুবাদে ডাইনোসররা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভারতেও! ওদিকে টেকটোনিক প্লেটের ভাঙচুরও থেমে নেই। বন্ধনমুক্তির নেশায় মত্ত ভারত ৯ কোটি বছর আগে মাদাগাস্কারকে বিদায় জানিয়ে এশিয়ার দিকে রওয়ানা হলো স্বাধীন উপমহাদেশ হিসেবে। ডাইনোসর তখনো আছে। অবশেষে ৫ কোটি বছর আগে বিষুব রেখা পার হয়ে উত্তরে ইউরেশিয়ার প্লেটের সাথে মিশে। কিন্তু ততদিনে ডাইনোসরেরা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। কাজেই গন্ডোয়ানার ভারত ডাইনোসরশূন্য হয়ে এশিয়ায় বয়ে এনেছে কেবলই ডাইনোসরের ফসিল-সেগুলোই এখন আবিষ্কৃত হচ্ছে।
এবার বাংলাদেশ। ভারত উপমহাদেশের বাদবাকি অংশের মতো বাংলাদেশও গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অংশ ছিল-এটা বড়াই করে বলার সুযোগ নেই। কারণ বাংলাদেশ উপমহাদেশের আদি ভূভাগের কিনারে গড়ে ওঠা নবগঠিত একটা ডেল্টা-গাঙ্গেয় ডেল্টা (ব-দ্বীপ)। বাংলাদেশের উত্তরের খুব সামান্য অংশই অরিজিনাল গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অংশ ছিল-তাও কি না সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে বেসিন হিসেবে, রাজাসরাস, বারাপাসরাসদের পা পড়েনি সেখানে। টারশিয়ারি যুগের পাহাড়, প্লাইস্টোসিন যুগের সোপান, পলিমাটিসমৃদ্ধ সমভূমি-সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে এসবই অনেক দেরিতে হয়েছে। সহজ হিসাব-ভূখন্ড হয়েছে পলিমাটিতে, পলিমাটি বয়ে এনেছে নদী, নদীগুলোর মৌলিক উৎস হিমালয়, আর হিমালয়ের নিজের জন্মই ভারতীয় প্লেট এশিয়ার সাথে সংঘর্ষ করার পর, মানে ডাইনোসর বিলুপ্তির কয়েক কোটি বছর পর। বাংলাদেশ সে তুলনায় নবজাতক। কাজেই ঝাড়খণ্ডের রাজমহল পাহাড় থেকে দূরত্ব বেশি না হলেও জন্ম ইতিহাসের বিচারে ভারতের বাদবাকি অনেকটা অংশের থেকে বাংলাদেশের তফাৎ যোজন যোজন।
তাছাড়া ডাইনোসরের ফসিল আবিষ্কারের উপযুক্ত স্থান যেরকম উঁচু, শুষ্ক ভূমি, তেমন বৈশিষ্ট্যের অঞ্চল বাংলাদেশে নেই। অতএব,কাগজে-কলমে এদেশে ডাইনো-ফসিল আবিষ্কারের আশা নেই। পাওয়া গেলে (!) অনেক ইতিহাস নতুন করে লিখতে হবে। অথচ প্রাগৈতিহাসিক গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অংশ হওয়ায় আমাদের প্রতিবেশী দেশটিতে বেশ কিছু ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া গেছে। তবে লক্ষাধিক বছরের পুরনো আদিম স্তন্যয়ায়ী, উদ্ভিদ ও জলজ জীবাশ্ম পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা এদেশে রয়েছে এবং পাওয়া গেছেও। হয়তো ভবিষ্যতে আরো অনেক জীবাশ্ম পাওয়া যাবে।

তথ্যসুত্রেঃ খন্দকার রাকিবিল্লাহ শুভন, বিডি টাইপ

0 টি ভোট
করেছেন (9,390 পয়েন্ট)
বাংলাদেশে ডাইনোসর ছিল কিনা তা বলা খুবই মুশকিল এবং ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়ার সম্ভাবনা খুবি ক্ষীণ. কিন্তু কেন? আসুন জেনে নেই এর সম্ভাব্য ব্যাখ্যা।

প্রথমত, ডাইনোসর পৃথিবীর বুকে বিচরণ কবে করেছিলো বা এর উৎপত্তি এখনো বেশ আলোচিত ও চলমান গবেষণার বিষয়। কিন্তু গবেষকরা আধুনিক নানান রকম রেডিওম্যাট্রিক ডেটিং প্রক্রিয়ায় কম বেশি মেনে নিয়েছেন যে, আনুমানিক ২৩ কোটি বছর পূর্ব থেকে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বছর পূর্ব ডাইনোসররা পৃথিবীর বুকে হেটে বেড়াতো। এরপরে কোন একটি বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডাইনোসরদের পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে দেয়।  
 

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের বর্তমান ভৌগলিক অবস্থানের উৎপত্তি হয়েছে ডাইনোসর বিলুপ্তির অনেক অনেক পরে। আরেকটু ভেঙ্গে আলোচনা করি, বাংলাদেশ আজ ভৌগলিকভাবে যেখানে অবস্থান করছে তাকে বিজ্ঞানীরা নানান নামে বলে থাকেন - গেঙ্গিস ডেল্টা বা  গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ। ৩০ থেকে ২৫ কোটি বছর পূর্বে আজকের ভারতীয় উপমহাদেশ গন্ডোয়ানা নামের সুপারকন্টিনেন্ট বা মহা-মহাদেশের অংশ ছিলো। ১২ থেকে ১৪ কোটি বছর পূর্বে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট গন্ডোয়ানা মহা-মহাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া শুরু করে এবং উত্তরমুখী হতে থাকে। এই প্রক্রিয়া ৪-৫ কোটি বছর আগে শুরু হয়ে এখনো চলছে।
আনুমানিক সাড়ে ৪ কোটি বছর আগে ভারতীয় প্লেট, বার্মা ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সাথে সংঘর্ষে সৃষ্টি হয় আজকের হিমালয় পর্বতমালা। এরপর সাড়ে ৪ কোটি বছর থেকে ১ কোটি বছর আগ পর্যন্ত হিমালয় পর্বতমালা ও গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র নদীমালা তৈরির প্রক্রিয়া চলতে থাকে।এ পুরো সময় আজকের বাংলাদেশের অনেকখানি সমুদ্রের পানির উচ্চতার তার তম্যের দরুণ তলিয়ে থাকতো অগভীর পানিতে। পরবর্তী এক কোটি বছর হিমালয়ের নদীগুলো পলিমাটি জমিয়ে ব-দ্বীপের সৃষ্টি করে। সহজ কথায় এই ব-দ্বীপের সৃষ্টি হয় ডাইনোসর বিলুপ্ত হবার অনেক পরে।

তৃতীয়ত, ডাইনোসরের জীবাশ্ম সংরক্ষিত অবস্থায় পৃথিবীর সবখানেই পাওয়া যায় না। আজ পর্যন্ত যত ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে তার বেশিরভাগই মিলেছে উচু, শুষ্ক, অনুর্বর ভূমিতে। গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন প্রাগৈতিহাসিক যুগে যেসব জায়গায় অগভীর পানির উৎস যেমন নদী বা নদীর বাক ছিল সেখানে ডাইনোসরদের উপস্থিতি বেশি ছিলো। পরবর্তীতে এই নদীগুলো শুকিয়ে যায় এবং লক্ষ কোটি বছরের বিবর্তনে সেখানে পাললিক শিলা স্তর জমা পড়ে,মৃত ডাইনোসরদের বা অন্যান্য প্রাণীদের জীবাশ্ম সংরক্ষিত অবস্থায় সেখানেই পাওয়া গিয়েছে।তাই দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ ডাইনোসরের সময়কালে প্রচুর ভৌগলিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, বাংলাদেশের অনেকাংশ পানিতে তলিয়ে ছিলো, ফলে জীবাশ্ম সংরক্ষণের জন্য যেরকম শুষ্ক, অনুর্বর ভূমির প্রয়োজন বাংলাদেশে তা ছিলো না ।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ডাইনোসরের প্রথম জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। এরপর থেকে পর্বতগাত্র বা শিলায় আটকা পড়ে থাকা ডাইনোসরের কঙ্কাল পৃথিবীর বিভিন্ন জাদুঘরে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ডাইনোসরেরা বর্তমান বিশ্ব সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। ডাইনোসরদের জনপ্রিয়তা সাহিত্য, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য গণমাধ্যমে তাদের প্রবেশ নিশ্চিত করেছে। প্রধানত কোনো কোনো অবলুপ্ত ডাইনোসর প্রজাতির বিশাল আয়তন এবং তাদের সম্ভাব্য হিংস্র স্বভাবের দরুন তারা শিশু ও বয়স্ক সবার কাছেই বিশেষ আগ্রহের বিষয়ে পরিণত হয়েছে।  তাই বলে বাংলাদেশে যে জীবাশ্ম পাওয়াই যাবেনা তা বলাটা খুবই ভুল। আমাদের ভূমিতে হয়তো ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়ার সম্ভাবনা কম, কিন্তু কয়েক লক্ষ বছর পুরানো স্তন্যপায়ী প্রাণী বা অন্য সব প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবাশ্ম আমাদের দেশে পাবার সম্ভাবনা রয়েছে।  

ক্রেডিটঃ ইনসাইড আর্টিকেল বাংলা

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+5 টি ভোট
1 উত্তর 5,458 বার দেখা হয়েছে
28 ফেব্রুয়ারি 2021 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Martian (93,090 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 231 বার দেখা হয়েছে
22 জুন 2022 "পরিবেশ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Nishat Tasnim (7,950 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 196 বার দেখা হয়েছে

10,826 টি প্রশ্ন

18,535 টি উত্তর

4,745 টি মন্তব্য

840,919 জন সদস্য

63 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 61 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. mehrob.durjoy

    140 পয়েন্ট

  2. Curious

    140 পয়েন্ট

  3. Shihabuddin

    130 পয়েন্ট

  4. Shoumik

    110 পয়েন্ট

  5. kubeto22

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল #science কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন গাছ মনোবিজ্ঞান খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার দুধ উপায় হাত শব্দ মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য বাচ্চা হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...