হাঁচি সবসময় আসে না। মাঝেমধ্যে আসে। সর্দি লাগলে হাঁচির উপদ্রব দেখা দেয়। নাকের ভেতরের স্পর্শকাতর মাংসপেশি কিছুটা ফোলা থাকে। নিঃশ্বাসের বাতাসের সাথে যদি কোনো ধুলাবালি বা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী কোনো পদার্থ নাকের ভেতরের কোমল চামড়ায় আঘাত করে তখনই হাঁচি আসে।
খোলা জায়গায় চলাফেরার সময় অথবা ঘরের ভেতরে অবস্থান কালে জানালা দরজা খোলা থাকলে ভাসমান ধুলিকণা নাকে ঢুকে যেতে পারে। তখন হঠাৎ হাঁচি আসে। কিন্তু যখন আমরা ঘরের ভেতরে ঘুমাই তখন সাধারণত দরজা বন্ধ থাকে এবং জানালাও অনেক সময় কিছুটা টেনে রাখা হয়। ফলে ঘুমের মধ্যে বাতাসের ধুলিকণা নাকে ঢোকার আশংকাও কম থাকে।
ঘরে ফ্যান চললে সবসময় বাতাসের একটা প্রবাহ থাকে। কিন্তু ফ্যান চালানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরে ধুলাবালি আলোড়িত হয়ে একটা স্থিতিশীল অবস্থায় চলে যায়। ফলে ঘুমের সময় নাকে সুড়সুড়ি দেয়ার মতো কিছু আর বাতাসে থাকেনা। ঘরে এসি থাকলেও একই অবস্থা হয়। তবে এসি বা ফ্যান বন্ধ করে আবার চালালে নতুন করে হাঁচির উপদ্রব সৃষ্টি হতে পারে।
ঘরের বাইরে খোলা জায়গায় ঘুমালেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। বসন্তকালে বাতাসে ফুলের রেণু উড়ে বেড়ায়। এসময় জানালার পাশে মাথা রেখে ঘুমালে নাকে ফুলের রেণু প্রবেশ করে হাঁচি ডেকে আনতে পারে।
কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এধরণের আশংকা থাকার পরেও ঘুমের মধ্যে হাঁচি খুব কমই আসে। এর একটি সম্ভাব্য কারণ হলো, ঘুমের মধ্যে যেহেতু আমাদের পুরো শরীরটাই বিশ্রামে থাকে তাই এসময় আমাদের অক্সিজেনের চাহিদা থাকে সবচেয়ে কম। একারণে এসময় নিঃশ্বাসের সাথে ধুলাবালি ঢোকার আশংকাও থাকে সবচেয়ে কম।
তবে ঘুমের মধ্যে হাঁচি যে একেবারেই আসেনা তা নয়। অনেক সময় দেখা যায় কেউ ঘুম থেকে উঠেই হাঁচতে শুরু করে। আসলে আসন্ন হাঁচির ধাক্কায় তার ঘুম ভেঙে যায়। তারপর হাঁচি শুরু হয়। এরকম ঘটনা ব্যতিক্রম বলেই ধরা হয়।
[সিরিজ-বিজ্ঞানের রাজ্যে রহস্যভেদ]
(আব্দুল কাইয়ুম)